মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে কাজ করার সুবাদে যারা প্রতি সপ্তাহের মঙ্গলবার একনেক সভায় অংশগ্রহণ করার সুযোগ পেতেন, তাদের আমার ভাগ্যবান মনে হতো। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর দর্শন, প্রকল্পের উদ্দেশ্য, কী কাজ তিনি কেন করতে চান তা সহকর্মীদের সঙ্গে অকপটে শেয়ার করেন এবং প্রয়োজনীয় দিকনির্দেশনা দেন। প্রতিটি প্রকল্পের পেছনে একটি স্বপ্নজয়ের গল্প থাকত জেনেছি। বাংলাদেশের প্রতিটি অঞ্চলের ভূমিবৈচিত্র্য মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নখদর্পণে। ক্ষমতায় আসার আগে তিনি দীর্ঘ ২১ বছর বাংলার মাঠ-ঘাটে সংগঠন গোছানোর কাজ ঘুরে দেখেছেন। একটু-আধটু শুনে খুব ইচ্ছে হতো একনেক সভায় অংশগ্রহণ করতে। একদিন সাহস করে বলে ফেলি, তিনি ঠান্ডা স্বরে বললেন, তোমার খুব বেশি ইচ্ছে হলে বল প্ল্যানিং কমিশনে পোস্টিং করিয়ে দিই। ভয়ে আর কোনো দিন যেতে চাইনি। যার যা কাজ তার মধ্যে থাকাটাই তিনি পছন্দ করতেন। প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে বিভিন্ন সভা ও প্রকল্প উপস্থাপনার সময় থাকার সুযোগ হতো। আমি দেখলাম তাঁর চিন্তাগুলো মৌলিক, যার মূলমন্ত্র ছিল মানুষকে কষ্ট দিয়ে কোনো উন্নয়ন নয়। জলবায়ু পরিবর্তনের নির্দোষ শিকার বাংলাদেশ। জলবায়ু পরিবর্তনজনিত বিরূপ পরিবেশের সঙ্গে অভিযোজনে বাংলাদেশের মানুষ বিশ্বে এগিয়ে আছে। দুর্যোগ, সাইক্লোন বা ভয়ংকর ঝড়ের পূর্বাভাস পেয়েও মানুষ কেন আশ্রয় কেন্দ্রে যায় না তিনি উপলব্ধি করে বলেন, তোমরা তাদের পোষা প্রাণীগুলোকে আগে আশ্রয় কেন্দ্রে নাও, দেখ ওরাও আপসে চলে যাবে। তাঁর এ গভীর উপলব্ধি বিস্ময় সৃষ্টি করে।