বিএনপি নিজেই নিজের সঙ্গে লড়াই করছে

মানবজমিন প্রকাশিত: ২৬ সেপ্টেম্বর ২০২১, ০০:০০

‘বিএনপি অন্ধকারে তলিয়ে গেছে। তারা আজ কোথাও নেই।’ গত রোববার ১৯শে সেপ্টেস্বর এক বক্তৃতায় নৌ-পরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী এমন মন্তব্য করেন। এর আগে ১২ই আগস্ট আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক, সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, ‘বিএনপি মিডিয়ার কল্যাণে বেঁচে আছে। বিএনপি’র রাজনীতি এখন লাইফ সাপোর্টে আছে। দলটির নেতারা জনমানুষের আতঙ্কে রয়েছে। বিদেশ থেকে ইথারে যে সিদ্ধান্ত ভেসে আসে, ঢাকায় বসে মিডিয়ার মাধ্যমে বিএনপি নেতারা তারই পুনরাবৃত্তি করছেন মাত্র, ফরমায়েশ কার্যকর করছেন। তাদের সম্মিলিত সিদ্ধান্ত নেয়ার কোনো ক্ষমতা নেই।’ আরেক বক্তব্যে তিনি বলেছেন, ‘আন্দোলনের ডাক দিয়ে বিএনপি নেতারাই ঝাঁপ বন্ধ করে ঘরে অবস্থান নেন। হিন্দি সিরিয়াল দেখে আর জানালা দিয়ে উঁকিঝুঁকি মেরে পুলিশের গতিবিধি লক্ষ্য করেন। ১২ বছর ধরে বিএনপি’র কথিত আন্দোলনের ডাক রাজপথে কোনো কম্পন তুলতে পারেনি। জনগণ মনে করে, এসব হাঁকডাক আষাঢ়ে গল্পের মতো। ফেসবুক আর গণমাধ্যমে যতটা গর্জে, বাস্তবে রাজপথে ততটা বর্ষে না।এ ধরনের কথাবার্তা অবশ্য নতুন নয়। আওয়ামী লীগের গুরুত্বপূর্ণ নেতাদের মুখ থেকে হরহামেশাই এমন সব কথা শোনা যায়। তবে আওয়ামী লীগ যেহেতু বিএনপি’র প্রধান রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ সুতরাং বাংলাদেশের রাজনৈতিক সংস্কৃতি অনুযায়ী দলটির নেতারা যে বিএনপি’র বিরুদ্ধে এমন ভাষায় কথা বলবেন সেটা অপ্রত্যাশিত কিছু নয়। যেটা অপ্রত্যাশিত তা হলো বিএনপি’র একটি বড় অংশের নেতাকর্মী কর্তৃক এসব বক্তব্যকে সমর্থন করা। অন্তত কেন্দ্র থেকে তৃণমূল পর্যন্ত দলটির অগুণিত নেতাকর্মীর সঙ্গে কথা বলে তাই মনে হয়। বলা হয়ে থাকে, রাজনীতিতে সত্য-মিথ্যা যাচাইয়ের চেয়ে ‘পাবলিক পারসেপশন’ বা জনমত বেশি গুরুত্বপূর্ণ। সাধারণ মানুষের সঙ্গে এমনকি বিএনপি যাদের দলটির মূল শক্তি বলে মনে করে সেই ‘নীরব সমর্থক’দের সঙ্গে কথা বলেও মনে হয়, তারা উপরোক্ত কথাগুলোই বিশ্বাস করেন। বিএনপি’র অনেক নেতাকর্মী অবশ্য যুক্তি দেখান এই বলে যে, ‘বিএনপি দীর্ঘদিন ক্ষমতার বাইরে বলে এখন অনেকটাই দুর্বল। আর কে না জানে দুর্বলের সমালোচনা করা সবচেয়ে সহজ আর ঝুঁকিমুক্ত কাজ।’ কিন্তু তাদের বেশির ভাগই আবার নাম প্রকাশ না করার শর্তে স্বীকার করেন যে, বিএনপি এখন বিভ্রান্ত। একের পর এক ভুল সিদ্ধান্ত নিচ্ছে তাদের প্রিয় দল। পা দিচ্ছে ষড়যন্ত্রে। সিদ্ধান্ত নিতে খাচ্ছে হিমশিম। ‘উভয়কূল রক্ষা্থ’ করতে গিয়ে কিছুই করতে পারছে না। বিএনপি কি ধরনের ভুল করছে বা কেন নিজ দলকে বিভ্রান্ত বলছে জানতে চাইলে তারা বিভিন্ন জবাব দেন। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো-নির্বাচনে অংশগ্রহণ করার বিষয় বারবার ভুল সিদ্ধান্ত নিচ্ছে বিএনপি। ২০১৪ সালের নির্বাচনে অংশগ্রহণ করা উচিত ছিল বিএনপি’র, গেলে ইতিবাচক ফল আসতো। কিন্তু বিএনপি তা বয়কট করে। অন্যদিকে, ২০১৮ সালের নির্বাচনে অংশগ্রহণ করা উচিত ছিল না বিএনপি’র। বিএনপি সেটায় গিয়ে সরকারকে একপ্রকার বৈধতা দিয়ে এসেছে। দলের চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি ছাড়া ২০১৮ সালের নির্বাচনে যাওয়া ঠিক হয়নি বিএনপি’র। নির্বাচনের আগে তার মুক্তি নিয়ে দরকষাকষির সুযোগও হাতছাড়া করেছে দলটি। বিগত জাতীয় নির্বাচনের দিন সকালেই দলের একজন শীর্ষ নেতা বলেছিলেন, নির্বাচন সুষ্ঠু হয়েছে। যা নিয়ে দলের নেতাকর্মী এবং ঐক্যফ্রন্টের নেতারাও তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখান। নির্বাচনের ফলাফল প্রত্যাখ্যান করলেও বিএনপি’র বিজয়ী প্রার্থীদের পরবর্তীতে সংসদে যোগ দেয়া নিয়ে ব্যাপক সমালোচনা রয়েছে। বিএনপি নেতৃত্বাধীন ২০দলীয় জোটে জামায়াতে ইসলামী কাগজে কলমে থাকলেও বাস্তবে কতোটা আছে তা নিয়ে দলীয় অবস্থান অস্পষ্ট রাখছে বিএনপি। দলটির অনেক শীর্ষ নেতা প্রকাশ্যেই জামায়াতকে জোটে না রাখার পক্ষে প্রকাশ্যে কথা বলছেন। ২০১৮’র নির্বাচনে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের ব্যানারে নির্বাচনে অংশ নেয় বিএনপি। কিন্তু ফ্রন্টের নেতাদের সঙ্গে বিএনপি’র হাতেগোনা কয়েকজন ছাড়া বাকি নেতাদের এখন দেখা যাচ্ছে না। এ বিষয়েও খোলাসা করে কিছু বলছে না বিএনপি। দলটির নেতাকর্মীদের একটি অংশ মনে করেন ঢাকায় তাইওয়ানের কনস্যুলেট খোলায় চীনের সঙ্গে বিএনপি’র ‘ঐতিহাসিক’ সম্পর্ক নষ্ট হয়েছে। বেশির ভাগ নেতাকর্মীই মনে করেন, চীনের প্রতিদ্বন্দ্বী নিকটতম প্রতিবেশী ভারত বিএনপিকে ক্ষমতায় দেখতে চায় না! সরকারি দলের শীর্ষ নেতারা যুক্তরাষ্ট্রের নীতি এবং দায়িত্বশীল ব্যক্তিদের নিয়ে বিভিন্ন সময় ‘তুচ্ছতাচ্ছিল্য’ করলেও সেগুলো কাজে লাগিয়ে যুক্তরাষ্ট্রকে নিজেদের পক্ষে আনতে পারে নি বিএনপি। দলের একটি বড় অংশের নেতাকর্মীই মনে করেন, বহির্বিশ্বে দলটি বন্ধুহীন। দলের নেতাকর্মী এবং সমর্থকদের একটি অংশ মনে করেন, বিএনপি নেতৃত্ব সংকটে ভুগছে। কারণ, খালেদা জিয়া অসুস্থ এবং ‘গৃহবন্দ্থি। আর তারেক জিয়া সুদূর যুক্তরাজ্যে। ঢাকার বাইরের বেশির ভাগ নেতাকর্মীই মনে করেন, রাজধানীতে সাংগঠনিকভাবে শক্তিশালী নয় বিএনপি। কারণ, ২০১৪ সালের নির্বাচনকে কেন্দ্র করে এবং ২০১৫ সালে সারা দেশে তুমুল আন্দোলন গড়ে তুললেও শুধু ঢাকার নেতারা রাস্তায় না নামার কারণে কাঙ্ক্ষিত ফল ঘরে তুলতে পারেনি বিএনপি। অনেকেই মনে করেন, প্রশাসনের কড়াকড়ির পাশাপাশি ‘সরাসরি জনগণের সঙ্গে সম্পৃক্ত’ এমন ইস্যুগুলোকে সামনে এনে আন্দোলন না করার কারণে বিএনপি আন্দোলনে জনসমর্থন পায়নি। বিএনপি’র একটা বড় অংশের সমর্থকরা মনে করেন, বিএনপি ক্ষমতায় এলে সরকারে নেতৃত্ব কে দেবেন তা খোলাসা করা উচিত দলটির। ২০১৮ সালের নির্বাচনের আগে কূটনীতিকদের অনেকেই এই প্রশ্ন করলেও তার জবাব দেয়নি দলটি। এতে মানুষও বিভ্রান্ত হয়েছে। তাছাড়া বিএনপি ক্ষমতায় গেলে কীভাবে দেশ চালাবে, কোন কোন দিক থেকে তারা ক্ষমতাসীন দলের ব্যতিক্রম হবে অর্থাৎ মানুষ কেন বিএনপিকে বেছে নেবে এসব প্রশ্নের সুনির্দিষ্ট উত্তর দিতে হবে দলটিকে। অনেকে মনে করেন, দলটির নামিদামি নেতাদের অনেকেই সরকারের সঙ্গে আঁতাত করে ব্যবসা-বাণিজ্য করছেন। ফলে আন্দোলনের ডাক দিলে তাদের আর রাজপথে পাওয়া যাচ্ছে না। সমপ্রতি গণমাধ্যমে এসেছে, বিএনপি’র যেসব নেতা আন্দোলনের নাম শুনলে বিদেশে চিকিৎসা নিতে যান তারা যেন আগেই চিকিৎসা সেরে ফেলেন এবং আন্দোলনের আগে যেন নেতাদের পাসপোর্ট জমা নেয়া হয়- সেজন্য খোদ বিএনপিরই অনেক নেতা হাইকমান্ডের কাছে দাবি জানিয়েছেন। দলটির অনেক নেতাকর্মী মনে করেন, বিএনপি’র নেতাকর্মী এবং সমর্থকরা যতটা সরকার এবং সরকারি দলের সমালোচনা করেন তারচেয়ে অনেক বেশি করেন নিজেদের সমালোচনা। দলের হাইকমান্ড বা শীর্ষ নেতাদের প্রকাশ্য সমালোচনা করা থেকে বিরত থাকা এবং তাদের নেতৃত্ব নিয়ে প্রশ্ন তোলা অনুচিত বলেই মত তাদের। অনেক নেতাকর্মী মনে করেন, খালেদা জিয়া ‘ঘরে বন্দি’ এবং তারেক রহমান দেশ থেকে অনেক দূরে বলে তারেকের স্ত্রী জোবায়দা রহমানকে দেশে এনে দলের হাল ধরানো উচিত। তারা মনে করেন, জোবায়দা রহমান তারেকের স্ত্রী হওয়ার পাশাপাশি উচ্চশিক্ষিত, মেধাবী এবং ভদ্র। এ ছাড়া তার বাবা সাবেক নৌবাহিনীর প্রধান হলেও রাজনীতির মাঠেও সুনাম ধরে রেখেছিলেন। জোবায়দা চিকিৎসক হলেও রাজনীতির মাঠেও তার প্রতিভার স্বাক্ষর রাখবেন বলেই তাদের বিশ্বাস। বিগত নির্বাচনে মনোনয়ন এবং বিভিন্ন সময়ে দলের নানা স্তরের কমিটি গঠনের ক্ষেত্রে অর্থের লেনদেন হয়েছে এবং হচ্ছে বলে অনেকের অভিযোগ। এ ছাড়া হাইকমান্ডের ঘনিষ্ঠ হওয়ার সুবাদে অনেকেই বড় বড় পদ বাগিয়ে নিচ্ছেন বলেও অভিযোগ অনেকের। এতে একদিকে যেমন অযোগ্য লোকজন দলে ঢুকে নিজেদের প্রভাব বিস্তার করছেন, অন্যদিকে আন্দোলনের ডাক দিলে ওইসব নেতাদের দেখা পাওয়া যাচ্ছে না বলেও তারা মনে করেন। হাল আমলে দলের শীর্ষ নেতারা দেশের বিভিন্ন স্থানে দলের অবস্থান জানতে এবং নানা স্তরের কমিটি গঠনের ক্ষেত্রে বিভিন্ন স্তরের নেতাকর্মীদের সঙ্গে স্কাইপে সহ বিভিন্ন মাধ্যমে কথা বলছেন। কিন্তু এসবের মাধ্যমে অনেকক্ষেত্রেই দলের ‘চেইন অফ কমান্ড’ নষ্ট হচ্ছে বলেও অনেক নেতাকর্মীর অভিযোগ। এসব প্রশ্ন এবং বিভ্রান্তি নিয়ে দেশের বেশ কয়েকজন বুদ্ধিজীবী এবং সুশীল সমাজের প্রতিনিধির সঙ্গে কথা হয় মানবজমিনের। তাদের মধ্যে রয়েছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এমিরিটাস অধ্যাপক ড. সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী, সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন)-এর সম্পাদক বদিউল আলম মজুমদার, ইতিহাসবিদ ড. সৈয়দ আনোয়ার হোসেন, বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ ও অর্থনীতিবিদ ড. মাহবুব উল্লাহ এবং নিরাপত্তা বিশ্লেষক, সাবেক নির্বাচন কমিশনার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) এম সাখাওয়াত হোসেন। দেশে বিরোধী দলগুলোর বর্তমান অবস্থা কী জানতে চাইলে সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, ‘সংসদে এবং সংসদের বাইরে কোনো বিরোধী দল নেই। সরকারি দল যে একচ্ছত্র আধিপত্য ধরে রেখেছে তা মূলত আমলাতান্ত্রিক। পুলিশ বাহিনী, র?্যাব অর্থাৎ প্রশাসনকে ব্যবহার করে তারা এটা করছে; জনসমর্থনের উপর ভর করে নয়।’ রাজপথে বা  সংসদে কোথাও বিরোধী দল নেই উল্লেখ করে বদিউল আলম মজুমদার বলেন, ‘বিরোধী দল বলে এখন কিছু নেই। দেশের বিরোধী দলের যে শূন্যতা তা কোনোভাবেই বিএনপি পূরণ করতে পারছে না।’ ড. মাহবুব উল্লাহ বলেন, ‘এখন তো মিটিং মিছিল করা যাচ্ছে না। করলেও প্রশাসনের অনুমতি নিয়ে করতে হচ্ছে।’ সৈয়দ আনোয়ার হোসেন বলেন,  ‘দেশে এই মুহূর্তে কোনো রাজনীতি নেই। বহুদলীয় রাজনীতি নেই। সরকার একাই গোল দিচ্ছে। সরকার চায় না বিরোধী দল রাজনীতি করুক, যা বঙ্গবন্ধুর নীতি-আদর্শের বিরোধী।’ বিএনপি’র রাজনীতি এবং নেতৃত্ব বিষয়ে সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, ‘বিএনপিতে নেতৃত্ব নেই। লন্ডন থেকে নির্দেশনা দিয়ে দল চলছে। খালেদা জিয়াও অসুস্থ।’ বদিউল আলম মজুমদার বলেন, ‘বিরোধী দলের অভাবে গণতন্ত্র চরম সংকটে। এর জন্য প্রশাসন এবং অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের পক্ষপাতদুষ্ট আচরণ যেমন দায়ী তেমনি বিএনপি’র নেতৃত্বের ব্যর্থতাও বড় কারণ।’ ড. মাহবুব উল্লাহ বলেন, ‘বিএনপি যদি আন্দোলন করে সেক্ষেত্রে কী দাবিতে তা করবে এবং কীভাবে তা জনগণের কাছে পৌঁছে দেবে সেটা নিয়ে ভাবতে হবে। দলীয় ক্যাডারভিত্তিক আন্দোলন করা যাবে না। জনগণকে সম্পৃক্ত করতে হবে। বিএনপি হয়তো নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন বা নির্বাচন কমিশন পুনর্গঠনের দাবি করতে পারে। তবে এটাই শেষ কথা নয়। নির্বাচন যদি হয় তবে বিএনপি রাষ্ট্রক্ষমতায় গেলে কী করবে তাও জানাতে হবে। বিগত কয়েক বছরের নির্বাচনে বাইরের শক্তির হস্তক্ষেপ বা নাক গলানো দেখা গেছে। বহির্বিশ্বে বিএনপি’র মিত্র ঠিক করতে হবে। এ ছাড়া কিছুই হবে না। পুরনো ভাবনা নিয়ে বসে থাকলেও কিছু হবে না।’ সৈয়দ আনোয়ার হোসেন বলেন, ‘বিএনপি এবং জাতীয় পার্টিকে আমি কোনো রাজনৈতিক দল বলে মনে করি না। যদিও বিএনপি’র জনসমর্থন রয়েছে, কিন্তু দুটি দলেরই জন্ম সেনা ছাউনিতে। বিএনপি’র সংকট নেতৃত্ব ও সংগঠন।’ এম সাখাওয়াত হোসেন বলেন, ‘বিএনপির রাজনীতি নিয়ে আমার বলার কিছু নেই।’ নির্বাচন বিষয়ে সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, ‘সরকারি দল যাদের মনোনয়ন দিচ্ছে তারাই জয়ী হচ্ছে।’ উপনির্বাচনগুলোতে দেখা গেল, জাতীয় পার্টি বিক্রি হয়ে গেছে। ড. মাহবুব উল্লাহ বলেন, ‘বিগত কয়েক বছরের নির্বাচনে বাইরের শক্তির হস্তক্ষেপ বা নাক গলানো দেখা গেছে। কিছুদিন আগে মানবজমিনকে যুক্তরাষ্ট্রের ইলিনয় স্টেট ইউনিভার্সিটির রাজনীতি ও সরকার বিভাগের ডিস্টিংগুইশড প্রফেসর আলী রীয়াজ বলেছিলেন, ‘নির্বাচন সুষ্ঠু করতে নির্বাচন কমিশনের ভূমিকা আছে তবে সেটা কাগজে-কলমে, বাস্তবে নয়। কারণটা রাজনৈতিক। রাজনৈতিক সিদ্ধান্তের ওপর নির্ভর করছে কোন ধরনের নির্বাচন হবে।’ দেশের জনগণ নির্বাচনবিমুখ মন্তব্য করে সৈয়দ আনোয়ার হোসেন বলেন, ‘বাংলাদেশে নির্বাচন প্রশ্নবিদ্ধ হয়ে গেছে। নির্বাচন কমিশন বিতর্কিত। আসলে গাছেই সমস্যা। সার্চ কমিটির মাধ্যমে এই নির্বাচন কমিশন গঠিত হয়েছিল। তারা রাষ্ট্রপতির কাছে যাদের নাম দিয়েছিলেন সেটা গোপন রাখা হয়েছিল। কিন্তু গণতন্ত্রে তো গোপনীয়তা থাকতে পারে না। এটা স্বৈরতান্ত্রিক ব্যবস্থা। সংবিধান অনুযায়ী নির্বাচন কমিশন গঠিত হবে আইনের মাধ্যমে। সার্চ কমিটি বলে কিছু সংবিধানে নেই। এটা বেআইনি।’ বর্তমান রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে সরকারের ভূমিকা কী হতে পারে- এমন প্রশ্নের জবাবে বদিউল আলম মজুমদার বলেন, ‘দেশে গণতান্ত্রিক পরিবেশ, সুশাসন প্রতিষ্ঠা, মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বাস্তবায়ন করতে বিরোধী দল যাতে সঠিক ভূমিকা পালন করার সুযোগ পায় সেজন্য সরকারকে দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন করতে হবে। না হলে দেশ চরম সংকটের দিকে যাবে।’ ড. মাহবুব উল্লাহ বলেন, ‘মিটিং মিছিল করা যাচ্ছে না। করলেও প্রশাসনের অনুমতি নিয়ে করতে হচ্ছে। ৬ দফা দাবি উত্থাপনের পরও শেখ মুজিবুর রহমান এক-দেড় মাস প্রচার প্রচারণার সুযোগ পেয়েছিলেন।’ সৈয়দ আনোয়ার হোসেন বলেন, ‘গণতান্ত্রিক শাসন ব্যবস্থায় রাজনীতি মানে হচ্ছে দুই চাকার সাইকেল। এক চাকা মানে সরকার। অন্য চাকা মানে বিরোধী পক্ষ। এক চাকা দিয়ে সার্কাস দেখানো যায়। কিন্তু এক চাকা দিয়ে সাইকেল চলতে পারে না। মনে রাখতে হবে, বাংলাদেশ অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির কারণে যেমন সারা বিশ্বের নজর কেড়েছে, এর পাশাপাশি রাজনৈতিকভাবে যে অনগ্রসর সে কারণেও নজর কেড়েছে।’
সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ুন

ট্রেন্ডিং

সংবাদ সূত্র

News

The Largest News Aggregator
in Bengali Language

Email: [email protected]

Follow us