গোয়াইনঘাটে বন্যায় বিপর্যস্ত ফসলের মাঠ

মানবজমিন প্রকাশিত: ১২ আগস্ট ২০২০, ০০:০০

চারদিকে ছিল পানি আর পানি। অথৈ জলের সঙ্গেই ঘরবন্দি অবস্থায়ই ছিল সবার বসবাস। সামনে পেছনে কিংবা নিচে সর্বত্রই পানি। এক বাড়ি থেকে অন্য বাড়িতে যাওয়ার ফুসরত ছিল না নৌকা ছাড়া। গ্রামীণ প্রতিটি রাস্তাই পানির নিচে নিমজ্জিত দীর্ঘদিন। পানিতে নিমজ্জিত সবক’টি ফসলের মাঠ। সিলেটের গোয়াইনঘাটে উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে ২ মাসে ৪ দফা সৃষ্ট বন্যায় উপজেলার কৃষি ব্যবস্থাকে দুমড়ে-মুচড়ে ক্ষতবিক্ষত করে গেছে। সর্বনাশা বানের জলে নিমজ্জিত ফসলের মারাত্মক ক্ষতিসাধন হয়। সর্বনাশা এমন করালগ্রাসী বন্যা চোখে পড়েনি ৫০ বছরেও। পাহাড়ি ঢলে সৃষ্ট এ বন্যায় ভেসে গেছে উপজেলার নিম্নাঞ্চলের কৃষকের স্বপ্নও। বন্যার কারণে গোয়াইনঘাটের আউশের ব্যাপক ক্ষতিই এবারের আউশ উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রার পথকেও ব্যাহত করেছে। উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, গোয়াইনঘাটে এবার আউশ ৭ হাজার ১ শ’ ২৯ হেক্টর জমিতে রোপণ করা হয়। তারমধ্যে প্রায় ১২শ’ হেক্টরই বন্যার পানিতে বিনষ্ট হয়েছে। উপজেলার ফতেহপুর, নন্দিরগাঁও ও আলীরগাঁওয়ের কৃষকরাই বেশি আউশ ফলিয়েছিলেন। ফতেহপুরের কৃষকরা উঁচু এলাকায় জমির অবস্থান হওয়ায় কোনো রকম বন্যার পানির তোড় থেকে রক্ষা পেয়েছেন। ১২শ’ হেক্টর আউশের ক্ষতি হলেও অবশিষ্ট জমির ফসল রক্ষা সম্ভব হয়েছে। সরজমিনে এলাকা ঘুরে দেখা যায়, আউশের ক্ষতিগ্রস্ত ফসলের মাঠে প্রান্তিক কৃষকরা জড়ি, লাইনজড়, বাধাইল, বিরইনসহ অন্যান্য দেশি জাতের ধানের বীজ (ছিটিয়ে) দিচ্ছে। বন্যায় আমনের ১৫ হেক্টরের মতো বীজতলাও নষ্ট হয়ে গেছে। এদিকে বন্যায় আউশের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি সাধিত হওয়ায় উপজেলা কৃষি অফিস নতুন করে ১৫ হাজার ৫শ’ হেক্টর জমিতে রোপা ও বোনা আমন রোপণের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে। উপজেলার কৃষকদের বন্যাক্রান্ত জমিতে উন্নতজাতের রোপা আমন রোপণে কৃষকদের উৎসাহিত করা হচ্ছে। উপজেলা কৃষি বিভাগ সরকারি বরাদ্দে আপৎকালীন সময়ে কৃষকের প্রয়োজনার্থে ২০ মিটার দূরত্বে ১ বিঘা ভাসমান বীজতলা করে কৃষকদের বীজ সহায়তা দিয়ে পাশে থাকার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। উপজেলা কৃষি অফিসার মো. সুলতান আলী জানান, এবারের বন্যায় সর্বসাকুল্যে গোয়াইনঘাটের ৩ হাজার ৯শ’ হেক্টর  আউশ, বোনা আমন, সবজিতলা ও ৩০ হেক্টর বীজতলা সম্পূর্ণরূপে নিমজ্জিত হয়েছিল। বন্যা সৃষ্ট দুর্যোগে আউশের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। এই ক্ষতি কাটিয়ে উঠতে আমরা উদ্যোগ নিয়েছি এবং উপজেলার বিভিন্নস্থানে নতুন করে ১৫ হাজার ৫শ’ হেক্টর জমিতে রোপা আমন চাষাবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্দারণ করা হয়েছে। বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত জমিতে নতুন করে উন্নতজাতের রোপা আমন রোপণে কৃষকদের উৎসাহিত করা হচ্ছে। যদি ধান রোপণ সম্ভব না হয় সে ক্ষেত্রে মাশকলাই বা সবজি আবাদ করার পরামর্শ দেয়া হচ্ছে। উপজেলা কৃষি বিভাগের তরফে সরকারি বরাদ্দে আপৎকালীন বীজতলা ও ভাসমান বীজতলা তৈরি করা হয়েছে। বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকের যেকোনো পরামর্শ ও সহযোগিতায় উপজেলার সবক’টি ইউনিয়নে আমরা ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকের দোরগোড়ায় রয়েছি। উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. নাজমুস সাকিব বলেন, দফায় দফায় পাহাড়ি ঢলে সৃষ্ট বন্যায় উপজেলার নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়ে কৃষি, মৎস্য ও সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থার মারাত্মক ক্ষতিসাধন করেছে। বিশেষকরে কৃষকের আউশ ধানের প্রচুর ক্ষতি হয়েছে। আউশের ক্ষয়ক্ষতি কাটিয়ে উঠতে কৃষকদের সব ধরনের সরকারি সহযোগিতা দানে একাধিক উদ্যোগ আছে।
সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ুন
ট্রেন্ডিং

সংবাদ সূত্র

News

The Largest News Aggregator
in Bengali Language

Email: [email protected]

Follow us