নওগাঁয় পাটক্ষেত থেকে উজ্জ্বল হোসেন (২৫) নামে এক ডিশ ব্যবসায়ীর (ক্যাবল নেটওয়ার্ক) গলাকেটে হত্যার রহস্য উন্মোচন করেছে পুলিশ। ডিশের ব্যবসা নিয়ে দ্বন্দ্ব ও উজ্জ্বল হোসেনের মাদক ব্যবসার পাওনা ৩০ হাজার টাকা নিয়ে বিরোধের জেরে তাকে গলাকেটে হত্যা করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন নওগাঁ পুলিশ সুপার প্রকৌশলী আব্দুল মান্নান মিয়া। হত্যারহস্য উদঘাটন নিয়ে গতকাল মঙ্গলবার বেলা ১২টায় পুলিশ সুপার আবদুল মান্নান মিয়া সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য তুলে ধরেন। পুলিশ সুপার বলেন, গত ২৫শে জুলাই সদর উপজেলার শিকারপুর ইউনিয়নের বিলভবানীপুর গ্রামের সরদারপাড়ার একটি পাটক্ষেত থেকে উজ্জ্বল হোসেনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনায় একই গ্রামের মফিজ উদ্দিনের ছেলে সুজন (২৯) এবং সিরাজুল ইসলামের ছেলে শরিফ (২৫)কে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। উজ্জ্বল দীর্ঘদিন থেকে হত্যাকারীদের কাছ থেকে সুদের টাকা এবং মাদক বিক্রির ৩০ হাজার টাকা পাওনা ছিল। এ ছাড়া ডিশ ব্যবসা নিয়েও তাদের সঙ্গে দ্বন্দ্ব ছিল। গত ২২শে জুলাই দুপুরে স্থানীয় একটি বাজারের দোকানে হত্যাকারীরা একত্রিত হয়ে উজ্জ্বলকে হত্যার পরিকল্পনা করে। পরিকল্পনা অনুযায়ী হত্যাকারীরা উজ্জ্বলের কাছ থেকে নেশা জাতীয় অ্যাম্পল ইনজেকশন নেয়ার কথা বলে ২৪শে জুলাই রাত সাড়ে ৮টার দিকে বিলভবানীপুর গ্রামের মাঠে নির্জন স্থানে ডেকে নেয়। সেখানে গভীর নলকূপ (ডিপ টিউবওয়েল) ড্রেনের ওপরে তারা অ্যাম্পল নেয়ার জন্য অপেক্ষা করে। পরবর্তীতে সেখানে শরীফ ও সুজন যায়। অ্যাম্পল নেয়ার এক পর্যায়ে সুজন কৌশলে প্রসাব করার নাম করে ওঠে যায় এবং পরিকল্পনা অনুযায়ী পিছন থেকে এসে ধারালো ছুরি দিয়ে উজ্জ্বলের গলায় জোরে টান দেয়। এতে উজ্জ্বল লাফালাফি শুরু করলে অন্যরা এসে তার হাত-পা চেপে ধরে গলা কেটে ফেলে। উজ্জ্বলের মৃত্যু নিশ্চিত করতে শরীফ তার কাছে রাখা ধারালো আরেকটি ছুরি দিয়ে দুই পায়ের রগ কেটে দেয়। পরে মরদেহ পাশের একটি পাটক্ষেতে এবং ছুরি দুটি পানিতে ফেলে দেয়। সংবাদ সম্মেলনে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার একেএম মামুন খান চিশতী ও গাজিউর রহমান, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সদর সার্কেল সাবিনা ইয়াসমিন, সহকারী পুলিশ সুপার (ডিএসবি) সুরাইয়া খাতুন, নওগাঁ সদর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) নজরুল ইসলামসহ পুলিশের অন্য কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।