জেনেও ভুল করছে মানুষ

মানবজমিন প্রকাশিত: ২৫ নভেম্বর ২০২০, ০০:০০

মঙ্গলবার দুপুর সাড়ে ১২টা। রাজধানীর কাওরান বাজার দিয়ে মোটরসাইকেল চালিয়ে যাচ্ছিলেন জালাল উদ্দিন। মুখে নেই মাস্ক। হঠাৎ কয়েকজন পুলিশ এসে তার মোটরবাইক থামিয়ে দিলো। তখন পাশেই চলছিল ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের উদ্যোগে ভ্রাম্যমাণ আদালত। মোটরবাইক থামার পর আসেন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট। চালকের কাছে মাস্ক না পরার কারণ জানতে চাইলেন। জালাল উদ্দিন বললেন, মাস্কের কথা ভুলে গেছি। সঙ্গে আছে। প্যান্টের পকেটে। নানা অজুহাত দেখিয়েছেন তিনি। তবে শেষ রক্ষা হয়নি তার। ১০০ টাকা জরিমানা দিয়ে ছাড়া পান। আর অঙ্গীকার করেন পরবর্তী সময়ে মাস্ক মুখে না দিয়ে তিনি বাসা থেকে বের হবেন না। কাজী নজরুল ইসলাম এভিনিউ ধরে হেঁটে যাচ্ছিলেন মোতাহার হোসেন। থুঁতনিতে ঝুলছে তার মাস্ক। পড়েন ভ্রাম্যমাণ আদালতের সামনে। মাস্ক সঠিক ভাবে না পরার কথা জিজ্ঞাসা করতেই বললেন, ভুল হয়ে গেছে। একটু আগে পানি খেয়েছিলাম। তখন নামিয়েছি। আর মনে নাই। পরে মাফ চেয়ে রক্ষা পান। এ সময় অনেককে গুনতে হয়েছে নগদ জরিমানা, সঙ্গে পেয়েছেন বিনামূল্যে একটি করে মাস্ক।জালাল উদ্দিন ও মোতাহার হোসেনের মতো আরো শতাধিক ব্যক্তি গতকাল রাজধানীর কাওরান বাজারে ভ্রাম্যমাণ আদালতের মুখোমুখি হন। তাদের অনেকেরই মুখে নেই মাস্ক। আবার কারো সঙ্গে মাস্ক থাকলে পরতে ভুলে গেছেন। কিংবা মুখের থুঁতনিতে ঝুলিয়ে জনসমাগম এলাকায় যাতায়াত করছেন। অনেকেই বলছেন- সরকার যে আইন করেছে, তা আমাদের জানা আছে। তবে মাস্ক পরলে তাদের কারও গরম লাগে। কেউ পরতে ভুলে যান, কেউবা সঙ্গে করে আনেননি। বাসাবাড়িতে রেখে আসছেন। অজুহাতের অন্ত নেই। এদিকে স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা বলছেন, করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ঠেকাতে মাস্কের কোনো বিকল্প এখন পর্যন্ত নেই। সরকারও ‘নো মাস্ক নো সার্ভিস’ জারি করেছে। তবে এখনো মানুষের মধ্যে মাস্ক না পরার ঢিলেঢালা ভাব রয়েছে। মানুষ জেনে শুনে ইচ্ছে করেই মাস্ক পরতে চান না। অন্যদিকে, সারা বিশ্বের মতো বাংলাদেশেও করোনার বিস্তার ফের বেড়ে চলছে। প্রতিনিয়ত বাড়ছে আক্রান্ত ও মৃত্যুর সংখ্যা। তবুও মাস্ক ছাড়া সর্বত্রই ঘুরে বেড়াচ্ছে জনসাধারণ। সংক্রমণ রোধে মাস্ক পরতে বাধ্য করতে ঢাকাসহ সারা দেশে নেমেছেন ভ্রাম্যমাণ আদালত। অভিযান চলে পথঘাট, হাটবাজার, গণপরিবহনসহ গুরুত্বপূর্ণ স্থানগুলোতে। করা হচ্ছে জেল-জরিমানা। আবার অনেককেই প্রকাশ্যে শাস্তি দেয়া হচ্ছে। তবুও জনসাধারণকে সচেতন হতে দেখা যাচ্ছে না।মাস্ক পরিধান নিশ্চিতকল্পে মঙ্গলবার দুপুরে কাওরান বাজারে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট তাজওয়ার আকরাম সাকাপি ইবনে সাজ্জাদ মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করেন। এসময় কবির হোসেন নামের এক যুবকের সঙ্গে মাস্ক না থাকায় ১০০ টাকা জরিমানা করেন। পরে কবির হোসেন বলেন, আমি নিজেও সচেতন। এই যে দেখেন ব্যাগে হ্যান্ডস্যানিটাইজার আছে। সব সময়ই মাস্ক পরি। মাস্ক বিতরণও করেছি। চা খেতে অফিস থেকে নিচে নেমেছি। কিন্তু এখন মুখে দিতে মনে ছিল না। ডিএনসিসি’র নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট তাজওয়ার আকরাম সাকাপি ইবনে সাজ্জাদ মানবজমিনকে বলেন, করোনার এই সময়ে অনেক মানুষকে মাঝখানে মাস্ক পড়তে অনীহা দেখা গেছে। সম্প্রতি এ বিষয়ে সরকার ও সিটি করপোরেশন কঠোর হয়েছে। আমরা বিভিন্ন এলাকায় ভ্রাম্যমাণ আদালত বসিয়েছি। তবে এখন মাস্ক পরার প্রবণতা কয়েক দিন আগের চাইতে কিছুটা বেড়েছে। মূল সড়কগুলোয় মাস্ক পরা মানুষের সংখ্যা বেশি দেখা যায়। তবে অলিগলিতে মাস্ক পরা জনসাধারণের সংখ্যা অনেক কম। আমরা সে সব স্থানেও নজর দিয়েছি। আজ অনেককে জরিমানা করা হয়েছে। আবার সচেতন হওয়ার বার্তা দিয়ে ছেড়ে দিয়েছি। আগামী দিনগুলোতেও এ অভিযান অব্যাহত থাকবে।
সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ুন
ঘটনা প্রবাহ

ট্রেন্ডিং

সংবাদ সূত্র

News

The Largest News Aggregator
in Bengali Language

Email: [email protected]

Follow us