রাশিয়া ও ইউক্রেনের মধ্যকার চলমান যুদ্ধ দীর্ঘায়িত হলে বাংলাদেশের সার্বিক অর্থনীতিতে এর ক্ষতিকর প্রভাব আরও বাড়বে। আন্তর্জাতিক বাজারে জ্বালানি, গম, সারসহ অন্যান্য পণ্যের দাম আরও বেড়ে যাবে। তখন দেশের বাজারেও এর নেতিবাচক প্রভাব পড়বে। এতে মূল্যস্ফীতিতে চাপ আরও বাড়বে।
ফলে আগামী জুনের মধ্যে মূল্যস্ফীতির হার ৬ দশমিক ৩ শতাংশ পর্যন্ত বাড়ার আশঙ্কা করা হয়েছে। একই সঙ্গে কোনো কারণে যুদ্ধ ইউরোপের দেশে প্র্রসারিত হলে বাংলাদেশের রপ্তানি ও রেমিট্যান্সে বড় ধাক্কা আসতে পারে বলে সতর্ক করা হয়েছে।
সোমবার বিকালে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের প্রকাশিত ‘বাংলাদেশ ব্যাংক ত্রৈমাসিক বা বাংলাদেশ ব্যাংক কোয়ার্টারলি’ শীর্ষক প্রতিবেদনে এসব তথ্য উল্লেখ করা হয়েছে। এতে দেশের সার্বিক অর্থনীতির হালনাগাদ চিত্র ও ভবিষ্যৎ করণীয় সম্পর্কে প্রয়োজনীয় সুপারিশ করা হয়। প্রতি তিন মাস পরপর প্রতিবেদনটি প্রকাশ করে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।
প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, করোনার কারণে অর্থনৈতিক ক্ষতি কাটিয়ে ওঠার প্রচেষ্টা যখন চলমান তখন রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ শুরু হওয়ায় অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধার গতি বাধাগ্রস্ত হয়। যুদ্ধের প্রভাব ও অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধারের কার্যক্রম এগিয়ে নিতে সরকারের রাজস্ব ও আর্থিক নীতির মধ্যে সমন্বয় সাধনের ওপর জোর দেওয়া হয়েছে। একই সঙ্গে মূল্যস্ফীতির চাপ কমাতে অ-অর্থনৈতিক বাধাগুলোর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হবে। এর মধ্যে পণ্যের অবৈধ মজুত ও সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার সুপারিশ করা হয়েছে। এটি হলে পণ্যমূল্য কিছুটা হলেও কমবে। ফলে মূল্যস্ফীতিতে চাপও কমবে।
এতে বলা হয়, বিশ্বব্যাপী গম, জ্বালানি তেল, গ্যাস, সার, লোহাসহ আকরিক প্রধান পণ্যের প্রধান জোগানদাতা রাশিয়া ও ইউক্রেন। দুই দেশের যুদ্ধের কারণে এসব পণ্যের আন্তর্জাতিক বাজারে অস্থিরতা সৃষ্টি হয়েছে। একই সঙ্গে দুই দেশ থেকেই রপ্তানি কার্যক্রম বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। ফলে পণ্যের দাম বাড়ছে। বাংলাদেশ চড়া দামে ওইসব পণ্য আমদানি করায় দেশের বাজারেও এগুলোর দাম বাড়ছে। যুদ্ধ যদি চলমান থাকে তবে অর্থনৈতিক ব্যবস্থাপনায় আরও সতর্ক হতে হবে।