সিলেটে পরিবহন সেক্টরে ফের দ্বন্দ্ব

মানবজমিন প্রকাশিত: ২১ জুন ২০২১, ০০:০০

সিলেট জেলা পরিবহন মালিক ও শ্রমিক সংগঠনে ফের দ্বন্দ্ব দেখা দিয়েছে। এ নিয়ে গত ১০ দিন ধরে উত্তেজনা চলছে  কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনালে। এবারের দ্বন্দ্বের সূত্রপাত নতুন মিতালী মিনিবাস অন্তর্ভুক্তি নিয়ে। শ্রমিকদের একাংশ জোরপূর্বক ১০ দিন ধরে মিতালী মিনিবাস চলাচল বন্ধ রেখেছে। কর্তৃত্ব নিয়ে দ্বন্দ্বে এরই মধ্যে মিতালী মালিক সমিতির নেতারা অর্ধকোটি টাকা লোকসানের মুখে পড়েছেন। করোনার কারণে ঢাকা-সিলেট রুটে নতুন মিতালী মিনিবাস অন্তর্ভুক্তি বন্ধ রয়েছে। লকডাউনে ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় প্রায় ৯০টি মিতালী পরিবহনের গাড়ির মালিকরা ঢাকায় সভা করে এই সিদ্ধান্ত নেন। কিন্তু গত ২৫শে মে সিলেট জেলা মালিক পরিবহন মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক পলাশ আহমদের নেতৃত্বে সংগঠনের দপ্তর সম্পাদক আব্দুর রকিবের মালিকানাধীন একটি মিনিবাস মিতালী পরিবহনের নামে জোরপূর্বক রাস্তায় নামাতে চান মালিক ও শ্রমিকদের একাংশ। এ নিয়ে উত্তেজনা দেখা দিলে মিতালী মিনিবাসের মালিকরা সেটি চলাচলের অনুমতি দেননি। এরপর গত ৮ই জুন জুবেদুর রহমান নামের এক ব্যক্তি আরও একটি মিনিবাস নামাতে চাইলে সেটিও মালিক সমিতি অনুমতি দেয়নি। এ কারণে শ্রমিকদের একাংশ রিয়াজ, ধনুর নেতৃত্বে শ্রমিকদের একটি দল জোরপূর্বক ঢাকা-সিলেট রুটে মিতালী মিনিবাসের সব বাস চলাচল বন্ধ করে দিয়েছে। মিতালী মিনিবাস মালিক সমিতির নেতারা জানান, গত ১০ দিন শ্রমিকদের একটি অংশ রাস্তায় অবস্থান করায় ভাঙচুরের আশঙ্কায় ভয়ে কেউ রাস্তায় গাড়ি নামাচ্ছেন না। শ্রমিকরা লাঠিসোটা নিয়ে বাইপাস এলাকায় অবস্থান করছে। এদিকে দুটি গাড়ির মালিকানাও নিয়ে রহস্য দেখা দিয়েছে। গত শনিবার ঢাকায় মিতালী মালিক সমিতির সাধারণ সভায় পরিবহন মালিক সমিতির দপ্তর সম্পাদক আশরাফ আলী ও অপর ব্যক্তি শাহ জুবেদুর রহমান ঢাকা মেট্রো-ব-১৫-৭০৬৭ নাম্বারের মিনিবাসটি মালিক সমিতির অন্তর্ভুক্তির আবেদন জানিয়েছেন। দুই ব্যক্তি একই নামের গাড়ির মালিকানা দাবি করায় গত শনিবার ঢাকায় মিতালী মিনিবাস মালিক সমিতির সাধারণ সভায় অনুমতির ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেয়া হয়নি। এ ছাড়া ওই বৈঠকে ঘটনার সূত্রপাত ঘটানো মালিক আশরাফ আলী সহ মালিক সমিতির তিন নেতা উপস্থিত হননি। ফলে বৈঠকটি স্থগিত করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন মিতালী মিনিবাস মালিক সমিতি সিলেটের নেতারা। তারা জানান, আশরাফ আলী সহ ওই তিন সদস্য মিতালী মিনিবাস মালিক সমিতির সিলেট প্রান্তের আহ্বায়ক কমিটির সদস্যও। এদিকে সার্বিক বিষয় জানিয়ে গতকাল সিলেটের জেলা প্রশাসকের হস্তক্ষেপ কামনা করে পত্র দিয়েছেন মিতালী মিনিবাস মালিক সমিতি সিলেট প্রান্তের আহ্বায়ক মো. সিরাজ উদ্দিন। গতকাল রোববার সিলেট জেলা প্রশাসকের কাছে দেয়া এক স্মারকলিপিতে তিনি জানান, শ্রমিকদের ওই কুচক্রী অংশের রিয়াজ, ধনু ও রিয়াজের (২) নেতৃত্বে পলাশ চক্রের প্ররোচনায় জোরপূর্বক ওই দুটি মিতালী গাড়ি রাস্তায় চলাচলের অপচেষ্টা চালায়। এরপর তারা ১১ই জুন ভোর ৬ টায় সিলেটের কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনাল এলাকায় লাঠিসোটা নিয়ে জোরপূর্বক মিতালী মিনিবাস পরিবহনের সকল গাড়ি চলাচল বন্ধ করে দিয়েছে। এরপর কতিপয় ওই শ্রমিকদের কয়েকটি অংশ সশস্ত্র অবস্থায় বাইপাস সহ কয়েকটি এলাকায় অবস্থান নেয়। এখনো তারা একই ভাবে অবস্থানে রয়েছে। এ কারণে ঢাকা-সিলেট রুটে মিতালী মিনিবাস চলাচল করছে না।  জেলা পরিবহন মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক পলাশের মাধ্যমে সবকিছু হচ্ছে বলে দাবি করেন তিনি। ওদিকে, সিলেট জেলা পরিবহন মালিক ও সমিতির নেতারা গতকালও এ নিয়ে বৈঠক করেছেন কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনাল এলাকায়। বৈঠক শেষে কয়েকজন মালিক ও শ্রমিক নেতাদের দ্বন্দ্বের কারণে বিষয়টির মীমাংসা হচ্ছে না। কেউ কেউ প্রভাব খাটিয়ে গোটা পরিবহন সেক্টরকে আন্দোলনের দিকে নিয়ে যাওয়ার পাঁয়তারা করছেন। এদিকে- সিলেট জেলা পরিবহন মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক পলাশ আহমদ জানিয়েছেন, নতুন করে গাড়ি অন্তর্ভুক্তির বিষয়ে তার কোনো সম্পৃক্ততা নেই। তিনি কারও নেতৃত্ব দিচ্ছেন না। তবে, মিতালী পরিবহন সমিতির নেতারা অনিয়ম করে সংগঠন চালাচ্ছেন বলে দাবি করেন তিনি। সিলেট জেলা পরিবহন শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি মো. ময়নুল হক মানবজমিনকে জানিয়েছেন, শ্রমিকরা চেয়েছিল আরও দুটি নতুন গাড়ি রাস্তায় নামলে তাদের কর্মসংস্থান হবে। এ কারণে গাড়িভর্তি করতে সুপারিশ করা হলেও মিতালী মিনিবাস মালিক সমিতির নেতারা সেই অনুরোধ রাখেননি। এ জন্য গত ১০ দিন ধরে মিতালী পরিবহনের শ্রমিকরা গাড়ি না চালিয়ে ধর্মঘট পালন করছেন। প্রয়োজনে বৃহত্তর পরিসরে আন্দোলনের ডাক দেয়া হবে বলে জানান তিনি।
সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ুন
ঘটনা প্রবাহ

ট্রেন্ডিং

সংবাদ সূত্র

News

The Largest News Aggregator
in Bengali Language

Email: [email protected]

Follow us