খেলাপি ঋণ ও আর্থিক খাতে সংস্কার

সমকাল মামুন রশীদ প্রকাশিত: ১৬ আগস্ট ২০২২, ০৯:৫১

অনেক দিন ধরেই আলোচনা চলছে- বাংলাদেশের প্রকৃত মন্দ ঋণ জ্ঞাত বা প্রকাশিত অঙ্কের চেয়ে অনেক বেশি। এটিও আলোচনায় রয়েছে, কভিডকালে দেওয়া বিশেষ শৈথিল্য তুলে নিলে এবং আন্তর্জাতিক মান অনুসারে প্রদত্ত সিকিউরিটি ও কোলেটারেল পুনর্মূল্যায়ন করা হলে অঙ্কটি আরও বিরাট হতে পারে।


২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ সরকার গঠন করার সময় উত্তরাধিকারসূত্রে খেলাপি ঋণ পেয়েছিল ২২ হাজার ৪৮১ কোটি টাকা। একের পর এক আর্থিক খাতে কেলেঙ্কারি এবং ঋণখেলাপিদের বারবার সুযোগ দেওয়ার পর সেই খেলাপি ঋণ বৃদ্ধি পেয়ে দাঁড়িয়েছে ১ লাখ ২৫ হাজার ২৫৭ কোটি ৫৭ লাখ টাকায়।


২০১৯ সালে ব্যাংক খাত নিয়ে একটি রিপোর্টে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল-আইএমএফ বলেছিল, বাংলাদেশে খেলাপি ঋণ আড়াল করে রাখা হয়েছে। সংস্থাটির মতে, খেলাপি ঋণের যে তথ্য প্রকাশ করা হয়, প্রকৃত খেলাপি ঋণ তার তুলনায় দুই বা তিন গুণ। সব মিলিয়ে বাংলাদেশের খেলাপি ঋণ হবে প্রায় আড়াই লাখ কোটি টাকা। অর্থাৎ বর্তমানের বৃদ্ধি পাওয়া সংখ্যারও দ্বিগুণ। অনেকে বলছেন, প্রকৃত বিচারে তা চার লাখ কোটি টাকা ছাড়িয়ে যেতে পারে।


আইএমএফ ছাড়াও অনেকের মতে, বর্তমান সরকার তথা কেন্দ্রীয় ব্যাংক যে কোনো কারণেই হোক, খেলাপিদের নানা সুবিধা দিয়েছে, যার মাধ্যমে খেলাপি ঋণ লুকিয়ে রাখা গেছে।


আমরা জানি, সাধারণত তিন মাস পরপর খেলাপি ঋণের তথ্য হিসাব করা হয়। সম্প্রতি জানা গেছে, শুধু গত প্রান্তিকেই ব্যাংক খাতে মন্দ বা খেলাপি ঋণ বেড়েছে ১১ হাজার ৮১৬ কোটি ৭১ লাখ টাকা। একই সময়ে ব্যাংক খাতের ঋণ বেড়ে হয়েছে ১৩ লাখ ৯৮ হাজার ৫৯২ কোটি টাকা।


অনেকেই জানেন, করোনার কারণে ব্যাংক ঋণ আদায়ের ক্ষেত্রে যে ছাড় দেওয়া হয়েছিল, তা তুলে নেওয়ার পর ধাপে ধাপে এখন খেলাপি ঋণ বাড়তে শুরু করেছে। এর আগে গত জানুয়ারি-মার্চ সময়ে খেলাপি ঋণ বেড়েছিল প্রায় ১০ হাজার কোটি টাকা। পত্রিকাগুলো বলেছে, বিশেষ বিবেচনায় যেসব ঋণ পুনঃতপশিল করা হয়েছে, তা আবার খেলাপি হয়ে পড়ছে। পাশাপাশি যেসব প্রণোদনা ঋণ বিতরণ হয়েছে, তাও খেলাপি হয়ে পড়ছে।


গত জুন শেষে রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলোর খেলাপি ঋণ বেড়ে হয়েছে ৫৫ হাজার ৪২৮ কোটি টাকা। এ ক্ষেত্রে খেলাপির হার প্রায় ২২ শতাংশ। বেসরকারি ব্যাংকগুলোর খেলাপি ঋণ দাঁড়িয়েছে ৬২ হাজার ৬৭৭ কোটি টাকা, যা মোট ঋণের ৬ শতাংশ। বিদেশি ব্যাংকগুলোর খেলাপি ঋণ ২ হাজার ৯৫৬ কোটি টাকা, যা প্রদত্ত ঋণের ৪ দশমিক ৪০ শতাংশ এবং বিশেষায়িত ব্যাংকগুলোর ৪ হাজার ১৯৪ কোটি টাকা বা মোট ঋণের ১১ দশমিক ৭৪ শতাংশ।


অনেক বিশ্নেষকই বলছেন, করোনাকালে কেন্দ্রীয় ব্যাংক ঋণ পরিশোধ না করার যে সুবিধা দিয়েছে, তা গ্রাহকদের ঋণ পরিশোধে অনাগ্রহী করে তুলেছে। গত দুই বছর ব্যবসায়ীরা ঋণ শোধ না করেও ব্যাংকের খাতায় ছিলেন ভালো গ্রাহক। এমনকি কভিডের কারণে সমস্যা নয় এমন গ্রাহকদের মন্দ ঋণও বাংলাদেশ ব্যাংকের পরিদর্শকদের পরামর্শে করতে হয়েছে।


বাংলাদেশ ব্যাংকের নতুন গভর্নর যোগ দেওয়ার পর বড় ধরনের ছাড় দিয়ে নতুন এক খেলাপি ঋণ সংক্রান্ত নীতিমালা জারি করে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। এ নীতিমালায় আড়াই থেকে সাড়ে ৬ শতাংশ অর্থ জমা দিয়ে খেলাপি ঋণ নিয়মিত করার সুযোগ দেওয়া হয়। আগে ১০ থেকে ৩০ শতাংশ অর্থ জমা দিয়ে খেলাপি ঋণ নিয়মিত করতে হতো। পাশাপাশি খেলাপি ঋণ পাঁচ থেকে আট বছরে পরিশোধের সুযোগ দেওয়া হয়। আগে এসব ঋণ শোধ করতে সর্বোচ্চ দুই বছর সময় দেওয়া হতো। আবার নতুন করে ঋণও পাওয়া যাবে।

সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ুন
ট্রেন্ডিং

সংবাদ সূত্র

News

The Largest News Aggregator
in Bengali Language

Email: [email protected]

Follow us