মঞ্চ ও টিভি নাটকের জনপ্রিয় অভিনেতা লিটু আনাম আগের মতো নিয়মিত নন। দেখা যায় না বিনোদন অঙ্গনের আড্ডায়। গতকাল ছিল তাঁর জন্মদিন। দুপুরে কথা হয় এই অভিনয়শিল্পীর সঙ্গে। জন্মদিনের শুভেচ্ছা জানানোর পরে জানতে চাইলাম, তিনি এখন কোথায়? জানালেন, ব্যাংকে আছেন। কাজ শেষ করে বাসায় ফিরে কথা বলবেন। বাসায় ফিরতে ফিরতে সন্ধ্যা।
লিটু আনাম বললেন, ঘরের বাইরে যাওয়াটাই এখন বাড়তি ঝামেলা। ফিরে এসে জীবাণুমুক্ত হতে হয়। কত কী করতে হয়। কারও সঙ্গে দেখা না করে সোজা বাথরুমে ঢুকে গোসল সেরে নিতে হয়। এ এক অন্য জীবন। লকডাউনের এই সময়ে খুব প্রয়োজন ছাড়া ঘর থেকে বের হন না। বাসায়ই থাকেন। লিটু আনাম জানালেন, কাজ করতে করতে একঘেয়ে লাগছিল। আদর্শিক কিছু ইস্যুও সামনে এসে দাঁড়ায়। সেসব কারণেই কাজ কমিয়ে দেন। তিনি বলেন, 'অভিনয়ের শুরুতে যেভাবে স্বপ্ন দেখেছিলাম, যেভাবে সবকিছু ভেবেছিলাম, তা হচ্ছিল না। এটাও ঠিক, আমি যেভাবে স্বপ্ন দেখি, সবাই সেভাবেই কাজ করবে, এমন কথা নয়। অভিনয়শিল্পী হচ্ছে ব্যবসার দিক থেকে সবচেয়ে ছোট্ট অংশ। বাস্তবতার সঙ্গে মিল পাচ্ছিলাম না। তাই সরে আসা। তবে আমার এই সরে আসাটা চিরপ্রস্থান নয়।'
১৯৯৮ সালে মোহন খানের পরিচালনায় শমী কায়সারের বিপরীতে দূরে কোথাও নাটকে অভিনয়ের মাধ্যমে লিটু আনামের ছোট পর্দায় অভিষেক হয়। ২০১১ সাল পর্যন্ত টেলিভিশন নাটকে টানা অভিনয় করে গেছেন। লিটুর ভাষ্য, এই সময়ে হাজার তিনেক নাটকে অভিনয় করেছেন। টানা কাজ করে গেছেন। ব্যক্তিগত, সামাজিক, পারিপার্শ্বিক অনেক কারণে কাজ কমিয়েছেন। গত আট বছরে লিটু আনাম একটি ধারাবাহিক ও একটি এক ঘণ্টার নাটকে অভিনয়ের কথা মনে করতে পেরেছেন। লেডি ইন ব্লু এবং রূপ শিরোনামে দুটি নাটকেরই পরিচালক স্ত্রী হৃদি হক। লিটু বললেন, 'চুপচাপ থাকতে চাই।'লিটু আনাম ও হৃদি হকের সংসারে দুটি যমজ সন্তান। তাদের বয়স সাত বছর। ছেলের নাম অনিরুদ্ধ উনমন ও মেয়ে অনসূয়া হৃদি। লিটু আনামের শ্বশুর-শাশুড়ি ইনামুল হক ও লাকী ইনামের দুঃখ, লিটু লেখালেখি করেন না। শ্বশুর–শাশুড়ির পাশাপাশি স্ত্রীও তাঁর লেখার ভক্ত।
এখন সময় কাটে কীভাবে? লিটু বলেন, 'আমি কিছু ব্যবসায় যুক্ত হওয়ার চেষ্টা করেছি। এখনো করছি। দিনে মাত্র ২৪ ঘণ্টা। দেশে কাজের অভাব আছে নাকি! যদি কেউ ভালোভাবে কাটাতে চায়, বাংলাদেশে কাজের অভাব নেই। আমার বরাবরই প্রোডাকটিভ বিজনেসের দিকে ঝোঁক বেশি। এখনো আছে। সেই কাজগুলো করছি।'