বাংলাদেশের বেসরকারি খাতের উদ্যোক্তাদের মেয়াদি ঋণ দেওয়ার ক্ষেত্রে চীনের অবস্থান ছিল অনেক নিচে। কিন্তু এখন চীন সবচেয়ে বড় উৎস। বেসরকারি খাতে ২০২১ সাল শেষে মেয়াদি ঋণের স্থিতি ৭৬১ কোটি ডলার। এর মধ্যে চীন থেকে এসেছে ১৭৫ কোটি ডলার। গত বছরের প্রথম প্রান্তিক বা মার্চ শেষে যা ছিল মাত্র ৪২ কোটি ডলার। বৈদেশিক ঋণ নিয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের গত ডিসেম্বরভিত্তিক প্রতিবেদনে এমন তথ্য রয়েছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, মেয়াদি ঋণে আগে শীর্ষে ছিল হংকং। গত বছরের প্রথম প্রান্তিক শেষে হংকং থেকে ঋণের পরিমাণ ছিল ১৪৯ কোটি ডলার। ডিসেম্বর শেষে তা কমে ১৪৮ কোটি ডলার হয়েছে। যুক্তরাজ্য থেকে মেয়াদি ঋণের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৯৩ কোটি ডলার। গত মার্চে যা ৮৮ কোটি ডলার ছিল। চতুর্থ অবস্থানে থাকা যুক্তরাষ্ট্র থেকে ঋণের পরিমাণ ৮৯ কোটি ডলার থেকে কমে ৮০ কোটি ডলারে নেমেছে। আর নেদারল্যান্ডস থেকে এসেছে ৫৯ কোটি ডলারে। বিভিন্ন দেশের ব্যাংক, আর্থিক প্রতিষ্ঠান ও সংস্থা থেকে ঋণ নেওয়ার পাশাপাশি আন্তর্জাতিক সংস্থা থেকেও ঋণ নেয় বেসরকারি খাত। তবে এর পরিমাণ খুব কম। আন্তর্জাতিক সংস্থা থেকে ঋণের পরিমাণ গত মার্চের ৩৯ কোটি ডলার থেকে বেড়ে ডিসেম্বরে এসে ৫৪ কোটি ডলার হয়েছে।
বেসরকারি খাতে ঋণ সরবরাহে শীর্ষ ১০-এ থাকা দেশগুলোর মধ্যে ষষ্ঠ অবস্থানে রয়েছে সিঙ্গাপুর। গত বছরের প্রথম প্রান্তিকে সিঙ্গাপুর থেকে মেয়াদি ঋণ ছিল ৩৮ কোটি ডলার। ডিসেম্বরে তা বেড়ে হয়েছে ৪১ কোটি ডলার। জার্মানি থেকে ঋণের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৩৭ কোটি ডলারে। গত বছরের প্রথম প্রান্তিক শেষে যা ২৫ কোটি ডলার ছিল। সৌদি আরব থেকে উদ্যোক্তার নিয়েছেন ২১ কোটি ডলার। জাপান থেকে নিয়েছে ১৮ কোটি ডলার। আর সংযুক্ত আরব আমিরাত থেকে এসেছে ১০ কোটি ডলার।
জানতে চাইলে বাংলাদেশ চায়না চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আল মামুন মৃধা সমকালকে বলেন, বাংলাদেশের ব্যাংক খাত থেকে ঋণ নেওয়া খুব কঠিন। উদ্যোক্তাদের নানা হয়রানিতে পড়তে হয়। যে কারণে সামগ্রিকভাবে বিদেশি ঋণ বাড়ছে। চীন থেকে অতি সহজে ও কম সুদে ঋণ পাওয়া যায়। যে কারণে উদ্যোক্তাদের অনেকে এখন চীনমুখী।