তবে কি টিকা কার্ড সঙ্গে নিয়ে রাস্তায় চলতে হবে?

মানবজমিন প্রকাশিত: ০৪ আগস্ট ২০২১, ০০:০০

বৈঠক ছিল চলমান বিধিনিষেধ আরও বাড়বে কিনা এ বিষয়ে। বৈঠক শেষে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক বিধিনিষেধ আরও ৫ দিন বাড়িয়ে ১০ই আগস্ট পর্যন্ত করার সিদ্ধান্ত জানান। পুরো দেশের মানুষ এই ঘোষণাটি জানার জন্যই অপেক্ষায় ছিলেন। মন্ত্রীর ঘোষণায় সেই অপেক্ষা শেষ হয়েছে ঠিকই কিন্তু তিনি বাড়িয়ে দিয়েছেন নতুন এক উদ্বেগ। বিধিনিষেধ উঠে যাওয়ার পর রাস্তায় বের হতে হলে টিকা দেয়া লাগবে-মন্ত্রীর এমন এক ঘোষণায় নয়া বিতর্ক চারপাশে। মন্ত্রী এও বলেছেন, টিকা না দিয়ে রাস্তায় বের হলে শাস্তির মুখোমুখি হতে হবে। টিকা না দিয়ে কেউ কোনো কর্মস্থলে আসতে পারবেন না। দোকানপাট খুলতে পারবেন না। মন্ত্রীর ঘোষণা অনুযায়ী ১১ই আগস্ট থেকে কেউ টিকা গ্রহণ ছাড়া বাইরে বের হলে শাস্তির মুখোমুখি হতে হবে। এই ঘোষণার পর বিশেষজ্ঞরাও কোনো হিসাব মেলাতে পারছেন না। আসলে তিনি কি বলতে চেয়েছেন? যেহেতু সরকারের উচ্চ পর্যায়ের বৈঠক শেষে সিদ্ধান্ত জানাতে করা সংবাদ সম্মেলনে মন্ত্রী এমন ঘোষণা দিয়েছেন তাই ধরে নেয়া হচ্ছে এটি সরকারি সিদ্ধান্ত। যদি সরকারি সিদ্ধান্ত হয়ে থাকে তাহলে এ বিষয়ে অবশ্যই সরকারের তরফে আরও বিশদ ব্যাখ্যা দেয়া হবে। তবে বিশ্লেষকরা বলছেন, দেশে টিকাদান কর্মসূচির বর্তমান প্রেক্ষাপট, টিকার মজুত, টিকা দেয়ার হার এবং টিকার ভবিষ্যৎ মজুতের বিবেচনায় দেশে এমন কোনো ঘোষণা দেয়ার পরিস্থিতি তৈরি হয়নি। বেশির ভাগ মানুষকে টিকার আওতায় আনার পর হাতে পর্যাপ্ত মজুত রেখে এমন ঘোষণা দিলে দেশে এবং বিদেশে তা গ্রহণযোগ্য হতো। বলা যেতো আমাদের হাতে পর্যাপ্ত মজুত আছে। মানুষ টিকা নিচ্ছে না। তাই মানুষকে টিকা নিতে বাধ্য করার জন্য এমন ঘোষণা। কিন্তু আদতে ঠিক উল্টো পরিস্থিতির মধ্যে এমন ঘোষণায় ভুল বার্তা যেতে পারে বাইরের দুনিয়ায় এমন আশঙ্কা করছেন বিশেষজ্ঞরা। সরকারের তরফে এমন ঘোষণা দেয়ার পর দেশে পর্যাপ্ত টিকার মজুত আছে- এমন ধারণা প্রতিষ্ঠিত হতে পারে। টিকা সংগ্রহের কূটনৈতিক চ্যানেলে জটিলতা তৈরি হতে পারে। টিকাদাতা দেশ বা প্রতিষ্ঠান ভুল ধারণা পোষণ করতে পারে। একইসঙ্গে দেশে টিকা নিয়ে মানুষের মধ্যে বিরূপ প্রতিক্রিয়া তৈরি হতে পারে।চলতি বছরের ৭ই ফেব্রুয়ারি দেশে আনুষ্ঠানিকভাবে টিকাদান কর্মসূচি শুরু হয়। এর পরের ছয় মাসে অন্তত এক ডোজ টিকা নিয়েছেন ৯১ লাখ মানুষ। টিকা নিতে নিবন্ধন করে অপেক্ষায় আছেন বহু মানুষ। আসছে ৭ই আগস্ট থেকে সারা দেশে টিকা ক্যাম্পেইন করার ঘোষণা দিয়েছে সরকার। বলা হচ্ছে- এক কোটি মানুষকে টিকা দেয়া হবে ৬ দিনে। তাও যদি দেয়া হয় তাহলে এক কোটি ৯১ লাখ মানুষের এক ডোজ করে টিকা দেয়া হবে। সরকারি সংস্থা পরিসংখ্যান ব্যুারোর তথ্য অনুযায়ী দেশের মোট জনসংখ্যা ১৬ কোটি ৯১ লাখ ১০ হাজার। এর মধ্যে ১৮ বছরের বেশি বয়স ৬০ শতাংশের। এ হিসেবে অন্তত ১০ কোটি মানুষকে টিকা দিতে হবে। টিকা লাগবে ২০ কোটি ডোজ। প্রতি মাসে এক কোটি ডোজ করে টিকা দিলে সবাইকে টিকা দিতে প্রায় দুই বছর লেগে যাবে। এই অবস্থায় টিকাদান ক্যাম্পেইনের পর থেকে যদি টিকা না নিয়ে বাইরে বের হওয়া না যায় তাহলে আঠারো বছরের বেশি বয়সী অন্তত ৮ কোটি মানুষ ঘরের বাইরে যেতে পারবেন না। আর যারা টিকা নিয়েছেন তারা বাইরে বের হলে শাস্তি এড়াতে পারবেন যদি তাদের সঙ্গে টিকাকার্ড থাকে। কারণ এই কার্ড ছাড়াতো টিকা গ্রহণের আর কোনো প্রমাণ নেই। এখন প্রশ্ন হলো-১১ই আগস্ট থেকে কি সব নাগরিককে টিকা গ্রহণের কার্ড সঙ্গে নিয়ে বাইরে বের হতে হবে? যদিও সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলার সময় মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী এমন কোনো বিষয় বলেননি। টিকা না দিয়ে সড়কে বের হলে কি শাস্তি হবে, কারা শাস্তি দেবে তাও খোলাসা করেননি। তবে মন্ত্রী বলেছেন, আইন না করলেও অধ্যাদেশ জারি করে হলেও শাস্তি দেয়ার ক্ষমতা দেয়া হবে আইন প্রয়োগকারী সংস্থাকে। যেহেতু সংসদ বন্ধ তাই আইন পাস করা সম্ভব নয়।
সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ুন
ট্রেন্ডিং

সংবাদ সূত্র

News

The Largest News Aggregator
in Bengali Language

Email: [email protected]

Follow us