দামের উল্লম্ফন ঘিরে দোষারোপের খেলা চলছে। উঠছে একগুচ্ছ প্রশ্ন। কেউ কেউ প্রশ্ন তুলছে, বর্তমান দাম বাড়ার পেছনে কি দীর্ঘ সময় ধরে অর্থনীতিতে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের প্রবাহিত অতিরিক্ত অর্থ কাজ করেছে, যা মূল্যস্ফীতি ঘটিয়েছে? কারো কারো প্রশ্ন, নাকি এক্ষেত্রে চীন ফ্যাক্টর কাজ করেছে, যেখানে মহামারীতে লকডাউন দেয়ার আগেই বেশির ভাগ ভৌত উৎপাদন স্থানান্তরিত হয়েছিল এবং ব্যাহত হয়েছিল বৈশ্বিক সরবরাহ ব্যবস্থা? কেউবা আবার প্রশ্ন তুলছে, নাকি এক্ষেত্রে রাশিয়া দায়ী—ইউক্রেনে যার আক্রমণের ফলে বৈশ্বিক গ্যাস, তেল, খাদ্যশস্য ও সার সরবরাহ বহুলাংশে বাধাগ্রস্ত হয়েছে? আবার কারো কারো প্রশ্ন, নাকি এটা প্রাক-মহামারী কৃচ্ছ্রতা থেকে অনিয়ন্ত্রিত আর্থিক উদারতার কিছুটা কুসংস্কারাচ্ছন্ন স্থানান্তরের ফল? এসব প্রশ্ন বৈশ্বিক দৃশ্যপটে এখন ঘুরছে।
তবে মজা হলো, প্রশ্নকর্তারা এক্ষেত্রে এমন এক উত্তর শুনবে, যেটা আগে কখনো শোনেনি তারা। আর তাহলো দামের উল্লম্ফনের জন্য উল্লেখিত সব বিষয়ই দায়ী, আবার কোনোটাই দায়ী নয়।
আমরা দেখেছি, প্রধান অর্থনৈতিক সংকটগুলো বারবারই নানা ব্যাখ্যা সামনে আনে, যার সবই সঠিক—যদিও অনেক সময় সেখানে গুরুত্বপূর্ণ যুক্তি অনুপস্থিত থাকে। যখন ২০০৮ সালে ওয়ালস্ট্রিটের পতন ঘটেছিল, শুরু হয়েছিল বৈশ্বিক আর্থিক সংকট, তখন অনেক ব্যাখ্যাই দেয়া হয়েছিল। সেগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো, অর্থায়নকারীদের দ্বারা নিয়ন্ত্রণমূলক কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠা, শিল্পপতিদের চালকের আসনে বসানো, ঝুঁকিপূর্ণ অর্থায়নের প্রতি সাংস্কৃতিক ঝোঁক, নতুন প্যারাডাইম ও বিপুল বুদ্বুদের মধ্যে পার্থক্য নির্ণয়ে রাজনীতিবিদ ও অর্থনীতিবিদদের ব্যর্থতা এবং অন্যসব তত্ত্ব। সব ব্যাখ্যাই ঠিক ছিল, কিন্তু কোনোটিই মূল বিষয়ের গভীরে যায়নি।