মেয়েটি ‘সুন্দরী’ তাই

মানবজমিন প্রকাশিত: ১৫ জানুয়ারি ২০২২, ০০:০০

হঠাৎ ফোন। আপু ঢাকায় হোস্টেলে থাকা-খাওয়ার খরচ কতো? স্বাভাবিকভাবে উত্তর দেয়ার পর মেয়েটি বললো, ইচ্ছা ছিল না ঢাকা গিয়ে পড়ার। কিন্তু উপায় নাই। মেয়েটির নাম ফারজানা তানিয়া। সবেমাত্র এসএসসি’র গণ্ডি পেরিয়েছে। স্থানীয় কলেজে ভর্তির ইচ্ছা বা আকাঙ্ক্ষা থাকলেও ভর্তি হতে হচ্ছে রাজধানীর এক কলেজে। সমস্যা একটাই মেয়েটি ‘সুন্দরী’। এলাকায় তাকে নানা অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতির মধ্য দিয়ে যেতে হয়। বখাটেদের উত্ত্যক্তের পাশাপাশি বিয়েমুখী নানা কথাবার্তা তো আছেই।সমাজে মেয়েদের সৌন্দর্য নিয়ে প্রতিনিয়তই ভিন্ন ধরনের মতামত রয়েছে। মেয়ে কালো বিয়ে করবে কে? মেয়ে বেশি সুন্দরী এখুনি বিয়ে দিয়ে দাও। সবগুলোর সঙ্গেই আমরা বেশ পরিচিত। কিন্তু তানিয়ার ক্ষেত্রে, মেয়ে বেশি সুন্দরী ঢাকায় পড়তে পাঠাও। আচ্ছা, মেয়েটিকে যে রাজধানীতে পড়তে পাঠানো হচ্ছে, রাজধানীতেও সে নিরাপদ তো?সমাজ সবসময় শারীরিক সৌন্দর্যকে একটি নির্দিষ্ট পরিমণ্ডলে সংজ্ঞায়িত করে। যেখানে গায়ের রঙ ফর্সা, লম্বা চুল, সুন্দর হাসি ইত্যাদির অধিকারীকেই বোঝানো হয়। বাহ্যিক সৌন্দর্য দেখেই যে কাউকে আমরা সুন্দরী কিংবা অসুন্দরী বলে ফেলি। ফলে হীনম্মন্যতায় ভোগেন অনেকেই। ১৪টি দেশে স্বনামধন্য পারসোনাল কেয়ার ব্র্যান্ড ডাভ পরিচালিত এক গবেষণা প্রতিবেদন ‘ডাভ গ্লোবাল গার্লস বিউটি অ্যান্ড কনফিডেন্স রিপোর্ট’ শীর্ষক গবেষণা প্রতিবেদনের তথ্যানুযায়ী বিশ্বের প্রায় ৫৪ ভাগ মেয়েই নিজের শারীরিক সৌন্দর্য নিয়ে সব সময় হীনম্মন্যতায় ভোগেন। নিজের সৌন্দর্য নিয়ে দুশ্চিন্তার কারণে প্রতি ১০ জন মেয়ের মধ্যে ৮ জনই পারিবারিক ও সামাজিক বিভিন্ন কর্মকাণ্ডে অংশগ্রহণ করা থেকে বিরত থাকেন।সিনেমা জগতে সর্বক্ষেত্রে নারীদের আকর্ষণীয় করে তোলার আপ্রাণ চেষ্টা করা হয়। নারীদের কীভাবে ফুটিয়ে তুললে দর্শকরা উৎফুল্ল হবে সেদিকেই নজর দেয়া হয়। আর এভাবেই পিছু হটে ‘অল্প সুন্দরী মেয়েরা’। তারা মানসিকভাবে অল্পতেই ভেঙে পড়ে। ব্যাকুল হয়ে পড়ে নিজেকে সুন্দর করার প্রচেষ্টায়। একটা মেয়ে সুন্দরী হলেও তাকে যেমন সমাজে নানামুখী পরিস্থিতির মধ্যে দিয়ে যেতে হয়। ঠিক তেমন গায়ের রঙ কালো কিংবা দেখতে ‘অসুন্দর’ হলে তারও যেন কথা শোনার শেষ নেই। এই বাছবিচার থেকেই শুরু বিভেদের। ছোট থেকেই মেয়েদের মনে এ ধারণা দিয়ে দেয়া হয় যে, তার ‘সুন্দরী’ হওয়াটা বাঞ্ছনীয়। বিভিন্ন মডেল বা অভিনেত্রী যুক্ত করার আগেও তার শারীরিক গঠন মূল ভূমিকা পালন করে। তুলনামূলক উচ্চতা একটু কম হলেই তাকে খুব আপনজনদের দ্বারাও নানা কটূক্তির শিকার হতে হয়। এ যেন মানসিকভাবে আরও দুশ্চিন্তাগ্রস্ত করে তোলে। হতাশা আর বিষণ্নতায় ভরিয়ে তোলে জীবনকে। কারণ এটা ওই মেয়ের বা তার বাবা-মায়ের কোনো দোষ নয়। কিন্তু আমাদের সমাজ যে সেদিকে একদমই সচেতন নয়। সৌন্দর্যকে প্রাধান্য দিয়ে গায়ক মাইকেল জ্যাকসন তার কালো গায়ের রঙ ফর্সা করার জন্য লেজার ট্রিটমেন্ট এবং প্লাস্টিক সার্জারির সাহায্য নিয়েছেন জীবনভর। কিন্তু তবুও যেন পুরুষদের জন্য সৌন্দর্যটা গুরুত্বহীন। সেগুলো নিয়ে অধিকাংশরই কখনো মাথা ব্যথাই নেই। তবে এই একই কথা নারীর ক্ষেত্রে কেন নয়। তবে এই সৌন্দর্য ভাবনা মানুষকে শুধু ভাবতেই শেখায়। সমাধান দিতে পারে খুব কম ক্ষেত্রে। তাই যতটুকু যে যেমন ততটুকুতেই সুখী হওয়া প্রয়োজন। তারই উদাহরণ লিজি ভেলাসকুয়েজ। বিরল এক কনজেনিটাল রোগে আক্রান্ত লিজির শরীরে নেই কোনো ফ্যাট টিস্যু। ১৭ বছর বয়সে ইউটিউবে বিশ্বের কুৎসিততম মহিলা তকমা দেয়া হয় তাকে। কিন্তু তাতে দমে যাননি লিজি। শেষ পর্যন্ত তিনি লেখিকা, মোটিভেশনাল স্পিকার এবং অ্যান্টি-বুলিং অ্যাক্টিভিস্ট হয়েছেন।
সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ুন

ট্রেন্ডিং

সংবাদ সূত্র

News

The Largest News Aggregator
in Bengali Language

Email: [email protected]

Follow us