এসএসসি ও এইচএসসি নিয়ে উদ্বেগ বাড়ছে

মানবজমিন প্রকাশিত: ২২ জুন ২০২১, ০০:০০

প্রায় ৪৪ লাখ শিক্ষার্থী অপেক্ষায়। কবে হবে পরীক্ষা। দুশ্চিন্তা গ্রাস করছে তাদের। বাড়াচ্ছে হতাশা। শিক্ষা পঞ্জিকা অনুযায়ী ১লা ফেব্রুয়ারি ও ১লা এপ্রিল এসএসসি, এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষা গ্রহণের কথা ছিল। এরপর জুন ও জুলাইয়ে গ্রহণের সিদ্ধান্ত নেয়া হলেও তাও ভেস্তে যায়। এই দুই পরীক্ষা নিয়ে ক্রমে উদ্বেগ বাড়ছে। করোনায় ক্ষতিগ্রস্ত শিক্ষা ক্যালেন্ডারকেও শঙ্কার মুখে ফেলে দিয়েছে এই পরীক্ষা।২০২০ সালের শিক্ষার্থীরা ‘অটোপাস’ পেয়েছেন। তারা উত্তীর্ণ হলেও পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তির পরীক্ষা তারা দিতে পারেননি। আবার পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষা না হওয়ার কারণে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় কিংবা দেশের বাইরেও অনেকেই ভর্তি হচ্ছেন না। এরপর ২০২১ সালের পরীক্ষা সামনে আসায় একটা বড় জটের শঙ্কা দেখা দিয়েছে। আবার সেই সঙ্গে ২০২২ সালের শিক্ষার্থীদেরও ফেব্রুয়ারি ও এপ্রিলে পরিকল্পনা অনুযায়ী পরীক্ষা হওয়ার কথা রয়েছে। এই তিন সেশনের শিক্ষার্থীদের নিয়ে একটি ভিন্ন পরিস্থিতির সৃষ্টি হচ্ছে।করোনা পরিস্থিতি দিনকে দিন বৃদ্ধি পাওয়ায় পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষা নিয়েও সৃষ্টি হয়েছে দীর্ঘসূত্রতা। আর ২০২২ সালের পরীক্ষার্থীরা ইতিমধ্যেই দিতে শুরু করেছেন অ্যাসাইনমেন্ট। চলতি বছরের পরীক্ষার্থীদের পরিকল্পনা অনুযায়ী এসএসসি ৬০ দিন ও এইচএসসি ৮০ দিনের ক্লাস করিয়ে পরীক্ষা নেয়ার পরিকল্পনা ছিল। পরিকল্পনা বাস্তবায়নে প্রকাশ করা হয়েছিল সংক্ষিপ্ত সিলেবাসও। কর্তা-ব্যক্তিরা বারবার ঘোষণা দিয়েছেন ‘অটোপাস’ মিলছে না এবারের পরীক্ষার্থীদের। পরীক্ষা নেয়া সম্ভব না হলে বিকল্প পরিকল্পনা করছে মন্ত্রণালয়। শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি ১৩ই জুন সাংবাদিকদের জানিয়েছিলেন, এসএসসি, এইচএসসি পরীক্ষার্থীদের জন্য আমরা চেষ্টা করছি সংক্ষিপ্ত সিলেবাসে পরীক্ষা নেয়ার। এখন সেটি যদি না হয়, আমরা বিকল্প নিয়েও চিন্তা করছি।পরীক্ষা নেয়ার জন্য বছরের শেষ পর্যন্ত অপেক্ষা করতে চায় সরকার। ডিসেম্বরেও যদি পরীক্ষা নেয়া হয় তবে কয়েক মাস ক্লাস করাতে হবে শিক্ষার্থীদের। এ ছাড়াও প্রকাশিত সংক্ষিপ্ত সিলেবাসের পুরোটা নেয়া সম্ভব না হলে বাংলা, ইংরেজি, গণিত ও বিজ্ঞানের মতো গুরুত্বপূর্ণ কয়েকটি বিষয়ে পরীক্ষা নেয়ার পরিকল্পনা রয়েছে। এরপরও পরীক্ষা নেয়া সম্ভব না হলে অ্যাসাইনমেন্টের মাধ্যমে মূল্যায়ন করা হতে পারে।এই অ্যাসাইনমেন্টগুলো হতে পারে ওপেন বুক পদ্ধতির। সেই সঙ্গে যুক্ত হতে পারে পূর্বের পরীক্ষার নম্বর। এসএসসি’র ক্ষেত্রে জেএসসি ও এইচএসসির ক্ষেত্রে জেএসসি ও এসএসসির নম্বর বিবেচনায় আসতে পারে। তবে ফের অটোপাস দেয়ার পরিকল্পনা নেই। জানা যায়, বিকল্প মূল্যায়নের কী পদ্ধতিতে হতে পারে তা নিয়ে একটি কমিটিও গঠন করা হয়েছে।এই কমিটি একটি মূল্যায়ন ইতিমধ্যে  তৈরি করেছে। তারা সামগ্রিক বিবেচনায় অনলাইনে পরীক্ষা নেয়া সম্ভব নয়- সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। এই প্রতিবেদন খুব শিগগিরই শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হবে বলে জানা যায়। এ ছাড়াও জানা যায়, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের বিশেষজ্ঞসহ করোনা নিয়ন্ত্রণে জাতীয় কমিটির সদস্যদেরও পরামর্শ নেবে সরকার। পাশাপাশি টিকা প্রদানের পর পরীক্ষা নিয়েও আলোচনা হয়েছে বলে জানা যায়। এ বিষয়ে জানতে চাইলে আন্তঃশিক্ষা বোর্ডের সভাপতি অধ্যাপক নেহাল আহমেদ বলেন, আমাদের পরীক্ষা নেয়ার সব ধরনের প্রস্তুতি রয়েছে। আমরা এখন পর্যন্ত পরীক্ষাই নিতে চাই। পরীক্ষার জন্য ডিসেম্বর পর্যন্ত অপেক্ষা করতে চায় মন্ত্রণালয়। এরপরও যদি পরীক্ষা নেয়া সম্ভব না হয় তবে বিকল্প নিয়ে ভাবা যাবে। তিনি আবারো জোর দিয়ে বলেন, শিক্ষার্থীদের অটোপাস দেয়া হবে না এবছর। অটোপাসের কারণে শিক্ষার্থীদের মাঝে নানা সমস্যা দেখা দেয়।পরীক্ষার সুনির্দিষ্ট তারিখ ঘোষণা না হওয়ায় ব্যাপক হতাশার মুখে পতিত হয়েছেন শিক্ষার্থীরা। নটর ডেম কলেজ, ঢাকার শিক্ষার্থী আব্দুল্লাহ চৌধুরী ইভান। ঢাকার স্থায়ী বাসিন্দা ইভান বলেন, এভাবে আর চলছে না। এক পরীক্ষার টেনশন। দুই বাড়িতে বাবা-মায়ের পরীক্ষা নিয়ে কড়া শাসন। পরীক্ষাও হচ্ছে না, কোনো কাজও করতে পারছি না। আগে আমি লেখাপড়া নিয়ে ব্যস্ত সময় কাটাতাম। এখন আমার সময় কাটে আড্ডাবাজি আর বাড়িতে ফিরে অনলাইন গেমিংয়ে। তিনি আরও বলেন, সংক্ষিপ্ত যে সিলেবাস দিয়েছে এর থেকে ঢের বেশি প্রস্তুতি আমাদের আছে। আমার একটাই চাওয়া- একটা সুনির্দিষ্ট ঘোষণা দেয়া হোক। তারা যেন সুনির্দিষ্ট করে জানান দেন, পরীক্ষা হলে এই মাসে, এই পদ্ধতিতে হবে। কিংবা আমাদের বিকল্প কী পদ্ধতিতে কীভাবে মূল্যায়ন করা হবে। হতাশা নিয়ে আর এতদিন সময় কাটানো যায় না।
সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ুন
ঘটনা প্রবাহ

সংবাদ সূত্র

News

The Largest News Aggregator
in Bengali Language

Email: [email protected]

Follow us