‘দায় এড়াতে পারেন না এএসপি-ওসি’

মানবজমিন প্রকাশিত: ৩০ অক্টোবর ২০২০, ০০:০০

নোয়াখালীর বেগমগঞ্জে গৃহবধূকে নিজ ঘরে ধর্ষণচেষ্টা ও বিবস্ত্র করে নির্যাতনের ঘটনায় এএসপি, ওসিসহ সংশ্লিষ্ট সকলের কেউই দায় এড়াতে পারেন না বলে হাইকোর্টের নির্দেশে গঠিত তদন্ত কমিটির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে। এ বিষয়ে জারি করা রুলের ওপর শুনানির জন্য বিচারপতি মো. মজিবুর রহমান মিয়া ও বিচারপতি মহিউদ্দিন শামীমের সমন্বয়ে গঠিত ভার্চ্যুয়াল হাইকোর্ট বেঞ্চে গতকাল এ সংক্রান্ত প্রতিবেদন উপস্থাপন করে। এ সময় আদালতে যুক্ত ছিলেন আদালতের নজরে আনা আইনজীবী মো. আবদুল্লাহ আল মামুন, জ্যেষ্ঠ আইনজীবী জেড আই খান পান্না। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল নওরোজ রাসেল চৌধুরী। বিটিআরসি’র পক্ষে ছিলেন রেজা-ই রাকিব।আবদুল্লাহ আল মামুন সাংবাদিকদের বলেন, তদন্ত প্রতিবেদনে একটি পর্যবেক্ষণ দিয়েছে অনুসন্ধান কমিটি। এতে বলা হয়েছে, রাজনৈতিক ছত্রছায়ায় বিভিন্ন ধরনের গ্রুপ বা বাহিনী গড়ে উঠছে। এই বাহিনীগুলোর ক্ষমতার উৎসই হচ্ছে এই রাজনৈতিক ছত্রছায়া। এই গ্রুপ বা বাহিনীগুলো সমাজে বিভিন্ন অনৈতিক কার্যকলাপ, অপরাধের জন্ম দিচ্ছে। জীবনের স্বাভাবিকতা থেকে সরে এসে এরা চরম নৃশংস হয়ে উঠছে।এডভোকেট মামুন বলেন, প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, স্থানীয় প্রশাসন ও জনপ্রতিনিধিদের অবহেলা ছিল। ওই নারী স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদ সদস্যের (মেম্বার) কাছে অভিযোগ করেছিলেন, কিন্তু ওই সদস্য তা ধামাচাপা দেয়ার চেষ্টা করেন। আর ওই সার্কেলের এএসপি ও বেগমগঞ্জ থানার ওসির বিষয়ে বলা হয়েছে, তাদের এ ঘটনা না জানার কোনো সুযোগ নেই। পুলিশের নিজস্ব সোর্স থাকে। সোর্স থাকার পরেও কেন পুলিশ জানতে পারবে না, তা কমিটির বোধগম্য হয়নি। এটি পুলিশ প্রশাসনের অবহেলা বলেই উল্লেখ করা হয়েছে প্রতিবেদনে।ভুক্তভোগী নারীর বাবার দায় নিয়ে অনুসন্ধান কমিটির প্রতিবেদন তুলে ধরে এ আইনজীবী বলেন, অনুসন্ধান কমিটি বলেছে, ওই নারীর বাবা অনেক কিছুই জানতেন। কিন্তু দেলোয়ার বাহিনীর হুমকিতে ভয়ে তিনি কাউকে কিছু জানাননি। এ কারণে বাবার কোনো অবহেলা বা দায় খুঁজে পায়নি তদন্ত কমিটি।ওই নারীর স্বামীর ভূমিকাও উঠে এসেছে অনুসন্ধান কমিটির প্রতিবেদনে। মামুন বলেন, স্বামীর বিষয়ে বলা হয়েছে, ওই নারীর সঙ্গে গত ১০ থেকে ১২ বছর ধরে তার যোগাযোগ ছিল না। ঘটনার চার-পাঁচদিন আগে ওই নারীর সঙ্গে তার যোগাযোগ হয়। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, দেলোয়ার বাহিনীর সঙ্গে তার (ওই নারীর স্বামীর) যোগাযোগ থাকার পরেও সবকিছু জেনেও সে নিষ্ক্রিয় ছিল।ভিডিওর বিষয়ে অনুসন্ধান কমিটি বলেছে, এটি করা হয়েছিল ওই নারীকে অনৈতিক কার্যকলাপ এ যুক্ত প্রমাণ করার জন্য। গত ২রা সেপ্টেম্বর নোয়াখালীর বেগমগঞ্জ উপজেলার একলাশপুর ইউনিয়নের ৯ নম্বর ওয়ার্ডে এ ঘটনা ঘটে। ঘটনার ৩২ দিন পর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভিডিওটি ভাইরাল হওয়ার পর গত ৪ঠা অক্টোবর বিষয়টি প্রকাশ্যে আসে। দেশজুড়ে ক্ষোভ তৈরি করা নির্যাতনের এ ঘটনা গত ৫ই অক্টোবর নজরে আনার পর হাইকোর্ট স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে রুলসহ আদেশ দিয়েছিল। ভুক্তভোগী ওই নারীর অভিযোগ বা জবানবন্দি নেয়া, নিরাপত্তা, দুষ্কৃতিকারীদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণসহ সার্বিক ঘটনায় স্থানীয় আইন প্রয়োগকারী সংস্থার কোনো অবহেলা বা দায় আছে কি না তা অনুসন্ধান করে ১৫ কর্মদিবসের মধ্যে হাইকোর্টের রেজিস্ট্রারের কাছে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়।নির্যাতনের শিকার ওই গৃহবধূ বাদী হয়ে ৯ জনের বিরুদ্ধে বেগমগঞ্জ মডেল থানায় মামলা করেন। মামলায় উল্লেখ করেন, গত ২রা সেপ্টেম্বর দীর্ঘদিন পর বাবার বাড়িতে তার স্বামী তার সঙ্গে দেখা করতে আসেন। রাত ৯টার দিকে শয়ন কক্ষে স্বামী-স্ত্রী একসঙ্গে ছিলেন। এ সময় বাদল, রহিম, আবুল কালাম, ইসরাফিল হোসেন, সাজু, সামছুদ্দিন সুমন, আবদুর রব, আরিফ ও রহমত উল্যাসহ অজ্ঞাত আসামিরা দরজা ভেঙে ঘরে প্রবেশ করে। দুর্বৃত্তরা তার স্বামীকে মারধর করে পাশের কক্ষে নিয়ে আটকে রাখে। একপর্যায়ে তারা ওই গৃহবধূকে বিবস্ত্র করে ধর্ষণের চেষ্টা করে। এতে রাজি না হলে তারা তার ওপর নির্যাতন চালায় এবং মোবাইলে ভিডিও ধারণ করে। এ সময় ওই নারীর চিৎকারে আশপাশের লোকজন এগিয়ে গেলে আসামিরা কাউকে কিছু জানালে হত্যার হুমকি দেয়। আসামিরা চলে যাওয়ার পর কাউকে কিছু না জানিয়ে নির্যাতিত ওই গৃহবধূ জেলা শহর মাইজদীতে বোনের বাড়িতে আশ্রয় নেন। সেখানে থাকা অবস্থায় আসামিরা ফোনে হুমকি দেয় যে, তাদের প্রস্তাবে রাজি না হলে ধারণকৃত নগ্ন ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দেয়া হবে। একপর্যায়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ওই ভিডিও ছড়িয়ে পড়লে দেশব্যাপী প্রতিবাদ শুরু হয়
সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ুন

ট্রেন্ডিং

সংবাদ সূত্র

News

The Largest News Aggregator
in Bengali Language

Email: [email protected]

Follow us