সবকিছু ছাপিয়ে এখন আলোচনা দেশের অর্থনীতি। এটি কী শক্ত ভিতের ওপর দাঁড়িয়ে, নাকি নড়বড়ে–দেশের সর্বোচ্চ পদাধিকারী থেকে মহল্লার চায়ের দোকানি পর্যন্ত এখন এ আলোচনায় অংশ নিচ্ছেন। এ আলোচনা উত্তাপ ছড়াচ্ছে রাজনীতিতেও। তবে অর্থনীতি নিয়ে যতই আলোচনা-সমালোচনা বা বিতর্কই হোক না কেন–সরকারের ভেতরে এ নিয়ে কিছুটা হলেও আতঙ্ক কাজ করছে।
এরই মধ্যে আইএমএফ, বিশ্বব্যাংক, ইকোনমিক ইন্টেলিজেন্ট ইউনিট, মুডিসসহ বিশ্বখ্যাত সংস্থা বাংলাদেশের অর্থনীতি যে সহজে গতি হারাবে না–তা স্পষ্ট করার পরও নির্ভার থাকতে পারছে না সরকার। কেন সরকার কৃচ্ছ্রসাধন, ডলার খরচে কৃপণতা আর বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খরচে সতর্ক হয়েছে–সরকারের পক্ষে প্রধানমন্ত্রী তা পরিষ্কার করেছেন। সরকারের পক্ষ থেকে পরিষ্কার করা হয়েছে যে, সাশ্রয়ের পাশাপাশি ঋণ নিয়ে হলেও ডলারের মজুত বাড়ানোই এখন লক্ষ্য।
বিভিন্ন ব্যাংকার, অর্থনীতিবিদ আর বিশ্লেষকদের সঙ্গে রিজার্ভ, ডলারসহ সমসাময়িক অর্থনীতি নিয়ে কথা হয়। তাঁরা মনে করেন, সাধারণত তিন মাসের আমদানি ব্যয় মেটানোর মতো যদি রিজার্ভ থাকে তাহলেই অর্থনীতি নিরাপদ আছে বলে মনে করা হয়। তবে বাংলাদেশ ব্যাংকে বর্তমানে বৈদেশিক মুদ্রার যে রিজার্ভ আছে, তা অন্তত পাঁচ মাসের অধিক আমদানি ব্যয় মেটানোর জন্য যথেষ্ট। সুতরাং তাদের এই বক্তব্য ঠিক থাকলে অর্থনীতি ঝুঁকিমুক্ত—এটা বলা যায়।
তাহলে সরকার আমদানিতে কেন এত কড়াকড়ি আরোপ করল, কেন বাজারে বিপুল চাহিদার মধ্যেও কম কম করে ডলার ছাড়ছে বাংলাদেশ ব্যাংক, কেন তবে সরকারি-বেসরকারি সর্বত্র কৃচ্ছ্রসাধনের নির্দেশ, বিদ্যুৎ রেশনিং করছে—এই সব প্রশ্ন সর্বত্র। খোদ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সব প্রশ্নের উত্তর দিয়েছেন আওয়ামী স্বেচ্ছাসেবক লীগের ২৮তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর আলোচনায়। তিনি বলেছেন, এটি আসলে সরকারের আগাম সতর্কতা। দেশে বৈদেশিক মুদ্রার যে রিজার্ভ আছে তা দিয়ে ৯ মাসের খাদ্যশস্য কেনার সক্ষমতা আছে জানিয়ে তিনি বলেন, দেশে চাহিদার চেয়েও বেশি অকটেন ও পেট্রল মজুত রয়েছে। শেখ হাসিনা বলেন, ‘বিশ্বের প্রতিটি দেশ বিদ্যুৎ ব্যবহারে সাশ্রয়ী হয়েছে। আমরা যাতে আরও মহাবিপদে না পড়ি সে জন্য আগে থেকেই ব্যবস্থা নিয়েছে সরকার।’