কৃষিতে বাংলাদেশের ঈর্ষণীয় সাফল্য

ডেইলি বাংলাদেশ প্রকাশিত: ২৪ জুন ২০২০, ১১:৪৪

কৃষি উন্নয়নের সঙ্গে দেশের সার্বিক উন্নয়ন ওতপ্রোতভাবে জড়িত। এ দর্শন সর্বপ্রথম উপলব্ধি করেই স্বাধীনতার মহান স্থপতি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সবুজ বিপ্লবের ডাক দিয়েছিলেন। বর্তমান সরকারও কৃষির উৎপাদন বৃদ্ধির ওপর বিশেষ গুরুত্বারোপ করেছেন। শুধু তাই-ই নয় বর্তমান সরকারের নেয়া বহুমুখী প্রকল্পের সলে কৃষিতে বাংলাদেশের সাফল্য বিশ্বব্যাপী ঈর্ষণীয়।

জানা গেছে, কৃষি বিজ্ঞানীদের উদ্ভাবিত নতুন নতুন জাতসমূহ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর কর্তৃক মাঠপর্যায়ে সম্প্রসারণ, শস্য বহুমুখীকরণ, আধুনিক প্রযুক্তি হস্তান্তর, শস্য নিবিড়তা বৃদ্ধি এবং সময়োপযোগী বিভিন্ন পদক্ষেপের ফলে বর্তমানে কৃষি উৎপাদনের ধারা উর্ধমুখী রয়েছে। ক্রমবর্ধমান জনসংখ্যা, সীমিত সম্পদ, জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে বন্যা, খরা, লবণাক্ততা ও বৈরী প্রকৃতিতেও খাদ্যশস্য উৎপাদনে বাংলাদেশ এখন বিশ্বে উদাহরণ।

মাছে-ভাতে বাঙালি হলেও এখন নানা ধরনের সবজি থাকে সব ঘরেই। শুধু তাই-ই নয় দেশের চাহিদা মিটিয়ে বিদেশেও যাচ্ছে সবজি। এছাড়াও ধান, গম ও ভুট্টা বিশ্বের গড় উৎপাদনকে পেছনে ফেলে ক্রমেই এগিয়ে চলছে দেশ। সবজি উৎপাদনে তৃতীয় আর চাল ও মাছ উৎপাদনে বাংলাদেশ এখন বিশ্বে চতুর্থ অবস্থানে।

বন্যা, খরা, লবণাক্ততা ও দুর্যোগ সহিষ্ণু শস্যের জাত উদ্ভাবনেও শীর্ষে বাংলাদেশের নাম। ১০ টাকার বিনিময়ে ব্যাংক এ্যাকাউন্ট খোলা হয়, সেচের পানির ভর্তুকির টাকা সরাসরি কৃষকের এ্যাকাউন্টে ট্রান্সফার করা হয় এবং সেই সঙ্গে ১ কোটি ৮২ লাখ কৃষকের মাঝে উপকরণ সহায়তা কার্ড বিতরণ করা হয়েছে। বর্তমান সরকারের  যুগান্তকারী এসব পদক্ষেপের ফলেই কৃষিতে এসেছে ঈর্ষণীয় সাফল্য। সরকারের প্রবর্তিত কৃষি উপকরণ সহায়তা কার্ড দেশে ও বিদেশে বিপুলভাবে প্রশংসিত হয়েছে। জানা যায়, বাংলাদেশের অনুসরণে ভারত সরকার কৃষি উপকরণ সহায়তা কার্ড প্রদানের উদ্যোগ নিয়েছে। দেশের ৩৫টি জেলায় ২৫ শতাংশ ভর্তুকিতে ট্রাক্টর, পাওয়ার টিলার, হারভেস্টরসহ বিভিন্ন কৃষি যন্ত্রপাতি সরবরাহের ব্যবস্থা করেছে। কৃষি পুনর্বাসন কার্যক্রমের আওতায় বিনামূল্যে সার ও বীজ সরবরাহ অব্যাহত রয়েছে। আউশে প্রণোদনা প্যাকেজও অব্যাহত আছে। বাংলাদেশের শাক-সবজির ব্যাপক চাহিদা রয়েছে বিদেশে। তাই সবজি রফতানি বাড়ছে।

রফতানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) তথ্যে দেখা গেছে, ২০১৮-১৯ অর্থবছরের প্রথম ছয় মাসে সবজি রফতানির লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৩ কোটি ৭০ লাখ মার্কিন ডলার। এর বিপরীতে আয় হয়েছে ৫ কোটি ৯৩ লাখ ডলার। যা লক্ষ্যমাত্রার তুলনায় ৬০ শতাংশ বেশি। দেশের রফতানিকৃত সবজির প্রায় ৬০ শতাংশই মধ্যপ্রাচ্যে এবং বাকি ৪০ শতাংশ ইউরোপসহ অন্যান্য দেশে যায়। বিশ্বের প্রায় ৫০টি দেশে বাংলাদেশের সবজি রফতানি হয়। অপ্রতিরোধ্য অগ্রযাত্রায় দেশকে এগিয়ে নিতে এই ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে হবে। রফতানি উন্নয়ন ব্যুরোর পরিসংখ্যান অনুযায়ী ২০১৮-১৯ অর্থবছরে ৯ কোটি ৯৬ লাখ ডলারের সবজি রফতানি হয়েছে। চলতি ২০১৯-২০ অর্থবছরে সবজি রফতানির লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ১৩ কোটি মার্কিন ডলার।

অর্থবছরের প্রথম চার মাসের নির্ধারিত লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৪ কোটি ৯ লাখ ডলার, অথচ সেখানে রফতানি হয়েছে ১০ কোটি ৫২ লাখ ডলার। জাতিসংঘের কৃষি ও খাদ্য সংস্থার পরিসংখ্যান অনুযায়ী, সবজি উৎপাদনে বাংলাদেশ এখন বিশ্বে তৃতীয় অবস্থানে রয়েছে। এক সময়ে দেশের মধ্য ও উত্তরাঞ্চল এবং দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের যশোরেই শুধু সবজির চাষ করতেন কৃষকরা। অথচ বর্তমানে দেশের সব এলাকায় সারা বছরেই সবজির চাষ হচ্ছে। এখন ১ কোটি ৬২ লাখ কৃষক পরিবার সবজি চাষের সঙ্গে সম্পৃক্ত আছে। সারাদেশে এখন ৬০ ধরনের ও ২০০ জাতের সবজি উৎপাদিত হচ্ছে। অথচ ২০ বছর আগে অর্থাৎ ১৯৯৯ সালে দেশে মাথাপিছু দৈনিক সবজি খাওয়ার পরিমাণ ছিল ৪২ গ্রাম। ২০১৮ সালে দেশে মাথাপিছু সবজি খাওয়ার পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৭০ গ্রাম।

স্বাধীনতার পর থেকে বাংলাদেশের ধানের উৎপাদন তিনগুণেরও বেশি, গম দ্বিগুণ, সবজি পাঁচগুণ এবং ভুট্টার উৎপাদন বেড়েছে দশগুণ। দুইযুগ আগেও দেশের অর্ধেক এলাকায় একটি ও বাকি এলাকায় দুটি ফসল হতো। বর্তমানে দেশে বছরে গড়ে দুটি ফসল হচ্ছে। সরকারের যুগোপযোগী পরিকল্পনা, পরিশ্রমী কৃষক এবং মেধাবী কৃষি বিজ্ঞানী ও সম্প্রসারণবিদদের যৌথ প্রয়াসেই এ সাফল্য। স্বাধীনতার পর দেশে প্রতি হেক্টর জমিতে দুই টন চাল উৎপাদিত হতো। এখন হেক্টর প্রতি উৎপাদন হচ্ছে চার টনেরও বেশি। ধান ধরে হিসাব করলে তা ৬ টন। তাছাড়া হেক্টরপ্রতি ভুট্টা উৎপাদনে বিশ্বে গড় ৫ দশমিক ১২ টন। বাংলাদেশে এ হার ৬ দশমিক ৯৮ টন।
সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ুন
ট্রেন্ডিং

সংবাদ সূত্র

News

The Largest News Aggregator
in Bengali Language

Email: [email protected]

Follow us