বিনিয়োগের নতুন ক্ষেত্র খোঁজার তাগিদ সালমান এফ রহমানের

মানবজমিন প্রকাশিত: ২২ নভেম্বর ২০২১, ০০:০০

প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ বিষয়ক উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান বলেছেন, বাংলাদেশের টেকসই অর্থনীতির জন্য নতুন নতুন খাতে বিনিয়োগ বাড়াতে হবে। এর মধ্যে অ্যাগ্রো প্রসেসিং শিল্প  গ্রিন ফাইন্যান্সিং ও প্রযুক্তি খাত। আগামী দিনের চালিকা শক্তি হিসেবে এই তিন ফ্যাক্টরের দিকেই যেতে হবে।রোববার ফরেন ইনভেস্টর চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (এফআইসিসিআই) আয়োজিত ‘সমৃদ্ধি ও অগ্রযাত্রা বাংলাদেশ’ শীর্ষক আলোচনা সভায় এ কথা বলেন তিনি। রাজধানীর শেরাটন হোটেলে স্বাধীনতার ৫০ বছর ও বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী উপলক্ষে এ আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়।এফআইসিসিআই’র প্রেসিডেন্ট রূপালী হক চৌধুরীর সভাপতিত্বে সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান। আলোচনায় অংশ নেন পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম, বিডা’র নির্বাহী চেয়ারম্যান সিরাজুল ইসলাম, মেট্রোপলিটন চেম্বার অব কমার্স ইন্ডাস্ট্রির প্রেসিডেন্ট নিহাদ কবির, এইচএসবিসি’র বাংলাদেশের সিইও মাহবুব-উর রহমান, জাপানের রাষ্ট্রদূত ইতো নাওকি, নেদারল্যান্ডসের সহকারী মিশন প্রধান পাউলা রোজ স্কিনডিলার, কোরিয়ার রাষ্ট্রদূত লি জ্যাংক কেনু এবং এ্যাপেক্স ফুটওয়্যার লিমিটেডের এমডি সৈয়দ নাসিম মঞ্জুর।অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন এফআইসিসিআই’র সহ-সভাপতি ও সিঙ্গার বাংলাদেশের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এমএইচএম ফাইরুজ, নির্বাহী সদস্য ও স্ট্যান্ডার্ড চ্যার্টার্ড ব্যাংকের সিইও নাসের এজাজ বিজয়, নির্বাহী পরিচালক টিআইএম নুরুল কবির, গ্রামীণফোন লিমিটেডের সিইও ইয়াসির আজমান, বৃটিশ আমেরিকান টোব্যাকোর সিইও শেহজাদ মুনিম প্রমুখ। এফআইসিসিআই’র পক্ষে গবেষণা প্রতিবেদনটি তৈরি করে পলিসি এক্সচেঞ্জ বাংলাদেশ।সালমান এফ রহমান বলেন, নতুন বাংলাদেশ গড়ার সময় এখনই। বাণিজ্য সংগঠনগুলো এ জন্য নিরলসভাবে কাজ করছে। অর্থাৎ তারা অ্যাডভোকেসির কাজ করছে। এখন প্রয়োজন টেকসই অর্থনীতির জন্য আমাদের নতুন নতুন খাতে বিনিয়োগ বাড়ানো। এর মধ্যে অ্যাগ্রো প্রসেসিং শিল্প, টেকসই গ্রিন ফাইন্যান্সিং ও প্রযুক্তি খাতের দিকে যেতে হবে। উপদেষ্টার মতে, এই খাতগুলো দেশের অর্থনৈতিক লক্ষ্য পূরণে সক্ষম। এতে বিপুল সংখ্যক তরুণ ও দক্ষ ব্যক্তির কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হবে। রপ্তানি উপার্জন বৃদ্ধি হবে। তিনি বলেন, আগামীতে প্রযুক্তির ব্যবহার নিশ্চিত করতে বর্তমানে ডিজিটাল অবকাঠামো তৈরি হয়েছে। এখন এই সুযোগ কাজে লাগিয়ে ফসল ঘরে তুলতে হবে। ইতিমধ্যেই কৃষিকেই আমরা আমাদের শিল্প হিসেবে গড়ে তুলছি। তিনি বলেন, পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র বাংলাদেশ সম্পর্কে ধারণা বদলে দিয়েছে। এ ছাড়া আমরা গ্যাসভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের দিকে ধাবিত হচ্ছি। যা সামনে হাইড্রোজেন বিদ্যুৎকেন্দ্রে রূপান্তরিত হবে। মাতারবাড়ি আর রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র এগুলোর উৎকৃষ্ট উদাহরণ। তিনি বলেন, অর্থনৈতিক উন্নয়নের ফলে গ্রামীণ অর্থনীতি প্রসার লাভ করছে। এলডিসির চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় বিভিন্ন উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। মধ্য আয়ের ফাঁদ থেকে মুক্ত হতে বিভিন্ন পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করা হচ্ছে।পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান বলেন, নিজেদের অর্থায়নে পদ্মা সেতু করার মাধ্যমে ১৬ কোটি মানুষের স্বপ্নপূরণ হয়েছে। একইসঙ্গে বিশ্ব দরবারে বাংলাদেশের সক্ষমতাও প্রমাণিত হয়েছে। যার ফলে বিশ্ব মোড়লরা বাংলাদেশকে বর্তমানে অন্যভাবে মূল্যায়ন করে। প্রধানমন্ত্রীর দূরদর্শী নেতৃত্বে বিশ্বদরবারে বাংলাদেশের মাথা উঁচু হয়েছে। তিনি বলেন, বর্তমানে আমরা বাংলাদেশে বিনিয়োগের পরিবেশ তৈরি করেছি। এখন যে কেউ বিনিয়োগের জন্য আসতে পারে। আমরা তাদের স্বাগত জানাবো। রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র ও পায়রা সমুদ্র বন্দরসহ মেগা প্রকল্পগুলো আগামীর বদলে যাওয়া বাংলাদেশের চিত্র। প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে এগিয়ে চলছি আমরা। এখন শুধু কাজ করে যেতে হবে। বিদেশি বিনিয়োগকারীদের প্রতি পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, আমরা একসঙ্গে কাজ করতে চাই। আমাদেরকে আমাদের মানদণ্ডে বিচার করুন। অন্যদের মানদণ্ডে আমাদের বিচার করবেন না। আমরা সবাই একসঙ্গে কাজ করতে চাই।অনুষ্ঠানে পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম বলেন, পোশাক খাত এদেশকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে। বর্তমানে জাপান, চীন, ভারতে প্রচুর রপ্তানির সম্ভাবনা রয়েছে। এটিকে কাজে লাগাতে হবে। সেইসঙ্গে জিএসপি প্লাস সুবিধা পাওয়ার প্রচেষ্টা অব্যাহত আছে।বিডা’র নির্বাহী চেয়ারম্যান সিরাজুল ইসলাম বলেন, ডুয়িং বিজনেস পরিবেশ উন্নয়নে কাজ চলছে। বিশ্বব্যাংক এ নির্দেশক সংক্রান্ত প্রতিবেদন প্রকাশ বন্ধ করলেও বাংলাদেশ নিজের উদ্যোগে পরিবেশ উন্নয়নে কাজ করে চলছে। ওয়ান স্টপ সার্ভিস সেন্টারের মাধ্যমে বিনিয়োগকারীদের সেবা দেয়া হচ্ছে। মেট্রোপলিটন চেম্বার অব কমার্স ইন্ডাস্ট্রির প্রেসিডেন্ট নিহাদ কবির বলেন, বেসরকারি খাত শিল্প বহুমুখীকরণে বিশেষ ভূমিকা রেখেছে। নীতিমালা অনুকূলে থাকায় এটা করা সম্ভব হয়েছে। থ্রি গ্রোথ ড্রাইভার্স-বিদেশি বিনিয়োগের সুযোগ বাড়িয়ে বাংলাদেশের অর্থনীতিকে এগিয়ে নিয়ে যেতে কৃষি ব্যবসা, ডিজিটাল অর্থনীতি ও সবুজ অর্থায়নের ভূমিকা রাখবে বলেও বক্তারা উল্লেখ করেন। বেশকিছু বছর ধরে বাংলাদেশকে একটি উন্নত ও সম্পদশালী দেশ হিসেবে গড়ে তোলার জন্য কাজ করছে সরকার। সরকারের বিভিন্ন পরিকল্পনার ফল হিসেবে দেশে কর্মসংস্থানের সুযোগ, বিদেশি বিনিয়োগ ও অন্যান্য ব্যবসায়িক সুযোগ বাড়ছে বলেও জানান তারা।এফআইসিসিআই সভাপতি রূপালী হক চৌধুরী বলেন, বিদেশি বিনিয়োগ বৃদ্ধি করা এবং সরকারের সঙ্গে যোগাযোগ বাড়ানোর জন্য থ্রি গ্রোথ ড্রাইভার্সকে কাজে লাগাতে চায় এফআইসিসিআই। এই লক্ষ্য অর্জনের জন্য বাংলাদেশকে বিদেশি বিনিয়োগ বাড়ানো, রাজস্ব সংহতি বাড়ানো ও অর্থনৈতিক বৈচিত্র্যসহ কিছু খাতে আরও উন্নতি করতে হবে।অষ্টম পঞ্চমবার্ষিক পরিকল্পনা অনুযায়ী ২০২৫ সালের মধ্যে বাংলাদেশে বিদেশি বিনিয়োগ ৬ গুণ বৃদ্ধি পাবে। একই সঙ্গে রপ্তানি বাড়বে ৬৬ শতাংশ এবং জিডিপিতে বেসরকারি বিনিয়োগ ১৫ শতাংশ বৃদ্ধি পাবে বলে জানিয়েছে বিদেশি বিনিয়োগকারীদের শীর্ষ সংগঠন এফআইসিসিআই। অনুষ্ঠানে উন্নয়নের নতুন চাবিকাঠি বিষয়ে একটি গবেষণা প্রতিবেদন উন্মোচন করা হয়। এতে বলা হয়, আরও বেশি পরিমাণে বিদেশি বিনিয়োগ আকৃষ্ট করার জন্য ব্যবসাবান্ধব নীতি ও সহায়তার ব্যবস্থা করা প্রয়োজন।
সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ুন
ট্রেন্ডিং

সংবাদ সূত্র

News

The Largest News Aggregator
in Bengali Language

Email: [email protected]

Follow us