টাঙ্গাইলের ঘাটাইল উপজেলায় মাত্র দেড় কিলোমিটার রাস্তা পাকা না হওয়ায় চরম দুর্ভোগ পোহাচ্ছে পাঁচ গ্রামের কয়েক হাজার মানুষ। উপজেলা সদরে যেতে বিকল্প পথে তাদের অতিরিক্তি ১৫ কিলোমিটার রাস্তা পাড়ি দিতে হচ্ছে। এতে একদিকে প্রচুর সময় ও অর্থের খরচ হচ্ছে। স্কুল, কলেজে পড়ুয়া ছাত্র-ছাত্রীরা ও কর্মজীবী মানুষের দুর্ভোগ বেড়েছে কয়েকগুণ। এ ছাড়াও কৃষিপণ্য পরিবহন পুরোপুরি বন্ধ রয়েছে। স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের কাছে রাস্তাটি সংস্কারের জন্য বারবার দাবি জানালেও কোনো কাজ হয়নি বলে আক্ষেপ করেছেন এলাকাবাসী।উপজেলার সন্ধানপুর, জামুরিয়া ও দিগড় ইউনিয়নের সীমান্তবর্তী এলাকা দিয়ে ঝড়কা থেকে মাইধারচালা পর্যন্ত রাস্তাটি প্রায় পাঁচ কিলোমিটার। ইতিমধ্যে জামুরিয়া অংশের রাস্তা পাকা হয়ে গেছে। সন্ধানপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে মাইধারচালা বাজার পর্যন্ত মাত্র দেড় কিলোমিটার রাস্তা কোনো কাজ হয়নি। এই রাস্তাটুকু পাকা না হওয়ায় চরম দুর্ভোগে পড়েছেন সন্ধানপুর, মোনারপাড়া, নয়াবাড়ি, মানাজি, মাইধারচালাসহ এই ৫ গ্রামের কয়েক হাজার মানুষ। শীতকালে ধুলো আর বর্ষাকালে কাদার কারণে এই রাস্তায় যাতায়াত করা যায় না।সরজমিন এলাকাবাসীর সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, গ্রামের মানুষকে কদমতলী হয়ে অতিরিক্ত ১৫ কিলোমিটার ঘুরে উপজেলা সদরে যেতে হয়। অথচ এই দেড় কিলোমিটার রাস্তা সংস্কার করলে সদরে যেতে দূরত্ব কমে আসবে আট কিলোমিটার। জনগণের ভোগান্তি এমন পর্যায়ে দাঁড়িয়েছে- যে সামান্য বৃষ্টি হলে পা হাঁটু পর্যন্ত কাদায় দেবে যায়। শহরের অনেক গুরত্বপূর্ণ কাজ করা সম্ভব হয় না। তাছাড়া কৃষকের উৎপাদিত ফসল নিয়ে হাটে-বাজারে গিয়ে বিক্রি করার কোনো উপায় থাকে না, যাতায়াত করারও সম্ভব হয় না।খোঁজ নিয়ে জানা যায়, এই সড়কের আশপাশে একটি কমিউনিটি ক্লিনিক, দুটি প্রাথমিক বিদ্যালয়, একটা দাখিল মাদ্রাসা, কয়েকটি নূরানী ও হাফেজিয়া মাদ্রাসা এবং এতিমখানাসহ একটি মাধ্যমিক বিদ্যালয় রয়েছে। বর্ষা মৌসুমে এসব প্রতিষ্ঠানে যাতায়াত করা ভীষণ কষ্টকর। কোমলমতি বাচ্চারা এসব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে যাতায়াত করতে ভীষণ বেগ পেতে হয়। যার ফলে অনেক কিশোর-কিশোরী পড়ালেখা থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়ে নানা ধরনের অপকর্মের সঙ্গে জড়িয়ে পড়ছে। দিন দিন শিশু শ্রম বৃদ্ধি পাচ্ছে ও একটি নিরক্ষর জাতিতে পরিণত হচ্ছে উক্ত এলাকার শত শত শিশু-কিশোররা।স্থানীয়রা জানান, নির্বাচনের আগে বর্তমান চেয়ারম্যান এই রাস্তাটি পাকা করার প্রতিশ্রুতি দিলেও নির্বাচিত হওয়ার তিন বছর পার হয়ে গেলেও এটি পাকাকরণে কোনো পদক্ষেপ নেয়নি। নিজের আখের গোছাতে ব্যস্ত সময় পার করছেন। এ ব্যাপারে সন্ধানপুর ইউপি চেয়ারম্যান শহিদুল ইসলামকে তার দেয়া প্রতিশ্রুতির কথা জিজ্ঞেস করলে তিনি স্বীকার করে বলেন, আমি ইতিমধ্যে উপজেলা পরিষদের সভায় রাস্তাটি পাকাকরণের প্রস্তাব দিয়েছি। এ ব্যাপারে স্থানীয় এমপি মহোদয়ের সঙ্গে কথা বলে সর্বাত্মক চেষ্টা চালাচ্ছি। আশা করি, অতিদ্রুত এর একটা বিহিত হবে।