কয়েক দিন আগে বাবাকে নিয়ে হাসপাতালে গিয়েছিলেন ওলিভা বিশ্বাস। মোহাম্মদপুর থেকে মহাখালী দূরত্ব ছয় কিলোমিটারের মতো। যাওয়ার সময় লেগেছিল দুই ঘণ্টা। আর ফিরতে প্রায় তিন ঘণ্টা।
তিনি বলছেন, "রাস্তায় আমার পাঁচ ঘণ্টা নষ্ট হল। বাবা আরো অসুস্থ হয়ে গিয়েছিল। রাস্তায় নামলেই রীতিমতো কান্না পায়। মনে হয় যেন কোথাও যাচ্ছি না। শুধু বসেই আছি। সেদিন মনে হচ্ছিল সিএনজি থেকে নেমে দৌড় দেই। জ্যামের কারণে খুব জরুরি কাজ ছাড়া আমি কোথাও যাওয়াই বন্ধ করে দিয়েছি।"
ওলিভা বিশ্বাস ফেসবুকে গয়নার ব্যবসা করেন। ঘরে বসেই কাজ করতে পারেন কিন্তু লাখ ঢাকাবাসীর জীবনের তাগিদে বাইরে না গেলেই নয়।
যেমন তাইমুন নাহার আফরোজ একটি বিমান কোম্পানিতে কাজ করেন। দিনকে দিন বাড়ি থেকে অফিস যাওয়ার জন্য তার সময় বাড়ছে। আগে যে সময় হাতে নিয়ে বের হতেন এখন তার চেয়ে আরো পনের মিনিট বেশি হাতে নিয়ে বের হন।
তিনি বলছেন, "অফিসে আসার আগেই জ্যামে বসে থাকতে থাকতে এই গরমে ঘেমে মনে হয় যেন পুরো গোসল হয়ে গেল। শরীরের সব পানি বের হয়ে গেল। পুরো ডিহাইড্রেটেড হয়ে যাই। সাত সকালে অফিসে ঢোকার আগেই সব এনার্জি শেষ হয়ে যায়।", বলছিলেন তিনি।
ঢাকা শহরের যানজট কোন মাত্রায় পৌঁছেছে তা এই শহরের বাসিন্দাদের রোজকার অভিজ্ঞতাই বলে দেয়। রাস্তায় বসে বসে কান্না পাচ্ছে, চুল ছিঁড়তে ইচ্ছে করছে - ঢাকাবাসীর অনেকেরই সম্ভবত এমনটা মনে হয়। কেননা ইদানীং মনে হয় এই শহর যেন নড়ছেই না এবং দিনকে দিন পরিস্থিতি আরো খারাপ হচ্ছে।
যানজটের কারণে সময় ও অর্থ নষ্ট হচ্ছে। কিন্তু সেই সাথে শহরের বাসিন্দারা যানজটে বসে বসেই নানা স্বাস্থ্য সমস্যার মুখোমুখি হচ্ছেন। এই স্বাস্থ্য সমস্যার বড় ধরনের আর্থিক ক্ষতিও রয়েছে।