১০ মার্চ জাতীয় দুর্যোগ প্রস্তুতি দিবস। এ বিষয়ে প্রথম আলো কথা বলেছে বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপকূল বিদ্যা ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা বিভাগের চেয়ারম্যান হাফিজ আশরাফুল হকের সঙ্গে। ২০১৬ সালে বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের এই বিভাগের প্রতিষ্ঠাকালীন চেয়ারম্যান হিসেবে সিলেবাস ও কারিকুলাম প্রণয়নে তিনি মুখ্য ভূমিকা পালন করেছেন। দেশি-বিদেশি জার্নালে তাঁর অনেক গবেষণা প্রবন্ধ প্রকাশিত হয়েছে।
প্রথম আলো: বলা হচ্ছে, দুর্যোগ মোকাবিলায় বাংলাদেশ বহির্বিশ্বে রোল মডেল। বাস্তবতা কেমন? ভূমিকম্পসহ অন্যান্য দুর্যোগে পরিকল্পনা গ্রহণ ও বাস্তবায়নের প্রয়োজনীয়তা আছে?
হাফিজ আশরাফুল হক: দুর্যোগ মোকাবিলায় বহির্বিশ্বে বাংলাদেশ রোল মডেল, এটি একটি রাজনৈতিক বক্তব্য। তবে এ দেশের মানুষ দুর্যোগকে যেভাবে ঐক্যবদ্ধভাবে মোকাবিলা করে, বরং সেটাকে রোল মডেল বলা যেতে পারে। দুর্যোগ মোকাবিলায় দেশে এ পর্যন্ত একটি কাঠামো ও একটি মন্ত্রণালয় প্রতিষ্ঠা করা ছাড়া তেমন কোনো অগ্রগতি হয়নি। বাস্তবতা হচ্ছে, প্রাকৃতিক দুর্যোগকে প্রতিকার করা যায় না; ঝুঁকি হ্রাসে প্রস্তুতি ও কার্যকর পদক্ষেপের মাধ্যমে ক্ষয়ক্ষতি কমিয়ে আনা যায়। আর মনুষ্যসৃষ্ট দুর্যোগের ক্ষেত্রে আমরা মানুষ খুবই ব্যতিক্রমী প্রাণী। কারণ, যে কাজগুলো করলে আমাদের দুর্যোগ ঝুঁকি বেড়ে যাবে, আমরা সেই কাজগুলো করি। আমরা জেনে–বুঝেই পরিবেশের ক্ষতি করে যাচ্ছি।
পৃথিবীতে একমাত্র জাপান ছাড়া চতুর্থ শিল্পবিপ্লবে অন্য কোনো দেশ টেকসই উন্নয়নের ব্যাপারে কার্যকর পদক্ষেপ পুরোপুরি নিয়েছে বলে আমার জানা নেই। আমি নিশ্চিত নই যে পুরো বিশ্ব একদিন এ বিষয়ে সফল হবে কি না। টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (এসডিজি) অর্জনের জন্য ভূমিকম্পসহ অন্যান্য দুর্যোগ মোকাবিলায় পরিকল্পনা গ্রহণ ও বাস্তবায়নের বিরাট প্রয়োজনীয়তা রয়েছে। বিশেষ করে বিশেষজ্ঞদের মতামত ও তাঁদের সৃষ্ট নতুন নতুন জ্ঞানের আলোকে পরিকল্পনা গ্রহণ ও তা বাস্তবায়নে অগ্রাধিকার দিতে হবে। দুর্যোগঝুঁকি কমানোর আগাম সতর্কতা ও পূর্বাভাস প্রদান ব্যবস্থা এবং দুর্যোগ প্রতিরোধ সক্ষমতা বাড়ানোর ব্যাপারে যথাযথ নজর দিতে হবে।