পুঁজিবাদের মূল কথাই হচ্ছে মুনাফা বা লাভ। মারি-মড়ক-যুদ্ধ থেকেও পুঁজিবাদ মুনাফাই পেতে চায়। আর মহামারির সঙ্গে পুঁজিবাদের নাড়ির যোগ তার জন্ম থেকেই। মহামারির হাত ধরেই পুঁজিবাদের জন্ম হয়েছে বলেও অনেকে মত প্রকাশ করেন। ইতিহাস সাক্ষ্য দেয়, ইউরোপ বারবার মহামারির আক্রমণে বিপর্যস্ত হয়েছে। চতুর্দশ শতকের আলোচিত মহামারি ‘গ্রেট প্লেগ’ বা ‘ব্ল্যাক ডেথ’, তাতে ইংল্যান্ডের জনসংখ্যার তিন ভাগের এক ভাগ মারা যায়। আর সেই বিভীষিকার ক্ষণেই সেখানে পয়দা হয় পুঁজিবাদ।
এত লোক মারা যাওয়ায় সেখানে একদিকে সামন্তপ্রভুদের ভূমিদাসের সংখ্যা কমে যায়, অনেক শ্রমজীবী ‘মুক্ত’ হয়ে এদিক-ওদিক চলে যায়, আর কাজের মানুষ কম মেলায় মজুরিও কিছুটা বেড়ে গেল। অন্যদিকে অনেক জোতদার মারা যাওয়ায় প্রচুর জমি খালি পড়ে থাকে। তখন এগিয়ে আসে যাদের হাতে টাকা ছিল তারা এবং বড় বড় জমি নিয়ে, বেশি বেশি মজুরি দিয়ে অনেক মজুর নিয়োগ করে কৃষিতে পুঁজিবাদের বীজ বপন করে। শুধু তা-ই নয়, এ সময় থেকে বড় বড় সব ‘কোম্পানি’ও তৈরি হয়, যে কোম্পানি বা করপোরেট সংস্থাগুলো পরবর্তীকালে পুঁজিবাদকে দুনিয়াময় ছড়িয়ে দিতে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।