সম্প্রতি তরুণদের মাঝে করোনাভাইরাস শনাক্তের হার অনেক বেড়ে গেছে। এটাকে উদ্বেগজনক লক্ষণ বলে মন্তব্য করেছেন বিশেষজ্ঞরা।
করোনায় আক্রান্ত হয়ে যারা মারা গেছেন তাদের বেশিরভাগই বয়স্ক হলেও স্বাস্থ্য কর্মকর্তারা মনে করেন, তরুণরাই বয়স্ক ও শারীরিকভাবে দুর্বলদের মাঝে এই ভাইরাস ছড়িয়ে দেওয়ার জন্য দায়ী।
রোগতত্ত্ব, রোগনিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের (আইইডিসিআর) তথ্য অনুযায়ী, গত ৫ এপ্রিল করোনাভাইরাস শনাক্ত হওয়া রোগীদের মধ্যে ৬৮ দশমিক আট শতাংশের বয়স ১৯ থেকে ৪৮ বছর। তাদের মধ্যে শতকরা ২৭ শতাংশের বয়স ৪৯ এর বেশি।
এখন বেশি ঝুঁকি বাজার–গণপরিবহনে
করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ছড়ানোর সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ স্থান এখন দুটি—বাজার এবং গণপরিবহন। দেশে এখন পর্যন্ত যাঁরা করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন, তাঁদের বড় অংশই হয় বাজারে গেছেন, নয়তো গণপরিবহন ব্যবহার করেছেন। সরকারের রোগতত্ত্ব, রোগনিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (আইইডিসিআর) এক প্রতিবেদনে বিষয়টি উঠে এসেছে।
প্রতিষ্ঠানটির তথ্য অনুযায়ী, যেসব জায়গা থেকে মানুষ বেশি সংক্রমিত হচ্ছে, সেগুলোর মধ্যে আরও রয়েছে উপাসনালয়, সভা-সেমিনারের মতো জনসমাগমস্থল, স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্র, এক বিভাগ থেকে আরেক বিভাগে ভ্রমণ, সামাজিক অনুষ্ঠানে অংশ নেওয়া এবং পর্যটনকেন্দ্র। করোনায় আক্রান্ত রোগীদের হিস্ট্রি (ইতিহাস) পর্যালোচনা করে সংক্রমণ ছড়ানোর ক্ষেত্রে ঝুঁকিপূর্ণ এসব উৎসস্থল চিহ্নিত করা হয়েছে।
করোনা পরীক্ষার সুযোগ নেই সবার!
দুই দুটি মেশিন আছে। করোনার পরীক্ষাও হচ্ছে। কিন্তু সুযোগ সবার জন্য নয়। শুধু নিজেদের রোগী আর চিকিৎসকদের করোনার পরীক্ষা করছে রাজশাহী বক্ষব্যাধি হাসপাতাল। রাজশাহীতে করোনার সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ায় মেশিন দুটি কাজে লাগানো উচিত বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।
রাজশাহী বক্ষব্যাধি হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, দ্রুত যক্ষ্মা শনাক্ত করার যন্ত্র ‘জিন-এক্সপার্ট’ দিয়ে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ পরীক্ষা করা সম্ভব। এখানে দুটি জিন এক্সপার্ট মেশিন আছে। একটি মেশিন ৪ মডিউলের, অন্যটি ১৬ মডিউলের। এগুলো প্রতি ঘণ্টায় ২০টি করে নমুনা পরীক্ষা করতে সক্ষম। দিনে পাঁচবারে মোট ১০০টি পরীক্ষা করতে সক্ষম এগুলো।
কোভিড-১৯: হাসপাতাল শয্যার ‘হালনাগাদ’ জানে না সরকার
করোনাভাইরাসের সর্বোচ্চ সংক্রমণ পরিস্থিতির মধ্যে শয্যা খালি না পেয়ে এক হাসপাতাল থেকে আরেক হাসপাতালে ছুটতে ছুটতে রোগীরা যখন মৃত্যুঝুঁকিতে পড়ছেন, তখন এই রোগের চিকিৎসার জন্য বিশেষায়িত হাসপাতালগুলোতে শয্যা পরিস্থিতির প্রতিদিনের হালনাগাদ তথ্য জানছে না সরকার।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর সরকারি-বেসরকারি ‘কোভিড ডেডিকেটেড হাসপাতালের’ শয্যা সংখ্যার যে পরিসংখ্যান প্রতিদিন সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে গণমাধ্যমে পাঠানো হয়, তা সাধারণত ‘দুয়েকদিন আগের তথ্য’।
এসব তথ্য সংগ্রহ করা হয় ফোনে, যেখানে তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি ব্যবহার করে হাসপাতালগুলোর শয্যা পরিস্থিতির প্রতি মুহূর্তের হালনাগাদ জানা ও তা জনগণের সামনে প্রদর্শন করা সম্ভব।
মাস্ক ও খোলামেলা কক্ষ করোনা রুখতে পারে : নতুন গবেষণা
বাংলাদেশসহ বিভিন্ন দেশে করোনা সংক্রমণ এখন আগের তুলনায় আরো দ্রুত ছড়াচ্ছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই পরিস্থিতিতে টিকা নেওয়ার পাশাপাশি করোনার স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা অত্যন্ত জরুরি। তবে সাম্প্রতিক এক গবেষণা বলছে, শারীরিক দূরত্বের চেয়ে মাস্ক পরা ও রুমে ভেন্টিলেশনের ব্যবস্থা রাখা অত্যন্ত জরুরি। যুক্তরাষ্ট্রের সেন্ট্রাল ফ্লোরিডা বিশ্ববিদ্যালয় এই বিষয়টির ওপর সম্প্রতি একটি গবেষণা বা সমীক্ষা প্রকাশ করে। এতে তারা দেখে, সামাজিক ও শারীরিক দূরত্বের চেয়েও বেশি প্রয়োজন মাস্ক ব্যবহার করা এবং রুমে ভেন্টিলেশনের ব্যবস্থা থাকা।