চমেক হাসপাতালে ইন্টার্ন চিকিৎসকদের কর্মবিরতি

মানবজমিন প্রকাশিত: ১৪ আগস্ট ২০২০, ০৫:৩৫

চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে ছাত্রলীগের দু‘পক্ষের নৈরাজ্য চলছেই। সর্বশেষ গত বৃহস্পতিবার রাতে সংঘর্ষের পর একপক্ষ অনির্দিষ্টকালের কর্মবিরতির ডাক দিয়েছে। ইন্টার্ন ডক্টরস এসোসিয়েশনের ব্যানারে এই কর্মবিরতি পালন করছে ইন্টার্ন চিকিৎসকরা। এতে চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসা রোগী ও তাদের স্বজনরা। ইন্টার্ন ডক্টরস এসোসিয়েশনের সভাপতি ডা. ওসমান ফরহাদ ও চমেক ছাত্র সংসদের (চমেকসু) সাহিত্য সম্পাদক সানি হাসনাইন প্রান্তিকের উপর সন্ত্রাসী হামলার প্রতিবাদে সংগঠনটি বৃহস্পতিবার মধ্যরাত থেকে এই কর্মবিরতি পালন করছে। চমেক হাসপাতাল ইন্টার্ন ডক্টরস এসোসিয়েশনের সদস্য সচিব ডা. তাজোয়ার রহমান খান গতকাল দুপুরে এ তথ্য নিশ্চিত করে বলেন, বৃহস্পতিবার রাতে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে চমেক হাসপাতালের প্রধান ছাত্রাবাসে দু‘পক্ষের মারামারির ঘটনা ঘটে। ঘটনার জের ধরে উভয় পক্ষ চকবাজার থানায় লিখিত অভিযোগ করে। এরপর রাত ১০টার দিকে আ জ ম নাছিরের অনুসারী ডা. ওসমান ফরহাদ এবং সানি হাসনাইন প্রান্তিককে ফোন করে চকবাজার থানার একজন এসআই অভিযোগে আরেকটি স্বাক্ষর করতে দ্রুত থানায় যেতে বলেন।রাতে থানায় গিয়ে স্বাক্ষর দেয়ার পর ওই দুইজন বের হয়ে জয়নগর ১নং গলির মুখে আসা মাত্রই অন্ধকারে হামলার শিকার হন। ১০-১৫ জন দুর্বৃত্ত মিলে তাদেরকে কাঁচের বোতল, দা ও হকিস্টিক দিয়ে এলোপাতাড়ি আঘাত করে। চমেক ছাত্রলীগের সভাপতি ডা. মো. হাবিবুর রহমান বলেন, প্রান্তিকের মাথায় কাঁচের বোতল দিয়ে উপর্যুপরি আঘাত করা হয়েছে। তার মাথায় অনেক সেলাই পড়েছে। ডা. ওসমানের নাক, মাথা সব ফাটিয়ে দিয়েছে। তার বমি হয়েছে। দু’জনই আশঙ্কাজনক অবস্থায় চমেক হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন।তিনি অভিযোগ করেন, চমেকের ৫৮তম ব্যাচের খোরশেদ বিন মেহেদী, ইমন শিকদার, তৌফিক, ইশতি, কে.এম তানভীর, বুলবুল, ওবায়েদ, শাহরিয়ার ইমন, ৫৯তম ব্যাচের জয়, আরাফ, ৬০তম ব্যাচের অভিজিৎ, ফাহাদ, জামশেদ, শাওন দত্ত, বোখারী, হোজাইফা ও ৬১তম ব্যাচের হৃদয়, ইমতিয়াজ, সাইফ, হাবিব, নিবরাজ, কনক ও কতিপয় বহিরাগত মিলে হত্যার উদ্দেশে নৃশংস এই হামলা চালিয়েছে। অভিযুক্তরা চমেকের ছাত্র রাজনীতিতে শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেলের অনুসারী হিসেবে পরিচিত।এদিকে হামলার ঘটনায় অভিযুক্ত তৌফিক নামের একজন জয়নগর ১নং গলির মুখে বাসা ভাড়া নিয়ে থাকেন। ওই বাসা থেকে বের হয়ে হামলার ঘটনা ঘটেছে। ঘটনার পরপর চকবাজার থানা পুলিশ বাসাটিতে অভিযান চালিয়ে কয়েকজনকে আটক করেছে। এ অবস্থায় সকল দুষ্কৃতিকারীদের গ্রেপ্তার না করা পর্যন্ত বৃহস্পতিবার মধ্যরাত থেকে অনির্দিষ্টকালের জন্য চমেক হাসপাতালে কর্মরত সকল ইন্টার্ন চিকিৎসকরা কর্মবিরতি কর্মসূচিতে নেমেছেন। এ বিষয়ে জানতে চকবাজার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মুহাম্মদ রুহুল আমীনের মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি ব্যস্ত রয়েছেন বলে ফোন রেখে দেন। চকবাজার থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মো. রিয়াজ উদ্দীন চৌধুরীর সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি ছুটিতে আছেন বলে জানান।সিএমপি’র সহকারী কমিশনার (চকবাজার জোন) মুহাম্মদ রাইসুল ইসলামের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, হামলার ঘটনার পর রাতে আমরা অভিযান চালিয়েছি। অভিযানের বিষয়ে চকবাজার থানার ওসি কথা বলবেন। ওসি ফোন ধরছেন না জানানো হলে তিনি বলেন, আবার ফোন দিন। তিনি জানাবেন।প্রসঙ্গত, চমেক হাসপাতালে আধিপত্য বিস্তারে শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল ও চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সাবেক মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীনের অনুসারী হিসেবে পরিচিত দু‘পক্ষ প্রায় সংঘর্ষ ও মারামারিসহ নানা নৈরাজ্য সৃষ্টি করছে। সংঘর্ষের পর দু‘পক্ষ ঘন ঘন কর্মবিরতি কর্মসূচি পালন করায় হাসপাতালে চিকিৎিসা নিতে আসা রোগী ও স্বজনরা প্রায়ই ভোগান্তিতে পড়ছেন। এ বিষয়ে চমেক হাসপাতালের উপ-পরিচালক ডা. মোহাম্মদ আফতাবুল ইসলাম বলেন, বৃহস্পতিবার বিকেলে সংঘর্ষের পর কর্তৃপক্ষের নির্দেশে চমেক ছাত্রাবাস খালি করে পুলিশ। এরপরও উত্তেজনা থামছে না। ইন্টার্ন চিকিৎসকদের কর্মবিরতিতে পরিস্থিতি উত্তপ্ত রয়েছে।
সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ুন

ট্রেন্ডিং

সংবাদ সূত্র

News

The Largest News Aggregator
in Bengali Language

Email: [email protected]

Follow us