ভিটের মাটি নেই, একপাশের বেড়াও গেছে ভেসে; সিমেন্টের পিলারের উপর টিনের ছাউনি নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে যেন শুধু একটি ঘরের ‘কঙ্কাল’।
দেখে মনে হতে পারে, হাওরের পাশে কোনো এক পরিত্যক্ত ঘর, যেখানে বেশ কয়েকদিন কারও পা পড়েনি। অথচ ১৭ দিন আগেও এ জায়গায় ছিল সাগর মিয়ার তিন সদস্যের সুখের সংসার; কোলাহলে পূর্ণ এক আঙিনা।
আসাম ও মেঘালয় থেকে ধেয়ে আসা ঢলের সেই দিনটিতে বাড়িতে ছিলেন না সাগর। মধ্য জুনের সেই রাতে বানের তোড়ের মধ্যে দেড় বছরের সন্তানকে নিয়ে পাশের বাড়িতে কোনো রকমে আশ্রয় নেন তার স্ত্রী জরিমন বেগম।
২৫ বছরের যুবক সাগর মিয়া বলেন, এমন স্রোত যে ওদের প্রাণ বাঁচে না, ঘর আর রক্ষা করবে কি… সবই ভেসে গেছে। ফিরে এসে দেখি ভিটের মাটিও নাই!
তার আক্ষেপ এই বৈশাখেই ৪০ হাজার টাকা খরচ করে হাওর থেকে মাটি এনে ভিটায় ফেলেছিলেন। নতুন করে এক পাশে বারান্দা করার ইচ্ছা নিয়ে তিন বান টিনও কিনে রেখেছিলেন তিনি।
তৃতীয় দফার বন্যায় সব কিছুই ভেসে গেছে এক রাতের দুর্যোগে; বানের এমন তেজ আর দেখেননি যুবক সাগর, পানির মধ্যেই যার এখন কাটে রাতদিন আর শৈশব কৈশোরও কেটেছে হাওরেই।
ভিটের মধ্যে বারান্দা করার জন্য যে জায়গা ভেবেছিলেন সাগর, সেটা স্রোতের ধাক্কায় বিলিন হয়েছে টাংগুয়ার হাওরে। ঘরের সীমানার সঙ্গে এখনও ছুঁই ছুঁই করছে পানি।