ঋণ করে ঘি খাওয়ার উন্মাদনা

বিডি নিউজ ২৪ চিররঞ্জন সরকার প্রকাশিত: ১০ আগস্ট ২০২২, ১৮:৩০

প্রাচীন ভারতীয় চার্বাক দর্শনের এই কথাটি বেশ প্রচলিত যে ‘ঋণং কৃত্বা ঘৃতং পিবেৎ, যাবৎ জীবেৎ সুখং জীবেৎ’। যার অর্থ, ঋণ করে হলেও ঘি খাও, যত দিন বাঁচো সুখে বাঁচো। ট্যাঁকে টাকা নেই বলে বিলাস-ব্যসন বন্ধ থাকবে কেন? এই দর্শনে ধার করে ঘি খাওয়ায় উৎসাহ দেওয়া হয়েছে। কিন্তু বর্তমান পৃথিবীর অর্থনৈতিক পরিস্থিতিতে চার্বাকবর্ণিত নীতি বেশ বিপজ্জনক। করোনাভাইরাস মহামারীর মধ্যে তো আরও বেশি। বিশ্বজুড়েই সামগ্রিক অর্থনীতিতে মন্দাভাব দেখা দিয়েছে। এমন অবস্থায় ধার করে ঘি খেলে পরিণতি কী হতে পারে আমাদের চোখের সামনে শ্রীলঙ্কা তার দৃষ্টান্ত হয়ে দেখা দিয়েছে।


প্রাচীন চার্বাক দর্শনে ঋণ করে ঘি খাওয়ার কথা বলা হলেও পৌরাণিক গ্রন্থ মহাভারতে এর বিপরীত কথা বলা হয়েছে। বকরূপী ধর্ম এ সংক্রান্ত প্রশ্ন করলে, যুধিষ্ঠির বলেছেন, দিনান্তে যে পরম নিশ্চিন্তে শাক-ভাত খায়, সে-ই সুখী। অর্থাৎ, ধার-দেনা-ইএমআই মেটানোর টেনশন নেই। সুদ গোনার ঝক্কি নেই। অল্পতে সন্তুষ্টিই আসল কথা। যদিও আধুনিক মানুষের প্রবণতার সঙ্গে ‘শাক-ভাত খেয়ে অল্পতে সন্তুষ্ট হওয়ার ব্যাপারটা বড় বেশি যায় না। এ যুগে ভালো খেয়ে পরে, বিলাসী জীবনযাপন করাটাই ‘সুখ’। আধুনিক উন্নয়ন দর্শন মানুষকে ভোগবাদী হতে প্রতিনিয়ত প্ররোচনা যুগিয়ে যাচ্ছে। মোবাইল ফোনের কথাই ধরা যাক। এ যুগে আপনাকে শুধু মোবাইল ফোনে কথা বলার সুযোগ পেলেই হবে না। ফোনটা হতে হবে দামী। এখানে থাকবে নানা ফিচার। চকচকে ঝকঝকে ছবি তোলার সুযোগ থাকতে হবে। ব্যাটারির আয়ু দীর্ঘস্থায়ী হতে হবে। ওজনে হাল্কা হতে হবে। ওয়াটার রেসিস্ট হতে হবে। স্লিম হতে হবে। আওয়াজ হতে হবে মোলায়েম, সুরেলা ও স্পষ্ট। খুব সহজে পরিচালনা করা যায়, এমন হতে হবে। দ্রুতগতির ইন্টারনেট ব্রাউজিংয়ের সুযোগ থাকতে হবে। সবচেয়ে বড় কথা এমন লেটেস্ট মডেলের মোবাইল ফোন কেনার আগ্রহ, সুযোগ ও সামর্থ্য অর্জন করতে হবে। তবেই আপনি উন্নয়নের ড্রয়ইংরুমের একজন সুখী বাসিন্দা হিসেবে চিহ্নিত হবেন! আর এ জন্য ঋণ করাকে প্রতিনিয়ত উৎসাহ দেওয়া হয়। ঋণ প্রদানের বহু প্রতিষ্ঠান এখন নাগরিকদের দরজায় সব সময় কড়া নাড়ে।


ঋণের আরবি প্রতিশব্দ কর্জ। এর বাংলা প্রতিশব্দ হচ্ছে দেনা, ধার, হাওলাত ইত্যাদি। অভিধান মতে, ‘ঋণ হলো শুধু সহযোগিতার জন্য অন্যকে কোনো অর্থ-সম্পদ দেওয়া, যেন গ্রহীতা এর মাধ্যমে উপকৃত হয়, পরে দাতাকে সেই সম্পদ কিংবা তার অনুরূপ ফেরত দেওয়া।’

পৃথিবীতে সবার অর্থনৈতিক অবস্থা সব সময় অনুকূল থাকে না। কখনও কখনও সমস্যা ও প্রয়োজন মানুষকে ঋণ করতে বাধ্য করে। বাধ্য হয়ে অন্যের সহযোগিতার মুখাপেক্ষী হতে হয়। তাই জীবন চলার পথে ঋণ গ্রহণ ও পরিশোধ করা খুব গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয়। সামাজিক-আর্থিক ও ধর্মীয় বিধানেও ঋণ গ্রহণ করার পক্ষে বলা হয়েছে। একইসঙ্গে যথাসময়ে ঋণ পরিশোধের ব্যাপারে কঠোর নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।

সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ুন
ট্রেন্ডিং

সংবাদ সূত্র

News

The Largest News Aggregator
in Bengali Language

Email: [email protected]

Follow us