বৈষম্য দূর করা জরুরি

দেশ রূপান্তর বদরুল হাসান প্রকাশিত: ১২ জানুয়ারি ২০২২, ০৮:৩৭

অসাম্য ও বৈষম্যের বিরুদ্ধে বাঙালির সংগ্রাম দীর্ঘদিনের। বলা চলে বৈষম্যের বিরুদ্ধে সংগ্রাম করতে গিয়ে বাঙালি জাতীয়তাবাদের উন্মেষ ও মুক্তিযুদ্ধের সূচনা। ১৯৬৬ সালে বঙ্গবন্ধু উপস্থাপিত ছয় দফা ছিল বাঙালির ম্যাগনা কার্টা, যার মর্মবাণী ছিল এই বৈষম্য ও বঞ্চনার শেকল ছিন্ন করা। দেশ স্বাধীন হওয়ার পর বৈষম্যের বিরুদ্ধে সেই অবস্থানকে প্রাতিষ্ঠানিকীকরণ করা হয়। সংবিধানের অনুচ্ছেদ ১৯(২)-এ ঘোষণা করা হয় : ‘মানুষে মানুষে সামাজিক ও অর্থনৈতিক অসাম্য বিলোপ করিবার জন্য, নাগরিকদের মধ্যে সম্পদের সুষম বণ্টন নিশ্চিত করিবার জন্য এবং প্রজাতন্ত্রের সর্বত্র অর্থনৈতিক উন্নয়নের সমান স্তর অর্জনের উদ্দেশ্যে সুষম সুযোগ-সুবিধাদান নিশ্চিত করিবার জন্য রাষ্ট্র কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করিবেন।’ স্বাধীনতার ৫০ বছরে দেশের অর্জন অসামান্য; জিডিপির আকার ৪১১ বিলিয়ন ও মাথাপিছু আয় ২৫৫৪ মার্কিন ডলারে উন্নীত হয়েছে, বার্ষিক খাদ্য উৎপাদন ৩.৭০ কোটি মে. টন অতিক্রম করেছে, দারিদ্র্যের হার ২০.৫ শতাংশে নেমে এসেছে, গড় আয়ু ৭২.৮ বছরে পৌঁছে গেছে, শিক্ষার হার ৭৫.২ শতাংশে উন্নীত হয়েছে। তাছাড়া দেশের ভবিষ্যৎ সম্পর্কে আছে বেশ কিছু নামিদামি আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠানের উজ্জ্বল প্রাক্কলন। প্রাইসওয়াটারহাউস কুপার্সের প্রাক্কলন অনুযায়ী বাংলাদেশ ২০৩০ সালে হবে ২৮তম বৃহত্তম অর্থনীতির দেশ এবং সেন্টার ফর ইকোনমিক্স অ্যান্ড বিজনেস রিসার্চ-এর মতে ২০৩৬ সালে হতে চলেছে ২৪তম বৃহত্তম অর্থনীতির দেশ।


এতসব সাফল্যগাথার মধ্যে চাঁদের কলঙ্কের মতো বৈষম্য এখন মাথাব্যথার কারণ হয়ে পড়েছে। কোনো দেশের মানুষের মধ্যে বিরাজমান আয় ও সম্পদ বৈষম্যের মাত্রা পরিমাপের জন্য ইতালীয় পরিসংখ্যানবিদ ঈড়ৎৎধফড় এরহর একটি গুণাঙ্ক প্রবর্তন করেন, যার মান ০ থেকে ১ পর্যন্ত বিস্তৃত। গিনি কোয়েফিসিয়েন্ট বা ‘গিনি সহগ’ নামে খ্যাত এই স্কেলে মান শূন্য অর্থ দেশে মানুষে মানুষে কোনো বৈষম্য নেই; আর মান ১ অর্থ পূর্ণমাত্রায় বৈষম্য বিরাজমান; সব সম্পদ ও আয় একজন বা মুষ্টিমেয় কয়েকজনের পূর্ণ দখলে। ১৯৭৩-৭৪ সালে দেশে এই কোয়েফিসিয়েন্টের মান ছিল ০.৩৬, এরপর ১৯৯১-৯২ সালে তা ধীরে ধীরে হয়ে যায় ০.৩৯। কিন্তু তারপর থেকে শুরু হয় উলম্ফন; ১৯৯৫-৯৬ সালে এর মান হয়ে যায় ০.৪৩ এবং ২০০৫ সালে তা হয় ০.৪৬। এরপর ২০১০ সাল পর্যন্ত অবশ্য এই মানের আর উল্লেখযোগ্য কোনো পরিবর্তন হয়নি, তবে ২০১৬ সালে গিয়ে মান দাঁড়ায় ০.৪৮২। কভিডে নিম্নআয়ের মানুষ, ক্ষুদ্র ও স্বল্প পুঁজির ব্যবসায়ী এবং অনানুষ্ঠানিক খাতের মানুষজনের আয় ও সম্পদ কমে গিয়েছে সবচেয়ে বেশি, আর ধনীদের অনেকের আয় বেড়ে গিয়েছে, তারা আবার প্রণোদনাও পেয়েছেন প্যাকেজে প্যাকেজে; কিন্তু ছোটরা তেমনটা নয়। ফলে বড় মাছ যেমন ছোট মাছ খেয়ে ফেলে, এখন সেই অবস্থা সৃষ্টি হয়ে গেছে। তাই বর্তমান প্রেক্ষাপটে এই গুণাঙ্কের মান ০.৫ এর কাছাকাছি যাওয়া খুবই স্বাভাবিক। এর অর্থ আমরা চরম বৈষম্যের আবহে পদার্পণ করে ফেলেছি; বিভক্ত সমাজ ও সামাজিক অস্থিরতা যার পরিণতি।

সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ুন
ট্রেন্ডিং

সংবাদ সূত্র

News

The Largest News Aggregator
in Bengali Language

Email: [email protected]

Follow us