ইন্দো-প্যাসিফিকে বাংলাদেশের সক্রিয়তা চায় জাপান

মানবজমিন প্রকাশিত: ২৬ ফেব্রুয়ারি ২০২১, ০০:০০

ইন্দো-প্যাসিফিককে অবাধ করার প্রশ্নে বাংলাদেশের সক্রিয় অংশগ্রহণ চায় জাপান। গতকাল ঢাকা-টোকিও ভার্চ্যুয়াল সংলাপে এ নিয়ে বিস্তৃত আলোচনা হয়েছে। তবে বাংলাদেশ এ সম্পৃক্ততার জন্য আরো সময় চেয়েছে। সরকার অভ্যন্তরীণভাবে এ নিয়ে আরো আলোচনা করতে চায়। ফরেন অফিস কনসালটেশনের (এফওসি) আওতায় অনুষ্ঠিত ওই সংলাপে জাপান-বাংলাদেশ সমন্বিত সহযোগিতার সম্পর্ককে ‘কৌশলগত অংশীদারিত্বে’ নিতে ঢাকার প্রস্তাবে আগ্রহ দেখিয়েছে টোকিও। পররাষ্ট্র সচিব পর্যায়ের ওই সংলাপ শেষে বাংলাদেশ প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দেয়া মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মাসুদ বিন মোমেন উপস্থিত সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন। বলেন, দুই দেশের মধ্যে পররাষ্ট্র সচিব পর্যায়ের তৃতীয় বৈঠক ছিল এটি। যা চলে প্রায় আড়াই ঘণ্টা ধরে। আলোচনায় জাপানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জ্যেষ্ঠ উপমন্ত্রী হিরোশি সুজুকি তার দেশের নেতৃত্ব দেন। করোনা পরিস্থিতির কারণে এবারে ভার্চ্যুয়ালি অনুষ্ঠিত দ্বিপক্ষীয় সংলাপ বিষয়ে মাসুদ বিন মোমেন বলেন, দুই দেশের সম্পর্কের বিভিন্ন বিষয়ের পাশাপাশি আঞ্চলিক বিষয়গুলো নিয়ে আলোচনা হয়েছে। অবাধ প্রশান্ত মহাসাগরীয় (ওপেন ইন্দো-প্যাসিফিক স্ট্র্যাটেজি) কৌশল নিয়ে জাপান কথা বলেছে। সেই প্রক্রিয়ায় তারা বাংলাদেশকে সম্পৃক্ত করতে চায়। আমরা এ নিয়ে আলোচনা করছি। বিষয়টি আমরা দেখবো। উল্লেখ্য, ইন্দো-প্যাসিফিক স্ট্র্যাটেজিতে বাংলাদেশের সক্রিয় অংশগ্রহণ চেয়ে আসছে যুক্তরাষ্ট্র। এ নিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে মার্কিন নেতৃত্বের আলোচনা চলছে বহুদিন ধরে। ইন্দো-প্যাসিফিকে বাংলাদেশের ভূ-রাজনৈতিক কৌশলগত অবস্থানকে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ মনে করে যুক্তরাষ্ট্র এবং তাদের মিত্ররা।স্বাধীনতার পর থেকেই জাপানের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্ক: এদিকে স্বাধীনতার পর থেকেই জাপানের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্ক উল্লেখ করে পররাষ্ট্র সচিব বলেন, ১৯৭৩ সালে জাতির পিতার টোকিও সফরের মধ্য দিয়ে সে সম্পর্ক সুদৃঢ় ভিত্তি পায়। এরপর থেকে আমাদের সম্পর্কের ক্ষেত্রে আর পিছু ফিরে তাকাতে হয়নি। সবশেষ ২০১৪ সালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সফরের পর জাপানের তখনকার প্রধানমন্ত্রী শিনজো আবে বাংলাদেশে এসেছিলেন। তখন সেই সম্পর্ককে আমরা ‘সমন্বিত সম্পর্ক’ হিসেবে আখ্যায়িত করেছিলাম। অর্থনীতি, বিনিয়োগসহ অন্য বিষয়গুলো এতে অন্তর্ভুক্ত ছিল। আজকের বৈঠকে আমরা সমন্বিত সম্পর্ককে কীভাবে কৌশলগত সম্পর্কে নেয়া যায়, তা নিয়ে আলোচনা করেছি। তার উপাদানগুলো কি কি, বাধাগুলো কি কি, জাপান এ নিয়ে যথেষ্ট আগ্রহ দেখিয়েছে। এ ছাড়া আমাদের স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীতে অনেক অনুষ্ঠান যৌথভাবে উদ্‌?যাপন করা হবে। দুই দেশের প্রধানমন্ত্রীরা সফর করবেন। বাংলাদেশের প্রেসিডেন্ট জাপানের সম্রাটের সঙ্গে দেখা করতে পারেন। ২০২২ সালে জাপানের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্কের ৫০ বছরপূর্তি হবে। এটি হবে সম্পর্কের নতুন দিগন্তের বছর। সম্পর্কটা কৌশলগত যেমন হবে, তেমনি বাণিজ্যে বিনিয়োগ বাড়বে।মাতারবাড়ি ঘিরে আঞ্চলিক উন্নয়ন পরিকল্পনায় ঢাকাকে পাশে চায় টোকিও: ওদিকে মাতারবাড়িকে কেন্দ্র করে উত্তর-পূর্ব ভারত ও মিয়ানমারসহ আঞ্চলিক উন্নয়ন পরিকল্পনা করছে জাপান। এই পরিকল্পনায় ঢাকাকে পাশে চায় টোকিও। এই পরিকল্পনা নিয়ে পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেনের সঙ্গে আলোচনা করেছেন জাপানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ডেপুটি মিনিস্টার হিরোশি সুজুকি। গতকালের সংলাপে কৌশলগত সম্পর্ক, রাজনৈতিক সর্বোচ্চ পর্যায়ের সফর, কানেক্টিভিটি, রোহিঙ্গা, বাণিজ্য, বিনিয়োগ, উন্নয়ন সহযোগিতাসহ নানা বিষয় নিয়ে আলোচনা হয় বলে জানানো হয়েছে। বৈঠক শেষে পররাষ্ট্র সচিব দক্ষিণ চট্টগ্রামের বিষয়ে জাপানের আগ্রহ রয়েছে এবং সেখানে উন্নয়ন সহযোগিতার ক্ষেত্রে নতুন প্রকল্প গ্রহণের আগ্রহের কথা বলেন- উত্তর-পূর্ব ভারত, মিয়ানমার সব মিলিয়ে তাদের বড় উন্নয়ন পরিকল্পনার অংশ এটি। আমরাও এতে শরিক হতে চাই এবং হয়েছি। তিনি বলেন, আশা করবো ২০২২ সালে এই দুই দেশের সম্পর্কের নতুন অধ্যায় রচিত হবে এবং স্ট্র্যাটেজিক সম্পর্ক স্থাপিত হবে। এর পাশাপাশি ব্যবসা, বাণিজ্যসহ অন্য যে সম্পর্কগুলো রয়েছে এবং তাদের যে বিগ-বি পরিকল্পনা বিশেষ করে মাতারবাড়িকে কেন্দ্র করে আঞ্চলিক উন্নয়নে কীভাবে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে সেভাবে তারা এগুচ্ছে। রোহিঙ্গা বিষয়ে পররাষ্ট্র সচিব বলেন, আমরা তাদের জানিয়েছি মিয়ানমার ক্যু-এর পর কীভাবে আমাদেরকে অবস্থান নিতে হচ্ছে। আমরা আমাদের অবস্থান ব্যাখ্যা করেছি এবং তারা আমাদের অবস্থানকে বুঝতে পেরেছে। আমাদের মূল লক্ষ্য হচ্ছে প্রত্যাবাসন এবং সেটিকে তারা সম্মান করে। এই প্রত্যাবাসনের বিষয়ে আমরা তাদের সহযোগিতা চেয়েছি। এই প্রসঙ্গে তিনি আরো বলেন, রোহিঙ্গারা যখন সীমান্ত অতিক্রম করে মিয়ানমার যাবে তখন তাদের সুরক্ষা, নিরাপত্তা ও টেকসই জীবন-যাপনে সহায়তা করার জন্য প্রতিবেশী দেশগুলোকে আমরা বিশেষ ভূমিকায় দেখতে চাই।
সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ুন
ঘটনা প্রবাহ

ট্রেন্ডিং

সংবাদ সূত্র

News

The Largest News Aggregator
in Bengali Language

Email: [email protected]

Follow us