রাশিয়া ইউক্রেনে সর্বাত্মক সামরিক হামলা চালিয়েছে। এ ন্যক্কারজনক ঘটনার অর্থনৈতিক ও আর্থিক পরিণাম আমাদের অবশ্যই বিবেচনায় রাখতে হবে। সাম্প্রতিক দশকগুলোয় বিশ্বের নানা জায়গায় বেশকিছু ছোটখাটো সংঘাত চলেছে। সেগুলো থেকে ইউক্রেনে হামলা ভিন্নতর। এটা অন্য কোনো ছোট সংঘাত নয়; বরং স্নায়ুযুদ্ধের দ্বিতীয় পর্যায়ের একটা বড় উত্তরণ বৈকি। এর মাধ্যমে চীন, রাশিয়া, ইরান ও উত্তর কোরিয়া এ চার সংশোধনবাদী শক্তি আন্তর্জাতিক ব্যবস্থায় যুক্তরাষ্ট্র ও পশ্চিমা দেশগুলোর দীর্ঘদিনের আধিপত্যকে চ্যালেঞ্জ করছে, যে ব্যবস্থাটি গড়ে উঠেছিল দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর।
বাজার ও রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বিশ্বব্যবস্থার এ পালাবদলের প্রভাব অবমূল্যায়ন করবেন কিনা, এটাই এখন বড় ঝুঁকি। গত ২৪ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেনে প্রথম হামলার দিন এ আশায় মার্কিন শেয়ারবাজারের সূচক বেড়েছিল যে চলমান যুদ্ধ ফেডারেল রিজার্ভের সুদহার বাড়ানোর বিষয়টি মন্থর করবে। যদিও বৃহত্তর অর্থনীতির দিক থেকে বর্তমানে একটি বৈশ্বিক স্থবিরতামূলক পরিস্থিতি বিরাজ করছে। বিশ্লেষকরা প্রশ্ন তুলছেন, এ সংকট ও তার সৃষ্ট প্রভাব থেকে ফেড এবং অন্য প্রধান কেন্দ্রীয় ব্যাংকগুলো একটা নমনীয় অবস্থান নিতে পারে কিনা। আর্থিক নিয়ন্ত্রক সংস্থাগুলোর অবস্থান যা-ই হোক না কেন, কেবল তাদের নীতি হস্তক্ষেপের ওপর আমাদের নির্ভর করলে চলবে না। প্রবৃদ্ধি হ্রাস ও মূল্যস্ফীতি আরো বাড়িয়ে ইউক্রেনে চলমান সংঘাত বিশ্ব অর্থনীতিতে একটা ব্যাপকতর ঋণাত্মক সরবরাহ অভিঘাত সৃষ্টি করবে। সংঘাতটি এমন এক সময়ে ঘটছে, যখন মূল্যস্ফীতি প্রত্যাশা এরই মধ্যে অনেকটা নিয়ন্ত্রণহীন।