আজকের জগত শেঠরা কোথায় পালালো?

বিডি নিউজ ২৪ এ এইচ এম শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিক প্রকাশিত: ৩০ জুন ২০২২, ১৮:৫৬

কথিত আছে, বরগির হাঙ্গামা রোধকল্পে  প্রচুর পয়সার প্রয়োজন হলে আলীবর্দি খান এবং পরে নবাব সিরাজ উদ দৌলা জগত শেঠসহ অন্যান্য পুঁজিপতিদের সাহায্য চাইলে তারা আত্মগোপনে চলে গিয়েছিল। আজকের জগত শেঠরাও তাই করছে। কোভিড-১৯ সংক্রমণের মাধ্যমে প্রকৃতির বিষাক্ত দংশনে গোটা বিশ্বের মতো বাংলাদেশও জর্জরিত হওয়ার পরেই শুরু হলো মানবসৃষ্ট দুর্যোগ ইউক্রেইন যুদ্ধ। তার জের শেষ না হতেই আবার প্রকৃতির ছোবল, অভূতপূর্ব বন্যায় ভাসছে সারাদেশ। বন্যার সাথে সম্পৃক্ত সব ধরনের জনদুর্ভোগই বিরাজ করছে। হতাহতের সংখ্যা তেমন না হলেও, খাদ্যদ্রব্যের অভাব স্বভাবতই প্রকট হয়ে উঠছে। চলাচলের পথ এক রকম বন্ধ বন্যার পানির কারণে। ত্রাণ বিতরণও কঠিন হয়ে পড়েছে। এমনকি আশ্রয়স্থলগুলোও পানিতে নিমজ্জিত।


এই দুর্ভোগ নিরসনে সরকার যা পারছে, করে যাচ্ছে। নামানো হয়েছে সেনাবাহিনী, বিজিবি-সহ সকল শক্তি, যারা আপ্রাণ চেষ্টা করছে বানভাসি মানুষের জন্য কিছু করার। সরকার যথাসাধ্য ত্রাণও দিচ্ছে, হেলিকপ্টারেরও সাহায্য নিচ্ছে। কিন্তু এ ব্যাপারে সরকারের সীমাবদ্ধতা অবশ্যই ভুলে গেলে চলবে না। এ ধরনের পরিস্থিতিতে বিশ্বের বহু দেশে এগিয়ে আসেন সে সব দেশের ধনিক শ্রেণি। কিন্তু আমাদের ধনকুবেরদের মোটেও মাঠে দেখা যাচ্ছে না।


এক শ্রেণির লোক এ বন্যার জন্য মিথ্যা গল্প বানিয়ে ভারতের উপর দোষ চাপানোর চেষ্টায় ব্যস্ত। ভারত বিরোধিতা এদের মজ্জাগত এবং উদ্দেশ্যমূলক ষড়যন্ত্রের অংশ। এদের কথায় মনে হচ্ছে বন্যায় তারা খুশি, কারণ বন্যার অজুহাত দেখিয়ে তারা ভারতবিরোধী প্রচারণার একটি হাতিয়ার পেল। অথচ তারা দেখছে না যে এ বন্যায় ভারতের আসাম রাজ্যও মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত। সেখানে বেশ কিছু লোকের মৃত্যু হয়েছে, ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে লক্ষাধিক লোক। আমাদের নদী ও বন্যা বিশেষজ্ঞরা পরিষ্কার বলছেন, এ অভূতপূর্ব বন্যার জন্য মূলত ভারতের চেরাপুঞ্জি অঞ্চলে ঘটে যাওয়া অতি অধিক বৃষ্টি দায়ী, যা গত ১২০ বছরে ঘটেনি। আরো দায়ী বিশ্ব আবহাওয়ায় পরিবর্তন। অতীতে যখনই এ ধরনের প্রকৃতি সৃষ্ট দুর্যোগ ঘটেছে তখনই পৃথিবীর


বিভিন্ন দেশের বেশ কিছু ধনকুবের সহায়তা দানের প্রথম সারিতে দাঁড়িয়েছেন। এর ফলে জনমানুষের পয়সা লুট করে পুঁজিপতি হওয়ার বদনাম থেকে তারা কিছুটা হলেও মুক্তি পেয়েছেন।কোভিড মহামারীর সময় যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্যসহ পৃথিবীর সম্পদশালী দেশসমূহের কয়েকজন বিত্তশালী তাদের দানছত্র নিয়ে নেমে পড়েছিলেন এই কথা বলে যে একা সরকারের পক্ষে এ ধরনের পরিস্থিতি সামাল দেওয়া সম্ভব নয়। পৃথিবীর ৭টি দেশের ৮৩ জন ধনকুবের নিজ নিজ দেশের সরকারকে অনুরোধ করেছেন- তাদেরসহ সব ধনী সংস্থা ও ব্যক্তিদের আয়কর বাড়িয়ে দেওয়া হোক, চলতি আর্থিক সংকট মেটানোর জন্য। পুঁজিবাদী সমাজ ব্যবস্থার কুৎসিত রূপ বলে যে কথাটি প্রচলিত তার কিছুটা লাঘব করেছেন এসব পুঁজিপতিরা তাদের মানবিকতা প্রদর্শন করে।  ‘১০২ মিলিয়নিয়ারের গ্রুপ’ নামে পরিচিত সংস্থার সদস্যরা শুধু দানই করেননি, বরং বলেছেন তাদের আয়কর বাড়ানো হোক। এরা হলেন ডিজনির উত্তরাধিকারি এবিগেইল ডিজনি, নিক হেনাউয়ের, গেমা ম্যাকগেট, মুনাক এবং তার স্ত্রী অক্ষত মূর্তি, জুলিয়া ডেভিস।


দানশীলতার জন্য এই ধরণীর শীর্ষ ধনীদের অন্যতম বিল গেইটস এবং তার সাবেক স্ত্রী মেলিন্ডা গেইটসের খ্যাতি বিশ্বময়। কোভিড মহামারীর শুরুতেই এই দম্পত্তি (তখনো বিচ্ছেদ হয়নি) তাদের সাহায্যের দ্বার খুলে দেন সব দেশের জন্য। এই দম্পতি যে শুধু দরিদ্র দেশেই সহায়তা পাঠিয়েছেন, তা নয়, অর্থ মার্কিন মুল্লুকের মানুষও পেয়েছেন।


গেইটস দম্পতি ছাড়াও আরও যার নাম বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য তিনি হচ্ছেন, যুক্তরাজ্যভিত্তিক সেইনসব্যারি চেইনের মালিক লর্ড সেইনসব্যারির উত্তরাধিকারী এবং কন্যা ফ্রেন প্যারিন। তিনি উত্তরাধিকার সূত্রে পাওয়া তার সমস্ত সম্পদ দান করেই ক্ষান্ত হননি, সকল সম্পদশালীদের বলেছেন “এতোদিন তোমরা সমাজ থেকে যা নিয়েছো এখন সময় এসেছে তা সমাজকে ফিরিয়ে দেয়ার।”


যুক্তরাষ্ট্রের ‘প্যাট্রিয়টিক মিলিয়নিয়ারের’ আদলে যুক্তরাজ্যের কিছু বিবেকবান ধনী গড়ে তুলেছেন ‘মিলিয়নিয়ার ফর হিউমেনিটি’, নামক সংস্থা যার অন্যতম উদ্ভাবক, চিত্র পরিচালক রিচার্ড কার্টিস তার আয়ের বিরাট অংশ দান করে বলেছেন, “আমাদের যে সম্পদ আছে, তা বিশ্বে ক্ষুধার্ত মানুষের জন্য প্রয়োজন।”

সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ুন
ট্রেন্ডিং

সংবাদ সূত্র

News

The Largest News Aggregator
in Bengali Language

Email: [email protected]

Follow us