প্রবাসী মুক্তিযোদ্ধাদের স্বীকৃতিদানের ব্যাপারে আমাদের মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয় যে সিদ্ধান্ত নিয়েছে, তাতে তাদের অবিবেচক এবং অযোগ্য ভূমিকার কথাই আমাকে স্মরণ করিয়ে দেয়। মন্ত্রিসভা অযোগ্য হলে সরকারকে যে পদে পদে হোঁচট খেতে হয়, তার প্রমাণ এখন বাংলাদেশে বর্তমান। আওয়ামী লীগের গত তিনটি মন্ত্রিসভার মধ্যে এই মন্ত্রিসভাকে সবচেয়ে অযোগ্য বলে বিদেশি পত্রিকায়ও বলা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তার অসাধারণ প্রজ্ঞা ও বিবেচনা শক্তির ফলে সরকারকে খাড়া রেখেছেন এবং বিভিন্ন সমস্যার ত্বরিত সমাধান দিচ্ছেন। কিন্তু তার একশ্রেণির মন্ত্রী ও উপমন্ত্রীর অযোগ্যতার ফলে এই সরকার বহু ক্ষেত্রে নানা অঘটনের জন্য দায়ী হচ্ছে। তার একটি দৃষ্টান্ত স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। তাদের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ তো আছেই, সম্প্রতি এক পত্রিকার রিপোর্টারকে অবৈধভাবে আটক রেখে হেনস্তা করার ব্যাপারে সারাদেশে তোলপাড় হয়েছে। এমনকি জাতিসংঘ তার প্রতিবাদ করেছে। পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্দুল মোমেন এবং পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নানের মধ্যে খুনসুটি লেগেই আছে। হোম অফিসের সিদ্ধান্তে পাসপোর্টে ইসরায়েলে যাওয়ার বাধানিষেধ তুলে দিয়ে সরকার সুনাম অর্জন করেনি। নারী ধর্ষণ সমাজের উচ্চ পর্যায় থেকে নিম্ন পর্যায় পর্যন্ত পৌঁছেছে। সাম্প্রতিক মুনিয়া হত্যা, পরীমণিকে ধর্ষণের চেষ্টা ইত্যাদি ঘটনা সামাজিক অবক্ষয়ের বিরাট প্রমাণ। এই নারী ধর্ষণ প্রচেষ্টার সঙ্গে যুক্ত রয়েছে বিদেশে অবৈধ টাকা পাচার ও ধন লুণ্ঠনের কাহিনি। বোঝাই যায়, আমাদের সমাজে প্রচণ্ড তলানি শুরু হয়েছে। তাকে রোখার ক্ষমতা অথবা যোগ্যতা সংশ্নিষ্ট কর্তৃপক্ষের নেই। এ কথা লিখতে গিয়ে ভারতের উদাহরণ মনে পড়ে। নরসিমা রাওয়ের প্রধানমন্ত্রিত্বের আমলে এমনসব অযোগ্য মন্ত্রীকে তার মন্ত্রিসভায় গ্রহণ করা হয়েছিল, এর ফলে তার সরকার পদে পদে হোঁচট খাচ্ছিল। তখন থেকেই ভারতের কংগ্রেসের পতনের সূচনা হয়। নরসিমা রাও যোগ্য প্রধানমন্ত্রী ছিলেন। কিন্তু তার অযোগ্য মন্ত্রীদের জন্য তাকে পদে পদে সমালোচিত হতে হয়েছে। একবার এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, 'আমি একা কী করব? আমার ওপর অযোগ্য এবং ক্ষেত্রবিশেষে অর্ধশিক্ষিত মন্ত্রী চাপিয়ে দিয়েছে দল। আমার কিছু করার নেই...।'