বাংলাদেশের ব্যাংক খাতের অবস্থা মোটেও ভালো নয়। বিশেষ করে মূলধনের দিক থেকে বিশ্বের ছোট-বড় প্রায় সব দেশের তুলনায় পিছিয়ে আছে বাংলাদেশের ব্যাংক খাত। এমনকি অর্থনৈতিক সংকটে পড়া শ্রীলঙ্কার ব্যাংক খাতের সম্পদের বিপরীতে মূলধনের অনুপাত বাংলাদেশের চেয়ে বেশি। বিশ্বব্যাংক সম্প্রতি এ তথ্য প্রকাশ করেছে।
বিশ্বব্যাংক বলছে, বাংলাদেশে প্রায় এক দশক ধরে ব্যাংক খাতে সম্পদের বিপরীতে মূলধনের অনুপাত কমছে। যার কারণে দক্ষিণ এশিয়ার ব্যাংকগুলোর সম্পদের বিপরীতে মূলধনের অনুপাত এখন বাংলাদেশের চেয়ে অনেক বেশি।
সাধারণত, কোন ব্যাংক কতটা শক্তিশালী বা অর্থনৈতিক দুর্যোগ মোকাবিলায় কতটা সক্ষম তা পরিমাপ করা হয় ওই ব্যাংকের মূলধনের ভিত্তিতে। এছাড়া, আমানতকারীদের অর্থের সুরক্ষা, ব্যাংকের স্থিতিশীলতা ও আর্থিক ব্যবস্থাপনার দক্ষতা পরিমাপেরও মাপকাঠি ওই মূলধন।
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য বলছে, ২০২০ সাল শেষে দেশের ব্যাংক খাতের মোট সম্পদ ছিল ১৮ লাখ ৪০ হাজার ৬০০ কোটি টাকা। এর মধ্যে ১ লাখ ৯ হাজার ৩৭০ কোটি টাকা ছিল ব্যাংকগুলোর মূলধন ও শেয়ারহোল্ডার ইকুইটি।
বিশ্বব্যাংকের তথ্য পর্যালোচনায় দেখা যাচ্ছে, গত এক দশকে বিশ্বের বেশিরভাগ দেশের ব্যাংক খাতে সাধারণ গ্রাহকদের জমানো আমানতের সঙ্গে সম্পদের সামঞ্জস্য রেখে মূলধন বেড়েছে।
কিন্তু বাংলাদেশের ব্যাংক খাতে দ্রুত আমানত বাড়লেও সে অনুপাতে মূলধন না বেড়ে উল্টো কমেছে।
মূলত, আমানতকারীদের জমানো অর্থ থেকে গ্রাহকদের যে ঋণ বা বিনিয়োগ দেওয়া হয়, সেটিও ব্যাংকের সম্পদ। অন্যদিকে মূলধন হলো ব্যাংকের উদ্যোক্তা তথা শেয়ারহোল্ডারদের জোগান দেওয়া পরিশোধিত মূলধন, বিভিন্ন ধরনের রিজার্ভ ও রিটেইন আর্নিংস।
এ প্রসঙ্গে বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেন, ব্যাংকের মূলধন কম থাকলে আমানতকারীদের অর্থ থাকে ঝুঁকিতে। কারণ, মূলধন একটি আস্থার প্রতীক। মূলধন কম থাকলে ব্যাংক যত বড়ই হোক, টেকসই হবে না।
তিনি আরও বলেন, সম্পদের বিপরীতে মূলধন সক্ষমতার হার কম থাকার অর্থই হলো ব্যাংকগুলো দুর্বল।