রক্ষক যখন ভক্ষক

মানবজমিন প্রকাশিত: ১৪ এপ্রিল ২০২১, ০০:০০

নড়াইল আধুনিক সদর হাসপাতালের হিসাবরক্ষক জাহানারা খাতুন লাকীর বিরুদ্ধে আনীত অর্থ আত্মসাতের প্রমাণ পেয়েছে তদন্ত সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা। মঙ্গলবার তদন্ত কমিটি নড়াইল সদর হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক আব্দুস শাকুরের নিকট তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করা হয়েছে। জানা গেছে, ২০১৯ সালের ১৮ই জুলাই জাহানারা খাতুন লাকী নড়াইল সদর হাসপাতালের হিসাবরক্ষক পদে যোগদান করেন। ২০১৯ সালের জুলাই থেকে ২০২১ সালের মার্চ পর্যন্ত ইউজার ফিস’র সিংহভাগ টাকা তিনি ব্যাংকে জমা দেননি। অথচ ভুয়া বিল ভাউচার ও চালান কপি হাসপাতালে জমা দিয়েছেন। মাসের পর মাস টাকা জমা না দিয়ে নিজের আখের গুছিয়েছেন। হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক গত ৫ই এপ্রিল ব্যাংকে গিয়ে জানতে পারেন ২০১৯ সালের জুলাই থেকে ২০২১ মার্চ পর্যন্ত তেমন কোনো টাকা ব্যাংকে জমা হয়নি। নীতিমালায় রয়েছে প্রতি মাসের টাকা পরের মাসের ১ম সপ্তাহে ট্রেজারি চালানের মাধ্যমে সোনালী ব্যাংকে জমা করতে হবে। কিন্তু হিসাবরক্ষক জাহানারা খাতুন লাকী আদায়কৃত টাকা জমা দেননি। তদন্ত সংশ্লিষ্টরা জানান, হাসপাতালের হিসাবরক্ষক জাহানারা খাতুন লাকীর বিরুদ্ধে অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ ওঠায় হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক আব্দুস শাকুর সার্জারি কনসালটেন্ট ডা. আকরাম হোসেনকে আহ্বায়ক করে ৫ সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করে দেন। এ কমিটি তদন্ত করে ৪৮ লাখ ১৭ হাজার ৯শ’ ১২ টাকা আত্মসাৎ করার প্রমাণ পান। তদন্তকারীরা আরো জানান, হাসপাতালের হিসাবরক্ষক জাহানারা খাতুন লাকীর অফিসিয়াল কাজের মধ্যে অন্যতম দায়িত্ব ছিল হাসপাতালের ইউজার ফিস-এর টাকা সোনালী ব্যাংক লি. এর নড়াইল কর্পোরেট শাখায় জমা দেয়া। কিন্তু সেই টাকা ঠিকমতো জমা না দিয়ে তিনি আত্মসাৎ করেছেন। তবে প্রতি মাসের জমা ট্রেজারি চালান অফিসে সংরক্ষণ করেছেন। চালানগুলো সংশ্লিষ্ট ব্যাংকে নিয়ে পরীক্ষা করে জানা যায় ৩৪ টি চালান ভুয়া। এ বিষয়ে জাহানারা খাতুন লাকীর সঙ্গে যোগাযোগ করলে তিনি নিজেকে নির্দোষ দাবি করে নিউজ না করার জন্য অনুরোধ করেন। সদর হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. মুশিউর রহমান বাবু বলেন, লাকীর অর্থ আত্মসাতের ব্যাপারে অভ্যন্তরীণ তদন্ত সম্পন্ন হয়েছে। তদন্তে অর্থ আত্মসাতের প্রমাণ মিলেছে। তদন্ত কমিটির আহ্বায়ক ডা. আকরাম হোসেন জানান, তদন্ত করতে গিয়ে হাসপাতালের হিসাবরক্ষক ও তত্ত্বাবধায়কের বক্তব্যসহ সংশ্লিষ্ট সকলের সাক্ষ্য-প্রমাণ ও দলিলাদি পর্যবেক্ষণ করা হয়েছে। তদন্তে অর্থ আত্মসাতের প্রমাণ পাওয়া গেছে। কর্তৃপক্ষ বিধি মোতাবেক ব্যবস্থা নিবেন। সংশ্লিষ্ট ব্যাংক শাখার ম্যানেজার সেলিম রেজা জানান, ৩৪ টি চালানের সিল ও স্বাক্ষরের সঙ্গে ব্যাংকের সিল স্বাক্ষরের কোনো মিল নেই। আর ওই চালানগুলোতে উল্লিখিত টাকা আদৌ ব্যাংকে জমা করা হয়নি। চালানের উপর লাল কালি দিয়ে টাকার লেখাটিও ব্যাংকের কোন কর্মকর্তা-কর্মচারীর নয়। এদিকে স্থানীয় মহলে গুঞ্জন উঠেছে দীর্ঘ সময় ধরে এতো বড় অংকের অর্থ আত্মসাতের সঙ্গে নড়াইল সদর হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. মো. আবদুস শাকুরের পরোক্ষ ভাবে হলেও সংশ্লিষ্টতা রয়েছে। তিনি এ হাসপাতালে যোগদানের পর হাসপাতালের ঠিকাদারী কাজ ভাগাভাগি করে দেয়া ও নামকাওয়াস্তে কাজ করে ঠিকাদার কর্তৃক মোটা অংকের বিল উত্তোলনের অভিযোগ রয়েছে। নড়াইল সদর হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. মো. আবদুস শাকুর বলেন, হিসাবরক্ষক জাহানারা খাতুন লাকীর বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।
সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ুন

সংবাদ সূত্র

News

The Largest News Aggregator
in Bengali Language

Email: [email protected]

Follow us