যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্প নির্বাচনে পরাজয় স্বীকার না করলেও তাকে হোয়াইট হাউস ছাড়তেই হচ্ছে। কিন্তু প্রেসিডেন্ট হিসেবে তার মেয়াদ এখনো শেষ হয়নি। আরো প্রায় দু’মাস সময় আছে। এই সময়ে গণতান্ত্রিক কাঠামোর আরো অনেক ক্ষতি করার সামর্থ্য এখনো আছে তার। শুরুতেই আসছে ক্ষমা করার ক্ষমতা প্রয়োগের বিষয়টি। সামনের দিনগুলোতে এই ক্ষমতা প্রয়োগ করে তিনি অনেককেই ক্ষমা করে দিতে পারেন। বিশেষ করে ট্রাম্প তার সাবেক উপদেষ্টা মাইকেল ফ্লিনকে ক্ষমা করে দেয়ার পর তিনি তার অন্য সহযোগীদের, তার পরিবারের সদস্যদের, এমনকি নিজেকেও ক্ষমা করতে পারেন কি না তা নিয়ে জল্পনা ছড়িয়েছে।মঙ্গলবার নিউ ইয়র্ক টাইমস জানিয়েছে, ট্রাম্প গত সপ্তাহে তার ব্যক্তিগত আইনজীবী রুডি গিলিয়ানির সঙ্গে তাকে ক্ষমা করার বিষয়ে কথা বলেছেন। টাইমস জানিয়েছে, ট্রাম্প তার তিন জ্যেষ্ঠ সন্তানকে ‘অগ্রিম’ ক্ষমা করে দেয়ার সম্ভাবনা সম্পর্কেও পরামর্শদাতাদের কাছে জিজ্ঞাসা করেছেন। এ নিয়ে বার্তা সংস্থা রয়টার্স একটি বিশ্লেষণধর্মী প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে, যার উল্লেখেযোগ্য অংশটুকু তুলে ধরা হলো- ট্রাম্প কি নিজেকে নিজে ক্ষমা করতে পারেন?এই প্রশ্নের কোনো সুনির্দিষ্ট উত্তর নেই। যেহেতু কোনো প্রেসিডেন্ট-এর আগে এমন চেষ্টা করেননি, সুতরাং আদালতগুলোও এ নিয়ে আগে সেভাবে ভেবে দেখেনি। এ বিষয়ে মিশিগান স্টেট ইউনিভার্সিটির সাংবিধানিক আইন বিভাগের অধ্যাপক ব্রায়ান কাল্ট বলেন, ‘মানুষ যখন আমাকে জিজ্ঞাসা করে যে, কোনো প্রেসিডেন্ট নিজেকে ক্ষমা করতে পারেন কি না, আমার উত্তর সর্বদা একটাই থাকে- হ্যাঁ, তিনি চেষ্টা করতেই পারেন। সংবিধানে এ বিষয়ে স্পষ্ট কিছু লেখা নেই।’অনেক আইনজীবী বলেছেন, নিজেকে নিজে ক্ষমা করাটা হবে সংবিধানবিরোধী, কারণ এটি ‘নিজের মামলায় নিজের বিচারক হওয়া উচিত নয়’ এমন মৌলিক নীতিকে লঙ্ঘন করে। ক্ষমতা ছাড়ার পর নিজের বিচারের সম্ভাবনা দেখতে পেয়ে ট্রাম্প নিজেকে ‘অগ্রিম’ ক্ষমা করে দেয়ার চেষ্টা করতে পারেন।কাল্ট বলেন, ‘ক্ষমার বৈধতা সম্পর্কে আদালত রায় দেয়ার জন্য, একজন ফেডারেল প্রসিকিউটরকে কোন অপরাধের জন্য ট্রাম্পকে অভিযুক্ত করতে হবে। তখন প্রতিরক্ষার জন্য ট্রাম্পকে ক্ষমালাভের বিষয়টি উল্লেখ করতে হবে।’এমনও হতে পারে প্রেসিডেন্ট নিজেকে দায়মুক্তি না দিতে পারলে একদিনের জন্য ক্ষমতা ছেড়ে দিবেন ভাইস প্রেসিডেন্টের কাছে। তখন দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রেসিডেন্ট তাকে দায়মুক্তি দেবেন। এ সবই জল্পনা। প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প এ ঝুঁকি নেবেন কিনা বলা কঠিন। তবে ভাইস প্রেসিডেন্ট মাইক পেন্স তার অনুগত ও বিশ্বাসী। এই ঝুঁকি তিনি নিলেও নিতে পারেন।