দেশ হতে দেশান্তরে

দৈনিক আজাদী প্রকাশিত: ২০ সেপ্টেম্বর ২০২০, ০৯:৫২

.tdi_2_562.td-a-rec-img{text-align:left}.tdi_2_562.td-a-rec-img img{margin:0 auto 0 0} (adsbygoogle = window.adsbygoogle || []).push({});হেরেমে চেঙ্গিস খানঃ ১ হেলেন কেলার, ট্রয়ের হেলেন এই দুই বিখ্যাত নারীর মধ্যে কার কথা চিন্তা করে আব্বা রেখেছিলেন হেলেনের নাম, কে জানে? ছোট বেলাতেই দুজনেরই গল্পই তো শুনেছিলাম আব্বার কাছে। তবে এটা মনে আছে যে, হেলেন কেলারের কথা বলতে গিয়ে আব্বা যেরকম শ্রদ্ধা মিশ্রিত আবেগে আপ্লুত হয়ে দীর্ঘ গল্পের অবতারনা করতেন, তা কিন্তু হতো না ট্রয়ের হেলেনের গল্পের বেলায়। সে গল্প বলতেন উনি সংক্ষেপে আর ঝটপট করে। কেমন যেন আড়ষ্ট থাকতেন তিনি সে গল্প বলতে গিয়ে। এছাড়া সেই গল্পের বেশীর ভাগ জোরটাই তিনি দিতেন সেই কাঠের ঘোড়াটির দিকেই। দশ বছর ট্রয় নগরী অবরোধ করে রেখে অস্ত্রের জোরে গ্রীকরা ট্রয় নগরী জয় করতে না পেরে অবশেষে বুদ্ধি করে কাঠের ঘোড়া বানিয়ে কিভাবে ট্রয়ের পতন ঘটিয়েছিল গ্রীকেরা গল্পটির সেদিকটাতেই উনি যতই জোর দিতেন, তারপর কেন জানি খাপছাড়া লাগতো গল্পটা আমার। কোথায় যেন সুর কেটে গেছে মনে হতো, কিন্তু গল্প শোনায় ছেদ পড়বে এই ভেবে আর প্রশ্ন করতাম না। প্রশ্ন না করলে কি হবে? মনে মনে চিন্তার বেশীর ভাগটাই কিন্তু, থাকতো রাজকন্যা হেলেনকে হরণ করার বিষয়টিকে ঘিরেই। ছোট বেলায় জানতাম ছেলেধরারা নাকি বাচ্চা ছেলেই চুরি করে, মেয়ে চুরি করে বলে শুনিনি। কিন্তু ট্রয়ের গল্পে তো শুধু মেয়েই চুরি বা হরণ করা হয়নি, করা হয়েছে এক্কেবারে স্পার্টার রানীকে! আর রানী মানে সে তো বাচ্চা রাজকন্যাও না। এরকম বড়সড় রাজরানীকে কেউ চুরি করুক আর হরণ করুক, থাকবে কেন সে সেই চোর বা ডাকাতের কাছে। সে তো কোন বস্তু না যে চোর চুরি করে নিয়ে গিয়ে তাকে যেখানে রাখবে সেখানে পড়ে থাকবে জবড়জং পাথরের মতো। হাত পা তো তার আছে, সে তো পালাতে পারে। আর সে যদি থেকেই যাবে চোরের কাছে, তবে তা নিয়ে যুদ্ধ করারই বা কি আছে, যার থেকে চুরি করা হল তা নিয়ে? এসব প্রশ্ন মনে আসলেও জিজ্ঞেস তো করিনি কেন জানি আব্বাকে। পরে যখন একটু আধটু পড়েছি গ্রীক পুরান, প্রথমে বাংলা অতপর ইংরেজি অনুবাদে, বুঝেছি তখন আব্বার সেই তড়িঘড়ি করে হেলেন অফ ট্রয়ের গল্প বলার মাজেজা। সেদিক দিয়ে চিন্তা করলে মনে হয় আব্বা নিশ্চয় চেয়েছিলেন তাঁর আদরের একমাত্র কন্যাটি হেলেন কেলারের মতোই বিখ্যাত কেউ হোক। কারণ একই ঘটনা আমার নামের গল্পের ক্ষেত্রেও ঘটেছে। সোলায়মান নবীর নানান কেরামতি আর মাজেজা, আর জ্ঞানের কথা উনি আমাকে যতো শুনিয়েছেন, তেমন কিন্তু আমার নামের প্রথম অংশ নিয়ে বলেননি। শুধু বলেছেন, সে নামে সম্রাট আকবরের এক শাহজাদা ছিল, যিনি পরে সম্রাট জাহাঙ্গীর নামে পরিচিত হয়েছিলেন ইতিহাসে। এই দুটো ব্যাপার আগে কখনো এভাবে মনে না পড়লেও, পড়লো কিনা তা মনে এখন! এই পিকিং মানবের দেশের উপর দিয়ে ঘুরপাক খেতে খেতে। ফলে সিদ্ধান্তে পৌঁছুলাম যে, প্রেম ভালবাসা বিষয়ক ব্যাপারটি আব্বার কাছে আমাদের সময়ের আর দশটা পিতার মতোই নিশ্চয়ই চরম একটি নিষিদ্ধ ব্যাপারই ছিল। সে কারণে ট্রয়ের হেলেনের প্রেমিক প্যারিসের পরিচয় ছিল আমার কাছে শুধুই একটি চোর। আর সে চোরটি এমনই ঘৃণিত ছিল যে, তার কোন নামও উল্লেখ করেন নি আব্বা তার বলা সেই গল্পে! আর নাম জানার জন্য প্রশ্নও করিনি। কারণ চোর তো চোরই, এরকমই একটা ভাবনা ছিল হয়তো বা মনে। সে নাম জেনেছি অনেক পরে, যখন নিজে পড়েছি আধখেঁচড়া ভাবে গ্রীক পুরাণ! ছোট বেলায় আর সব ব্যাপারে আব্বাকে মাঝে মধ্যে প্রশ্ন করলেও দ্বিমত কখনো করিনি তার সাথে। কারণ জানতাম না বলা উচিত শিখেছিলাম যে বড়দের সাথে দ্বিমত করা মানে হল মুখে মুখে কথা বলা। আর ওটা হলো চরম বেয়াদবির নামান্তর, তাই সেটা মোটামুটি অক্ষরে অক্ষরে পালন করেছি শৈশবে আর বালক বয়সের প্রায় পুরোটা সময়ই। কিন্তু সম্ভবত কৈশোরে পা দিতেই জীববিজ্ঞানের নিয়মে হরমোন পরিবর্তনের দুর্বিনীত প্ররোচণায়, দ্বিমত বলি আর বেয়াদবি বলি তা করেছি অনেক আব্বার সাথে, নানান বিষয়ে। যা নিয়ে এখন মাঝে মাঝে দুঃখ হয়, খেদ হয়। তবে একটা ব্যাপারে কপাল ভাল আমার। আর তা হল, আব্বার সাথে নানান বিষয়ে দ্বিমতজনিত কারণে কথা কাটাকাটি রাগারাগি হলেও, প্রেম বিষয়ক ব্যাপারে কখনো রাগারাগি করা বা কথা কাটাকাটি করা বা কোন রকম পারিবারিক ঝামেলা তৈরি করার মতো অবস্থায় কখনো পড়িনি। তবে আমার এ জাতীয় ঝামেলায় না পড়ার পুরো কৃতিত্ব অবশ্যই আমার নয় মোটেই। সে কৃতিত্বের একশভাগ কৃতিত্বই জমা আছে প্রিয় নারীজাতির ঝুলিতে। কারণ ভুলেও বা অবহেলায়ও তাদের কেউ কখনো আমাকে প্রেম তো নিবেদন করেই নি, বরং সঠিকভাবে বললে বলতে হয় তারা কেউ কখনো আমার দিকে ফিরেও তাকায় নি! তাতে অবশ্য তাদের দোষ মোটেও নেই। সে দোষটির শতভাগই ছিল আমার শূন্য পকেটের আর খ্যাংরা কাঠি মার্কা কাকতাড়ুয়া চেহারা আমার। আরে ধ্যাৎ ভাবনার তো দেখছি কোন আগামাথা নেই। কোথা থেকে শুরু করে কোন লেজ ধরে সে চলে যাবে কোথায়, তার তো কখনোই কোন কূল কিনারা করতে পারিনি আগে। অতএব পারলাম না এখনো। ছিলাম প্রায় দু আড়াই হাজার বছর আগেকার আর্কিমিডিসের প্লবতার সূত্র আবিষ্কারে, সে সূত্র ধরে চলে গিয়েছিলাম নানান জাতির নৌবাহিনীর সক্ষমতা নিয়ে, যা নাকি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। কিন্তু তা ছেড়ে কিনা চলে এলাম এখন এক্কেবারে প্রেম ভালবাসা বিষয়ে! নাহ ফিরে যাওয়া যাক ফের নৌবাহিনীর সক্ষমতা বিষয়েই। এতে মনে হলো রোমান, গ্রীক, বা মিশরিয় সভ্যতার কথা আর তার সাথে তাদের নৌবাহিনীর সক্ষমতার কথা যতো উচ্চকিতভাবে উচ্চারিত হয়েছে ইতিহাসে, তার বিপরীতে চৈনিকদের সভ্যতা নিয়ে নানা কথা ইতিহাসে থাকলেও নৌশক্তির কথা তত বেশি উচ্চকিত নয়। অথচ যতোটা মনে পড়ে চায়নাও তো হাজার বছর আগে থেকেই নানান ধরনের নৌ যান বানিয়ে নিজেদের অন্যতম শক্তিধর নৌবাহিনী বানিয়েছিল। কিন্তু তাদের নৌবাহিনী নিয়ে তেমন কিছু পড়েছি বা শুনেছি বলে তো মনে পড়ে না! তার মানে কি? লেখক : প্রাবন্ধিক, সংগঠক.tdi_3_ff5.td-a-rec-img{text-align:left}.tdi_3_ff5.td-a-rec-img img{margin:0 auto 0 0} (adsbygoogle = window.adsbygoogle || []).push({});
সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ুন
ট্রেন্ডিং

সংবাদ সূত্র

News

The Largest News Aggregator
in Bengali Language

Email: [email protected]

Follow us