জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব মোকাবিলার কঠিন সংকেত

যুগান্তর ইফতেখার উদ্দিন চৌধুরী প্রকাশিত: ২৭ জানুয়ারি ২০২২, ১০:৫২

বিশ্বের সব সচেতন মহলের ধারণা, করোনা অতিমারির চেয়েও জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব ভয়াবহ থেকে ভয়ংকর রূপ পরিগ্রহ করতে যাচ্ছে।


মনন-জ্ঞাননিরপেক্ষ কোনো ব্যাখ্যা নয়; প্রায়োগিক বিজ্ঞানসম্মত গুণগত বিশ্লেষণে প্রতিফলিত পরিবেশ দূষণ-জলবায়ু পরিবর্তনের যৌগিক মিথস্ক্রিয়া বিশ্ববাসীর জীবন-জীবিকার গতিশীল ধারার রুদ্ধতাকে কতটুকু বিপর্যস্ত করবে, তা সহজে অনুমেয়। পরিত্রাণের উদ্দেশ্যে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণে সময়ক্ষেপণের কোনো সুযোগ নেই।


বাচনিক কোনো আলাপ-আলোচনা-সম্মেলন-প্রস্তাব গ্রহণ-বর্জনের অমূলক চিন্তাধারা পরিহার করে দ্রুততার সঙ্গে অর্থবহ কর্মকৌশলের যথার্থ বাস্তবায়ন অপরিহার্য। অন্যথায় বিশ্ব বিধ্বংসী এই সুনামি থেকে মানবজাতিকে আড়াল করার কোনো পন্থাই বিকল্প হতে পারে না।


বিশ্বব্যাপী অতিবৃষ্টি, অনাবৃষ্টি, খরা, বন্যা, ঘূর্ণিঝড়সহ নানা প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণ হিসাবে জলবায়ু পরিবর্তনকেই দায়ী করা হচ্ছে। দীর্ঘদিন ধরে জলবায়ু পরিবর্তন সমগ্র বিশ্বের সমস্যা হলেও বাংলাদেশের মতো দরিদ্র দেশগুলো এর ভয়াবহ পরিণতি ভোগ করছে সবচেয়ে বেশি।


বাংলাদেশসহ উন্নয়নশীল দেশগুলো জলবায়ু পরিবর্তনজনিত অভিঘাতে প্রচণ্ড লণ্ডভণ্ড। বর্তমানে বাংলাদেশ বৈশ্বিক উষ্ণতা বৃদ্ধি ও বিভিন্ন প্রাকৃতিক দুর্যোগের ফলে পৃথিবীর অন্যতম ঝুঁকিপূর্ণ দেশের তালিকায় স্থান করে নিয়েছে। দেশের সমগ্র জনগোষ্ঠীর জীবনপ্রবাহসহ যাবতীয় উন্নয়ন উদ্যোগ তথা দারিদ্র্য দূরীকরণ, দুর্যোগ প্রস্তুতি ও ব্যবস্থাপনা, কৃষি, খাদ্য নিরাপত্তা, পানি সরবরাহ, পয়ঃনিষ্কাশন ও জনস্বাস্থ্য, পল্লি উন্নয়ন ইত্যাদি কর্মযজ্ঞ ব্যাপকভাবে বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। আন্তর্জাতিক গবেষণা প্রতিষ্ঠান জার্মান ওয়াচের ২০১০ সালে প্রকাশিত গ্লোবাল ক্লাইমেট রিস্ক ইনডেক্স অনুযায়ী জলবায়ু পরিবর্তনজনিত কারণে ক্ষতির বিচারে শীর্ষ ১০টি ক্ষতিগ্রস্ত দেশের মধ্যে বাংলাদেশ প্রথম স্থানে রয়েছে।


বাংলাদেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চল জলবায়ু পরিবর্তনের ব্যাপক প্রভাবে প্রতিনিয়ত দুর্যোগের সম্মুখীন হচ্ছে। বঙ্গোপসাগরের উপকূলীয় অঞ্চলগুলোতে সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বৃদ্ধি সংকটকে আরও বেশি জোরালো করছে। পানির লবণাক্ততা বেড়ে যাওয়াও উপকূলের অনেক এলাকার প্রধান সমস্যা হিসাবে প্রতীয়মান। মাত্রাতিরিক্ত গরম জলবায়ু পরিবর্তনের অন্য ধরনের প্রভাব। এতে ফসলি জমি নষ্ট হয়ে মানুষের জীবন-জীবিকা সংকটাপন্ন হচ্ছে। প্রতি পাঁচ বছরে একবার খরার কারণে বাংলাদেশের মানুষ বিশেষ করে উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলে বসবাসকারীরাই সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। গবেষণায় দেশের উপকূলীয় ও অভ্যন্তরীণ অঞ্চলগুলোতে তাপমাত্রা ও বৃষ্টিপাতের পরিবর্তনশীলতা ব্যাপক বলে উল্লেখ করা হয়েছে। গত ৫০ বছরে (১৯৬৮-২০১৮) দেশে দিনে ও রাতে উষ্ণতার হার বেড়েছে। একইভাবে দিন ও রাতের শীতলতা ভীষণ হ্রাস পেয়েছে। অর্থাৎ পাঁচ দশকে উষ্ণ দিনের সংখ্যা উপকূলীয় অঞ্চলগুলোয় প্রতি বছরে শূন্য দশমিক ৩৯৪ দিন এবং দেশের অভ্যন্তরভাগে শূন্য দশমিক ১৫ দিন করে বেড়েছে। এ ছাড়াও প্রতিবছর উষ্ণ দিনের সময়ও শূন্য দশমিক ৫০৭ দিন করে বৃদ্ধি পাচ্ছে। দুই দশক ধরে বজ্রপাত বাংলাদেশে নতুন দুর্যোগ হিসাবে আবির্ভূত হয়েছে। বৈশ্বিক উষ্ণায়নের সঙ্গে বজ্রপাত সম্পর্কিত গবেষণা অনুসারে বিশ্বের সর্বত্র বজ্রপাত সমহারে বাড়ছে না, তবে আঞ্চলিক ক্ষেত্রে বজ্রপাতের ওপর উষ্ণায়নের প্রভাব সুস্পষ্ট। অর্থাৎ সারা বিশ্বে না বাড়লেও দক্ষিণ এশিয়া বা ক্রান্তীয় অঞ্চলের অনেক দেশে বজ্রপাতের সংখ্যা ধীরে ধীরে বাড়ছে। গণমাধ্যম সূত্রমতে, ২০১৩-২০ সাল পর্যন্ত দেশে বজ্রপাতে মৃতের সংখ্যা ১ হাজার ৮৭৮ জন; যাদের ৭২ শতাংশই কৃষক। বাংলাদেশ সরকার ২০১৬ সালে এটিকে প্রাকৃতিক দুর্যোগ হিসাবে ঘোষণা দিয়েছে।

সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ুন
ট্রেন্ডিং

সংবাদ সূত্র

News

The Largest News Aggregator
in Bengali Language

Email: [email protected]

Follow us