বাতাস আইলে ভয়ে ঘুমাইতে পারিনা

বাংলা নিউজ ২৪ প্রকাশিত: ০৬ জুলাই ২০২০, ০৯:৩০

বরগুনা, পটুয়াখালী, ভোলা, বাগেরহাট, সাতক্ষীরা ও পিরোজপুরসহ উপকূলীয় বাসিন্দাদের জীবন চলে অতি লবাসী। বাঁধ আর নদীর পাশে থাকা অনেক বাসিন্দাই ঝুঁকির মধ্যে বসবাস করছেন। উপকূলবাসীর অন্তহীন দুর্দশা এবং জীবন-জীবিকার চিত্র নিয়ে পাথরঘাটা উপজেলা করেসপন্ডেন্ট শফিকুল ইসলাম কষ্টে। ঝড়, জলোচ্ছ্বাস, দুর্যোগের সঙ্গে তাদের বসবাস। প্রতিনিয়ত দুর্যোগের সঙ্গে লড়াই করেই বেঁচে থাকে উপকূখোকনের প্রতিবেদনের বারতম পর্ব।

তালতলীর তাপবিদুৎকেন্দ্র সংলগ্ন বাঁধ এলাকা ঘুরে:

স্বামী হারিয়েছেন ৪০ বছর আগে। ২০০৭ সালের ১৫ নভেম্বর সিডরে হারিয়েছেন এক মেয়ে গোলেনুরকে। বেঁচে থাকা একমাত্র মেয়ে হোসনেয়ারাকে নিয়ে বেড়িবাঁধের ওপর বসবাস ৮৫ বছরের জয়নব বেগমের। মাত্র এক হাত দূরে পায়রা নদী। ঘরের দিকে তাকালে মনে হয় এই বুঝি ভেঙে গেল বাঁধ, এই বুঝি পলিথিন মোড়ানো ঘরটি নিশ্চিহ্ন হয়ে যাবে পায়রা নদীতে। জয়নবের বসতভিটা ভাঙতে ভাঙতে কয়েক ভাঙা দিলেও ভাগ্যের পরিবর্তন হয়নি তার, আজও বাঁধের ওপরই বসবাস করছেন তিনি।

সরেজমিন গিয়ে দেখা যায় জয়নবের জীবনযাত্রা, বাঁধের ওপর ছোট একটি ঘর। তাও আবার কাঠের বা টিনের নয়। চাচ আর পলিথিন দিয়ে মোড়ানো। যে ঘরে বৃদ্ধ জয়নবের বসবাস। দীর্ঘ ৩০ বছর ধরে থাকেন পায়রা নদীর পাড় বেড়িবাঁধে। স্বামী আহম্মদ হাওলাদার মারা গেছেন ৪০ বছর আগে। দুই মেয়ের মধ্যে গোলেনুর বেগমও ২০০৭ সালের প্রলয়ঙ্করী ঘূর্ণিঝড় সিডরে দুই সন্তান রেখে মারা যান। গোলেনুরের স্বামী অন্যত্র বিয়ে করে সংসার করছেন, সন্তানদের দেখাশুনা করেন না তিনি। ৮৫ বছরের বৃদ্ধ জয়নব একমাত্র মেয়ে ও দুই নাতনিকে নিয়ে বেঁচে আছেন কোনো মতে। ৮৫ বছর পার করলে আজও মেলেনি বয়স্ক বা বিধবা ভাতা। ভিক্ষা আর মেয়ে ঝিয়ের কাজ করে যা পায় তা দিয়েই চলছে দিন। কথা হয় জয়নব বেগমের সঙ্গে। নাম জিজ্ঞেস করতেই বলেন, মোর নাম জয়নব, মোর জন্য একটা ঘরের ব্যবস্থা হরতে পারেন আমনেরা। একজন সংবাদকর্মীর কাছে চাইলেই হয়তো অনেক কিছুই পেতে পারেন তাই একথা বলা। জয়নব বলেন, বাবা যখন গায়ে শক্তি ছিল কাম করছি, শক্তি কইম্যা গেছে ভিক্ষা করি। এহন শরীর অসুস্থ, ঠিকমতো হাঁটতেও পারছিনা।

কত বছর ধরে বেড়িবাঁধের উপর থাকেন এমন প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, ৩০ বছর ধইরা থাহি, স্বামীর কোনো জমি নাই। থাকার কোনো জায়গা নাই। ওয়াপদার ওপরই থাহি। নদীতে ওয়াপদা ভাঙে আর ভাঙে। জয়নবের মেয়ে হোসনেয়ারা বেগম বলেন, মায় কয়েকদিন ধইরা অসুস্থ, ওষুধ কেনারও টাহা নাই। ওয়াপদার ওপর থাহি, বাতাস আইলে ভয়ে ঘুমাইতে পারিনা। বড় বন্যা অইলে সাইক্লোন শেল্টারে যাই। অনেক কষ্ট কইরা বোনের রাইখা যাওয়া দুইডা মাইয়া বিয়া দিছি।

প্রতিবেশী জাকির হোসেন বলেন, জয়নব বেগম খুবই অসহায় দিন যাপন করছেন। ৮৫ বছর হলেও বয়স্ক ও বিধবা ভাতার তালিকায় আজও নাম ওঠেনি তার, এটি খুবই দুঃখজনক। আমরাও জয়নবকে মাঝে মধ্যে সহযোগিতা করি।
সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ুন
ট্রেন্ডিং

সংবাদ সূত্র

News

The Largest News Aggregator
in Bengali Language

Email: [email protected]

Follow us