অর্থনৈতিক ঝুঁকি মোকাবিলায় প্রাসঙ্গিক ভাবনা

ইত্তেফাক মো. হাবিবুর রহমান প্রকাশিত: ২৪ জুলাই ২০২২, ০৯:৫৭

কোভিড-১৯ মহামারিতে স্থবির বিশ্ব যখন কিছুটা স্বাভাবিক ধারায় ফিরে আসার পথে, তখনই বিশ্ব পরিস্থিতিকে টালমাটাল করে দিয়েছে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ। এই যুদ্ধ লকডাউন-পরবর্তী মূল্যস্ফীতির ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতাকে আরো বেগবান করেছে। অস্থির এই বৈশ্বিক পরিস্থিতিতে বাংলাদেশের অর্থনীতিতে নানামুখী চাপ অনুভূত হচ্ছে। এ বিষয়গুলো নিয়ে আলোচনাও হচ্ছে অনেক, তবে কিছু ক্ষেত্রে প্রাসঙ্গিক বিষয় আলোচনা না করে চটকদার শিরোনাম বা অযৌক্তিক আতঙ্ক ছড়ানোর মনোভাব দেখা যাচ্ছে।


শ্রীলঙ্কার অর্থনৈতিক বিপর্যয় নিয়ে বিগত কয়েক মাসে অনেক আলোচনা-পর্যালোচনা হয়েছে। তাদের অর্থনৈতিক সংকটের কারণ, দেউলিয়াত্বের ঘোষণা ও জনগণের দুর্ভোগে সবকিছুই যুক্তিযুক্ত আলোচনার দাবিদার এবং সেই আলোচনা থেকে আমাদের শিক্ষা গ্রহণ প্রয়োজন; কিন্তু অযাচিতভাবে শ্রীলঙ্কার তুলনা এনে, বাংলাদেশও দেউলিয়া হয়ে যাবে ও চরম অর্থনৈতিক বিপর্যয়ে পতিত হবে—এ ধরনের আতঙ্ক ছড়ানোর প্রচেষ্টা বিশেষভাবে লক্ষণীয়। এর মাধ্যমে অর্থনীতি নিয়ে তথ্য-উপাত্তনির্ভর আলোচনা এড়িয়ে এক ধরনের চবত্পবঢ়ঃরড়হ ইঁরষফরহম-এর প্রতি অতি আগ্রহ দেখা যাচ্ছে। অনেক ক্ষেত্রে এ আতঙ্কবাদী মনোভাব প্রকৃত অর্থনৈতিক চিত্রকে আড়াল করে।


বাংলাদেশের সামষ্টিক ঋণ ব্যবস্থাপনার চিত্র আমাদের মোট ঋণের পরিমাণ, ঋণের ধরন এবং গ্রহণ করা ঋণের সুদের হার ও মেয়াদের তথ্য থেকে বোঝা যাবে। বিশ্বব্যাংক এবং আইএমএফের ‘উবনঃ ঝঁংঃধরহধনরষরঃু অহধষুংরং-গধত্পয ২০২২’- রিপোর্টে বাংলাদেশকে ঋণ ব্যবস্থাপনার ঝুঁকির নিরিখে কম ঝুঁকিপূর্ণ দেশ হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে। আমাদের বৈদেশিক ঋণ জিডিপির ১২ দশমিক ২ শতাংশ। এছাড়া বাংলাদেশ ব্যাংক প্রকাশিত পরিসংখ্যান থেকে দেখা যায় আমাদের বৈদেশিক ঋণের ৮০ শতাংশই দীর্ঘমেয়াদি। পক্ষান্তরে শ্রীলঙ্কার বৈদেশিক ঋণ তাদের জিডিপির ৪৮ দশমিক ২ শতাংশ। শ্রীলঙ্কার বৈদেশিক ঋণের ৪৭ শতাংশ গ্রহণ করা হয়েছে সভরেন বন্ড ও অন্যান্য বেসরকারি খাত থেকে যার গড় সুদের হার ৭ দশমিক ৫ শতাংশ। এক্ষেত্রে একটি গুরুত্বপূর্ণ দিক হলো আমাদের গড় সুদের হার ১ দশমিক ৪ শতাংশ এবং আমাদের বৈদেশিক ঋণের ৬১ দশমিক ১ শতাংশ বৈদেশিক উন্নয়ন সহযোগী প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে নেওয়া। মোট বৈদেশিক ঋণের পুরোটুকু সরকারের নয়, ৭৫ শতাংশ সরকারের এবং ২৫ শতাংশ বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের নেওয়া। পরিসংখ্যান পর্যালোচনায় এটি স্পষ্ট যে, বাংলাদেশের ঋণের চিত্র সহনীয় এবং বাংলাদেশের কোনো ধরনের কিস্তি পরিশোধে ব্যর্থ হওয়ার সম্ভাবনা নেই।


তবে বৈশ্বিক অর্থনীতির এই অস্থির পরিস্থিতিতে বাংলাদেশের অর্থনীতিতেও চাপ পড়েছে। আমদানি ব্যয়বৃদ্ধির কারণে বাণিজ্যিক ঘাটতি দাঁড়িয়েছে ৩০ দশমিক ৮২ বিলিয়ন ডলার। এই বাণিজ্যঘাটতির প্রভাব পড়েছে মুদ্রাবাজারে। আমাদের রপ্তানি আয় ৫২ বিলিয়ন মার্কিন ডলার, যা দেশের ইতিহাসে সর্বোচ্চ। তবে গত অর্থবছরে রেমিট্যান্স প্রবাহের ধারা ছিল নিম্নগামী। রেমিট্যান্স এসেছে ২০২০-২০২১ অর্থবছরের চেয়ে ১৫ শতাংশ কম, ২১ দশমিক ৩ বিলিয়ন ডলার। এ পরিস্থিতিতে আমাদের সামনে চ্যালেঞ্জ—মোটা দাগে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ, বাণিজ্যঘাটতি ভারসাম্যপূর্ণ অবস্থায় আনা এবং মুদ্রাবাজারে স্হিতিশীলতা। এই চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় প্রয়োজন সমন্বিত পদক্ষেপ। কারণ চ্যালেঞ্জের প্রতিটি ক্ষেত্র একটি অপরটির সঙ্গে জড়িত।

সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ুন
ট্রেন্ডিং

সংবাদ সূত্র

News

The Largest News Aggregator
in Bengali Language

Email: [email protected]

Follow us