কোরবানির পশুর হাট ও ঈদুল আজহার অর্থনীতি

ইত্তেফাক ড. মো. জামাল উদ্দিন প্রকাশিত: ০৭ জুলাই ২০২২, ১১:১৫

পশুখাদ্যের মূল্যবৃদ্ধির কারণে পশুর দাম বাড়তে পারে বলে ধারণা অনেকের পদ্মা সেতুর বদৌলতে দক্ষিণাঞ্চল থেকে খুব দ্রুত পশুবাহি গাড়ি ঢাকায় প্রবেশ করছে। স্বপ্নের এই সেতুর কারণে এবারের ঈদে খামারিরা লাভবান হবেন এবং অর্থনীতির নতুন দিগন্ত উন্মোচিত হতে প্রভাবক হিসেবে কাজ করবে বলে আশা করা যায় ম বিদেশ থেকেও অনলাইনে ক্রেতারা কোরবানির পশুর বুকিং দিতে শুরু করেছেন।


ঈদুল আজহা মুসলমানদের দ্বিতীয় বৃহত্তর ধর্মীয় উৎসব। এই উৎসবকে কেন্দ্র করে সারা দেশে এখন জমে উঠছে কোরবানির পশুর হাট। মহান আল্লাহর সন্তুষ্টি বিধানের জন্য পশু কোরবানি দেওয়া এই উৎসবের প্রধান উপলক্ষ্য। এই ঈদকে কেন্দ্র করে গবাদি পশু কেনাবেচায় অর্থপ্রবাহ বেড়ে যায় বহুগুণ। রেমিট্যান্স প্রবাহ বৃদ্ধির কারণে অর্থনীতিতে চাঙ্গাভাব চলে আসে। সামর্থ্য অনুযায়ী ধনী-গরিব সবাই পশু কোরবানি করেন। ফলে কোরবানি হওয়া পশুর সংখ্যা বেড়ে যায় প্রতি বছর। বহু হতদরিদ্র পরিবার তাদের আয় বৃদ্ধি ও পরিবারের চাহিদা মেটানোর জন্য কোরবানি সামনে রেখে বহু যত্ন-আত্তিতে পশুপালন করে থাকেন। এ ধরনের ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র আয় সামগ্রিকভাবে জাতীয় অর্থনীতির সঙ্গে যুক্ত হয়।


মানুষের ক্রয়ক্ষমতা বৃদ্ধির কারণে ঈদের আগে পশু কেনাবেচা বেড়ে যায়। গত দুই বছর করোনার কারণে এই অর্থনীতি থমকে দাঁড়িয়েছিল। চলতি মৌসুমে করোনার প্রাদুর্ভাব থাকলেও বাজারে চাঙ্গাভাব লক্ষণীয়। তবে স্বাস্হ্যবিধি মেনে বাজারে পশু কেনাবেচা করা সবারই জন্য উত্তম। অন্যদিকে বন্যায় আক্রান্ত জেলাগুলোতে গবাদি পশু নিয়ে অনেকটা বিপদে পড়েছেন খামারিরা। পশুখাদ্যের মূল্যবৃদ্ধির কারণে পশুর দাম বাড়তে পারে বলে ধারণা অনেকের। বন্যার্ত এলাকায় এক অঞ্চল থেকে অন্য অঞ্চলে পশু আনা-নেওয়ার কাজও চলছে। এসব এলাকায় ক্ষতিগ্রস্ত খামারিদের জন্য প্রণোদনা দেওয়ার চেষ্টা চলছে বলে জানা যায়। পদ্মা সেতুর বদৌলতে দক্ষিণাঞ্চল থেকে খুব দ্রুত পশুবাহি গাড়ি ঢাকায় প্রবেশ করছে। স্বপ্নের এই সেতুর কারণে এবারের ঈদে খামারিরা লাভবান হবেন এবং অর্থনীতির নতুন দিগন্ত উন্মোচিত হতে প্রভাবক হিসেবে কাজ করবে বলে আশা করা যায়।


চাহিদার আলোকে পশু সরবরাহ নিশ্চিত করতে প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের পক্ষ থেকে তত্পরতা চালানো হচ্ছে। প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের তথ্যসূত্র উল্লেখপূর্বক জাতীয় দৈনিক পত্রিকার বরাতে জানা যায়, ২০১৬ সালে ৯৮ লাখ ১৩ হাজার পশু কোরবানি হয়। ২০১৭ সালে ১ কোটি ৪ লাখ এবং ২০১৮ সালে ১ কোটি ৬ লাখ। এভাবে ক্রমাগত পশু কোরবানির সংখ্যা বাড়তে থাকে। ২০১৯ সালে ১ কোটি ৬ লাখ ১৪ হাজার পশু কোরবানি হয়। ২০২০ সালের মার্চ থেকে কোভিড ১৯ সংক্রমণ মানুষের জীবনযাপনে বিরূপ প্রভাব ফেলায় পশু কোরবানির সংখ্যা কমে হয় ৯৪ লাখ ৫০ হাজার ২৬৩টি। উক্ত সূত্রমতে, ২০২১ সালে পশু কোরবানির সংখ্যা আরো হ্রাস পেয়ে হয় ৯০ লাখ ৯৩ হাজার ২৪২টি। কোরবানিযোগ্য অবিক্রীত পশুর সংখ্যা ছিল ২৮ লাখ ২৩ হাজার ৫২৩। ফলে বড় ধরনের আর্থিক ক্ষতির মধ্যে পড়েছিলেন খামারি-ব্যাপারীরা। গোখাদ্যের দাম বস্তাপ্রতি ২০০-৪০০ টাকা বেড়ে যাওয়ায় গরুর দাম বাড়তি হবে বলে সংবাদে প্রকাশ পেয়েছে। উক্ত সূত্রমতে, এবার ঈদুল আজহায় ১ কোটি ২১ লাখ ২৪ হাজার ৩৮৯টি পশু কোরবানি দেওয়া হবে। এর মধ্যে গরু-মহিষের সংখ্যা ৪৬ লাখ ১১ হাজার এবং ছাগল-ভেড়ার সংখ্যা ৭৫ লাখ ১১ হাজার। প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, কোরবানির জন্য ইতিমধ্যে ৪২ লাখ ৪০ হাজার গরু-মহিষ ও ৩৩ লাখ ৪৮ হাজার ছাগল-ভেড়া মোটাতাজাকরণ করা হয়েছে। গত দুই বছরের তুলনায় এখন অর্থনীতি অনেকটাই ঘুরে দাঁড়িয়েছে বলে প্রতিয়মান হয়। গতবারের আর্থিক ক্ষতি পুষিয়ে নিতে পারবেন খামারিরা, এটিও আশা করা যায়।

সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ুন
ট্রেন্ডিং

সংবাদ সূত্র

News

The Largest News Aggregator
in Bengali Language

Email: [email protected]

Follow us