ভারতের অনুতাপ এবং দোজখপুর

মানবজমিন প্রকাশিত: ১৮ সেপ্টেম্বর ২০২০, ০০:০০

বাঙালি বলে কথা। হুজুগে মেতে উঠে সবাই। কোনো বাছবিচার নেই। নেই কোনো বিবেক বিবেচনাও। যেখানে বাণিজ্যমন্ত্রী বলছেন, দেশে পর্যাপ্ত পিয়াজ রয়েছে। আমরা বিকল্প বাজার খুঁজছি। মন্ত্রীর এ কথায় বিশ্বাস রাখতে পারছে না মানুষ। আরে ভারত পিয়াজ বন্ধ করেছে তাতে কি? এ কারণে সবাইকে ছুটতে হবে পিয়াজের পেছনে। পিয়াজের ঝাঁজ এত মধুর যে তাকে ঘরে নিয়ে শিকেয় তুলে রাখতে হবে? এরই মধ্যে বৃহস্পতিবার পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেছেন, ঘোষণা ছাড়াই পিয়াজ রপ্তানি বন্ধ করে দেয়ায় ভারত অনুতপ্ত। এটাও সুখবর। ভারত অনুতপ্ত হয়েছে এটা কম কিসের। এর আগে অবশ্য ঢাকার পক্ষ থেকে আচমকা পিয়াজ রপ্তানি বন্ধের কড়া প্রতিক্রিয়া দেখানে হয়েছে। এক কূটনৈতিক পত্রে বলা হয়েছে, এমন সিদ্ধান্ত বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে হওয়া সমঝোতার প্রতি অবজ্ঞা। এর একদিন পরই পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেছেন, ভারত অনুতপ্ত? আর লাগে কি? ভারতের মতো বৃহৎ দেশ অনুতপ্ত হয়েছে এটাই তো অনেক বেশি পাওনা। বাস্তব চিত্র হলো-হিলি স্থল বন্দরের ওপারে বাংলাদেশে প্রবেশের জন্য শনিবার থেকে আটকে আছে তিন শতাধিক পিয়াজের ট্রাক। খবর বেরিয়েছে এসব পিয়াজ পচে যাওয়ার উপক্রম হয়েছে। কিন্তু বুধবার পর্যন্ত এসব ছাড়ের কোনো নির্দেশ দেয়নি ভারতীয় কর্তৃপক্ষ। যদিও দু’দেশের ব্যবসায়ীরা এসব ট্রাক বাংলাদেশে প্রবেশের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। ওদিকে স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান বৃহস্পতিবার বলেছেন, আমরা যেসব পিয়াজের এলসি করেছি, সেটা আমরা পাবো। এটা আমাদের অধিকার। একইসঙ্গে ভারত আমাদের বন্ধু  দেশ। আমাদের অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বন্ধু দেশ। তিনি আরো বলেছেন, পিয়াজ নিয়ে হাহাকারের কোনো কারণ দেখি না। সত্যিই তিনি কারণ দেখবেন কেন? তিনি তো জানিয়েই দিয়েছেন যেসব পিয়াজের এলসি করা হয়েছে সেসব পাওয়া যাবে। তাহলে এতো চিন্তা কেন? হ্যাঁ, তিনি অবশ্য এটা বলেননি, কখন পাওয়া যাবে। রপ্তানি নিষেধাজ্ঞা ওঠার পর? নাকি যখন বাংলাদেশে নতুন পিয়াজ উঠবে তখন?  বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি জানিয়েছেন, গত বছরের মতো পরিস্থিতি এবার হবে না। গত বছরের মতো অতো দামেও বিক্রি হবে না। আমরা বিভিন্ন বাজারে খোঁজ নিচ্ছি। আশা করছি, অন্যান্য জায়গা থেকে পিয়াজ এনে পরিস্থিতি সামাল দিতে পারবো। প্রশ্ন হলো-গত বছর পিয়াজের ঝাঁজে গোটা দেশ কাবু হলেও এ বছর আগেভাগেই কেন ব্যবস্থা নেয়া হলো না? কেন এখন বলা হচ্ছে বিকল্প ব্যবস্থা করার কথা? মন্ত্রী এও বলেছেন, ভারত পিয়াজ রপ্তানি বন্ধ করে দেয়ার পর দেশের ব্যবসায়ীরা সুযোগ নিয়েছেন। এটা জানার পরও কেন এসব অসাধু ব্যবসায়ীর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হয়নি। কিংবা নেয়া হচ্ছে না। টিসিবি দেশের ২৮৫টি পয়েন্টে ৩০ টাকা দরে পিয়াজ বিক্রি করছে। তারপরও বাজার অস্থিতিশীল কেন? কেউ কেউ বলছেন, পিয়াজ কেনার ধুম পড়েছে দেশে। যিনি এক কেজি পিয়াজ কিনতেন তিনি এখন কিনছেন ৫ থেকে ১০ কেজি। এতে ব্যবসায়ীরা মওকা পেয়ে বসেছেন। বাজারে মনিটরিং চলছে। তারপরও এসব নিয়ন্ত্রণ সম্ভব হচ্ছে না। কাজেই পিয়াজ নিয়ে ভাবনা আর না! আর না!! ভাবনা করেও যে আর লাভ হবে না। একজন পাঠক ফেসবুকে মন্তব্যে লিখেছেন- মানুষের পিয়াজ কেনা দেখে এতোদিনে বুঝলাম ইবনে বতুতা কেন বাংলাকে ‘দোজখপুর নিয়ামত’ নামে অভিহিত করেছিলেন। ভারত থেকে পিয়াজ বন্ধ হওয়া মাত্রই পিয়াজের দাম বেড়ে গেল? অথচ এ পিয়াজ তো আগের দামেই কেনা ছিল। আর মানুষও বস্তা বস্তা পিয়াজ কিনে ব্যবসায়ীদের পকেট টাকায় ভর্তি করে দিলো। দাম বাড়লে অল্প কিনতে হয় কিংবা কম খেতে হয়-এ জ্ঞানের অভাব আমাদের সকলের।
সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ুন

ট্রেন্ডিং

সংবাদ সূত্র

News

The Largest News Aggregator
in Bengali Language

Email: [email protected]

Follow us