বরগুনায় যৌন হয়রানির ভিডিও মোবাইলে ধারণ করে ‘টিকটক ভিডিও’ তৈরি করে সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে দেয়ায় আত্মহত্যার হুমকি দিয়েছে এক স্কুলছাত্রী। এ ঘটনায় মামলা না নেয়ার অভিযোগ উঠেছে পুলিশের বিরুদ্ধে। ভুক্তভোগী ওই ছাত্রী পাথরঘাটা পৌরসভার আনোয়ার হোসেন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে অষ্টম শ্রেণির শিক্ষার্থী। জোরপূর্বক আপত্তিকর ভিডিও মুঠোফোনে ধারণ করে ভিডিও শেয়ারিং অ্যাপ টিকটকে ছড়িয়ে দিয়েছে সহপাঠী নাঈম (১৫) নামের আরেক শিক্ষার্থী। পরে নাঈম ভিডিওটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দেয়। বখাটে নাঈম বরগুনার পাথরঘাটা উপজেলার সদর ইউনিয়নের হাজির খাল গ্রামের সৌদি প্রবাসী সগির খানের ছেলে ও আনোয়ার হোসেন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে অষ্টম শ্রেণির ছাত্র। সগির খানের স্ত্রী ছেলে নাঈমকে নিয়ে পৌর শহরের হাজিরখাল এলাকায় ভাড়া বাসায় থাকেন।ভুক্তভোগী স্কুলছাত্রী বলেন, নাঈম দীর্ঘদিন ধরে আমাকে প্রেমের প্রস্তাব দিতো। এ ছাড়াও বিভিন্ন সময় পথে উত্ত্যক্ত করতো। এর জের ধরে গত বুধবার স্কুল ছুটির পর ক্লাস থেকে বের হওয়ার আগেই নাঈম আমার স্কুল ব্যাগ নিয়ে বাইরে চলে যায়। আমিও ব্যাগের জন্য নাঈমের কাছে গেলে সে আমাকে জড়িয়ে ধরে শ্লীলতাহানি করে। তখন পাশ থেকে গোপনে আমারই আরেক সহপাঠী সবুজ তা ভিডিও করে। যা পরবর্তীকালে নাঈম সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দেয়। প্রথমে বিষয়টি লজ্জায় কাউকে জানাইনি। কিন্তু শুক্রবার আমার এক প্রতিবেশী ভিডিওটি আমাকে দেখালে বিষয়টি আমার মাকে জানাই। থানায় মামলা দিতে গেলেও পুলিশ মামলা নেয়নি। এখন আমার আত্মহত্যা করা ছাড়া উপায় নেই।স্কুলছাত্রীর মা বলেন, নাঈম আমার মেয়েকে বিভিন্ন সময় উত্ত্যক্ত করতো। এ নিয়ে এক বছর আগে নাঈমের মামা ইউসুফের কাছে বিচার দিলেও কোনো সমাধান পাইনি। এরপর দুইদিন আগে আমার মেয়েকে নিয়ে একটি আপত্তিকর ভিডিও সে ইন্টারনেটে ছড়িয়ে দিয়েছে। বিষয়টি আমি স্কুলের প্রধান শিক্ষককে অবহিত করি। প্রধান শিক্ষক বললেও ছেলেকে নিয়ে স্কুলের যাননি তার মা। পরে শুক্রবার রাতে মামলা করার জন্য থানায় যাই। ভাইরাল হওয়া ভিডিও ওসি সাহেবকে দেখাই। ওসি আমাদের অনেক সময় বসিয়ে রেখে পরে যোগাযোগ করতে বলেন। তিনি মামলা না নিয়ে আমাদের বিদায় করে দেন। এ বিষয়ে আনোয়ার হোসেন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. আব্দুল জব্বার হোসেন জানান, এ বিষয়ে নাঈমের পরিবারকে অবহিত করলে তারা নাঈমকে হাজির করতে পারেনি। সে কারণে আমরা বিষয়টি নিয়ে সমাধানে যেতে পারিনি। এ ব্যাপারে অভিযুক্ত নাঈমের মায়ের মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, বিষয়টি পৌর মেয়র আনোয়ার হোসেন আকন ও ওই বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সমাধান করে দেবে। এ বিষয়ে পাথরঘাটা থানার ওসি আবুল বাশার বলেন, রাতে স্কুলছাত্রী ও তার মা থানায় এসে বিষয়টি জানিয়ে গেছেন। আমি ভিডিওটি দেখেছিও। তারা মামলা করতে আসেননি, বিষয়টি জানাতে এসেছিলেন। আমি ছেলের মাকে বলেছি, তার ছেলেকে নিয়ে থানায় আসতে।