পৃথিবীর সবচেয়ে ‘ক্ষুদ্র দেশে’র গল্প

বাংলা ট্রিবিউন প্রকাশিত: ২৬ সেপ্টেম্বর ২০২০, ১৫:০২

‘ই-মেইলে তো খুব বেশি বলা সম্ভব নয়’– এভাবেই বলছিলেন পৃথিবীর সবচেয়ে ক্ষুদ্র ‘দেশ’ সিল্যান্ডের রাজপরিবারের যুবরাজ মাইকেল বেটস। তার কাছে জানতে চেয়েছিলাম সিল্যান্ডের বিস্তর গল্প। যুবরাজের জন্য এটা অতিসংক্ষেপে বলা সত্যিই খুব কঠিন! কারণ ‘দেশ’টি যে তার বাবার প্রতিষ্ঠা করা। তবুও একান্ত আলাপে সিল্যান্ড সম্পর্কে বাংলা ট্রিবিউনকে অনেক কথাই জানালেন তিনি। তার মূল লক্ষ্য, ছোট-ছোট দ্বীপ গড়ার মাধ্যমে সমুদ্রের ওপর দু’পায়ে দাঁড়িয়ে থাকা ভূমিহীন সিল্যান্ডকে আরও বড় পরিসর এবং পরিচয় দেওয়া।

সমুদ্রের মাঝখানে ইস্পাত ও কনক্রিটে নির্মিত রাফস টাওয়ার দুর্গকেই একটি স্বাধীন দেশ হিসেবে জন্ম দিয়েছিলেন মাইকেলের পিতা রয় বেটস। তিনি ছিলেন ব্রিটিশ সেনাবাহিনীর সাবেক মেজর। ১৯৬৭ সালের ২ সেপ্টেম্বর স্ত্রী জোয়ানের জন্মদিনে প্রিন্সিপ্যালিটি অব সিল্যান্ডের স্বাধীনতার ঘোষণা দিয়েছিলেন রয় বেটস। ইংল্যান্ডের সাউথেন্ডে উত্তর সাগরের পূর্ব উপকূল থেকে সাত নটিক্যাল মাইল দূরে পরিত্যক্ত রাফস টাওয়ার। সমুদ্রের মাঝে থাকা দুর্গটিকে স্বাধীন ‘দেশ’ হিসেবে ঘোষণা দেওয়ার ৫৩ বছর পেরিয়েছে এই সেপ্টেম্বরে, ২৪ দিন আগে।


সিল্যান্ডে কেবল জলপথ দিয়ে প্রবেশ করা যায়। রাফস টাওয়ারের কাছে পৌঁছানোর পর ক্রেনের সহায়তায় এই পৃথিবীর একমাত্র ভূমিহীন ‘দেশটি’তে পা রাখা যায়। দুটি পিলারের ওপর স্থাপিত ‘দেশ’টির রাজধানী খোদ টাওয়ারটিই; অর্থাৎ এইচএম ফোর্ট রাফস। আনুষ্ঠানিকভাবে আন্তর্জাতিক কোনও স্বীকৃতি না থাকলেও পৃথিবীর সবচেয়ে ক্ষুদ্র ‘দেশ’ সিল্যান্ডের এখন অনেক কিছুই আছে। যেমন– নিজস্ব সংবিধান, পতাকা, অর্থনীতি, ফুটবল দল, পাসপোর্ট, স্ট্যাম্প ও সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ড। পরিসর ও স্থানগত কারণে সিল্যান্ডকে কেন্দ্র করে ইংল্যান্ডসহ পশ্চিমা দেশগুলোতে অনেক কৌতূহল ছড়িয়েছে।

এভাবেই উঠতে হয় সিল্যান্ডেদ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ চলাকালে জার্মান হামলা থেকে পূর্ব উপকূল রক্ষায় ১৯৪২ সালে উত্তর সাগরে কয়েকটি দুর্গ (ব্রিটিশ অ্যান্টি এয়ারক্রাফট গান টাওয়ার) গড়ে তোলে ব্রিটিশ সরকার। বিখ্যাত ব্রিটিশ প্রকৌশলী গাই মনসেল দুর্গগুলো নির্মাণ করেন। এগুলো ‘মনসেল দুর্গ’ হিসেবে পরিচিতি পায়। যুদ্ধের পর দুর্গটি পরিত্যক্ত হয়।

ইংল্যান্ডের ডেইলি এক্সপ্রেস পত্রিকার একটি প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, অনেক বছর ধরে দুর্গটি ফাঁকা ও অযত্নে পড়ে ছিল। মাঝে মধ্যে শঙ্খচিলদের বিশ্রামের স্থান হিসেবে কাজে লাগছিল এটি!

রয় বেটস ও প্রিন্সেস জোয়ান১৯৪৪ সালে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় ইতালিতে আহত হন যুবরাজ মাইকেলের বাবা রয় বেটস। এরপর এসেক্সের সাউথেন্ডে সাগরের কাছাকাছি নিজের বাড়িতে পরিবারসহ বসবাস করছিলেন তিনি। একটি নৌকা কিনে সমুদ্রে মাছ ধরা, কসাইখানা ও এস্টেট এজেন্ট হিসেবে কাজ করার চেষ্টা চালান রয়। কিন্তু অভিযানপিপাসু মনের তৃপ্তি মেটাতে পারছিলেন না। চীনা বংশোদ্ভুত স্ত্রী জোয়ানকে (মাইকেলের মা) বুঝিয়ে এসেক্স থেকে নৌকা নিয়ে সাগরে জলপথ ভ্রমণে বের হন রয়। তখন তিনি নৌবাহিনীর মনসেলের দুর্গগুলোর প্রতি আকৃষ্ট হন। এগুলোর মধ্যে ‘নক জন’ নামের একটি দুর্গ জলদস্যুদের রেডিও স্টেশন হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছিল। রয় তখন নিজের একটি স্টেশন প্রতিষ্ঠার সিদ্ধান্ত নেন। সাউথেন্ডের কয়েকজন পেশীজীবীর সহযোগিতায় ‘নক জন’ দখল করে রেডিও সিটিকে উৎখাত করেন রয়। ১৯৬৫ সালের ২৭ অক্টোবর তার প্রতিষ্ঠিত ‘রেডিও এসেক্স’-এর সম্প্রচারে আসে।

ডেইলি এক্সপ্রেস পত্রিকার প্রতিবেদনের তথ্যমতে, ধীরে ধীরে রয়ের রেডিওর শ্রোতা সংখ্যা বাড়তে থাকলে বিজ্ঞাপনদাতাদের আনাগোনা শুরু হয়। কিন্তু কর্তৃপক্ষের নজরে এলে অবৈধ সম্প্রচারের জন্য তাকে দোষী সাব্যস্ত করা হয় আদালতে। পরবর্তী বছরগুলোতে ইংল্যান্ড সরকারের সঙ্গে আইনি লড়াইয়ে ব্যস্ত ছিলেন তিনি। ইংল্যান্ডের আদালত চূড়ান্ত রায়ে বলেছিল, ‘নক জন’ যুক্তরাজ্যের এখতিয়ারে পড়েছে।
সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ুন

সংবাদ সূত্র

News

The Largest News Aggregator
in Bengali Language

Email: [email protected]

Follow us