বাংলা কবিতায় বর্ষাবন্দনা: শাঙন গগনে ঘোর ঘনঘটা

ডেইলি বাংলাদেশ প্রকাশিত: ১৫ জুন ২০২০, ১৬:৩২

এ অঞ্চলে বর্ষাবন্দনা শুরু কালিদাসের মেঘদূত দিয়ে। বর্ষা বাঙালির জীবনে সৃজনঋতু; সর্বার্থেই। কৃষিপ্রধান অঞ্চলে ফসল সৃজনে বর্ষা যেমন প্রাণপ্রতিষ্ঠাকারী ঋতু, তেমনি সৃষ্টিশীলতার অঞ্চলেও। পদকর্তা জ্ঞানদাস থেকে শুরু করে আজকের কবিও বর্ষার রিমঝিম শব্দে বিমোহিত হয়ে সৃষ্টি করেছেন কবিতা। এভাবে বর্ষা কবিতার বিষয়-আশয় হয়ে উঠেছে। পদকর্তা বিদ্যাপতির, ‘এ সখি হামারি দুঃখের নাহিক ওর/ এ ভরা ভাদর মাহো ভাদর/ শূন্য মন্দির মোর’ কিংবা চণ্ডীদাসের ‘এ ঘোর যামিনি মেঘের ঘটা/ কেমনে আইলো বাটে/ আঙিনার কোণে তিতিছে বঁধুয়া/ দেখিয়া পরান ফাটে’ একইসঙ্গে রোমান্স ও বিরহের উচ্চারণ।  মাইকেল মধুসূদন দত্তের ‘বর্ষাকাল’ কবিতায় প্রকৃতির বিচিত্ররূপের বর্ণনা করেছেন স্বল্প পরিসরে। প্রকৃতির স্বাধীনচেতা স্বভাবের চিত্র আঁকতে গিয়ে ‘রমণী রমণ লয়ে সুখে কেলি করে/ দানবাদি দেব, যজ্ঞ সুখিত অন্তরে’ দেখেছেন। প্রবল বর্ষণকে কবির মনে হয়েছে কলহপ্রিয়তার একটি বিশেষ রূপ।

বর্ষা নিয়ে রবীন্দ্রনাথের ‘সোনার তরী’র ‘গগনে গরজে মেঘ ঘন বরষা/ কূলে একা বসে আছি নাহি ভরসা’ উচ্চারণের সঙ্গে সঙ্গে মানসপটে ভেসে ওঠে একটি বর্ষণমুখর দিনের ছবি। মেঘের ঘনঘটায় আকাশ আচ্ছন্ন, তীরে প্রতীক্ষারত মানুষ আশাহত হয়ে উঠছে। ‘আষাঢ় সন্ধ্যা’য় মানব মনের হঠাৎ উন্মনা হয়ে যাওয়ার প্রসঙ্গকে মহিমান্বিত করা হয়েছে। ‘হৃদয়ে আজ ঢেউ দিয়েছে, খুঁজে না পাই কূল/ সৌরভে প্রাণ কাঁদিয়ে তুলে ভিজে বনের ফুল’ বলে চিত্তের চাঞ্চল্যকে দিয়েছেন প্রশ্রয়, প্রকৃতিকে করেছেন তারই প্রযত্ন। 

‘বর্ষার রূপ’ মূলত ধারাপাতের নান্দনিক বিষয়কে কেন্দ্র করে, উদ্বেল কবির কাঙ্ক্ষাকে উন্মোচনের বিশেষ প্রচেষ্টা। তাই বলে উঠেছেন ‘কালো কল্পনা নিবিড় ছায়ার তলে/ ঘনায়ে উঠিছে কোন আসন্ন কাজে’। এই চিত্রকল্পে ঝড়প্রবণ সময়ের একটি ছবিকে ইঙ্গিত করে রচিত। এরকম ঝড়-বৃষ্টি কবলিত সময় মানুষ আপনাকে নিঃসঙ্গরূপে আবিষ্কার করে, অসংখ্য মানুষের ভিড়ে বসেও। তারই প্রতিধ্বনি এ কবিতা। সচেতন গৃহস্থের সংসার মনস্কতার প্রাত্যহিক চিত্র পাওয়া যায় ‘আষাঢ়’ কবিতায়। 

আসন্ন বৃষ্টির পূর্বাভাসে গৃহস্থ ব্যাকুল হয়ে ওঠেন। তখন সবাইকে ডেকে ডেকে বলেন, ‘নীল নবঘনে আষাঢ় গগনে তিল ঠাঁই আর নাহি রে/ ওগো আজ তোরা যাস নে ঘরের বাহিরে’। কারণ, বাইরে প্রবল বৃষ্টি, কালি মাখা মেঘাচ্ছান্ন আকাশ। মাঠের গরু গোয়ালে আনার আকুতির সঙ্গে সঙ্গে খেয়াঘাটের মাঝির প্রসঙ্গও উত্থাপিত; সঙ্গে বর্ষণমুখর সময়ে পথ পিচ্ছিল হয়ে মানব চলাচলের জন্য বন্ধুর হয়ে উঠেছে তাও বর্ণিত। ফলে এ কবিতাটি পল্লীর বর্ষাকালীন প্রাত্যহিকতার চিত্র হিসেবে উজ্জ্বল।  রবীন্দ্রনাথ সম্ভবত ‘সোনার তরী’র পর ‘নববর্ষা’য় নিজেকে উন্মোচিত করেছেন বেশি।
সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ুন
ট্রেন্ডিং

সংবাদ সূত্র

News

The Largest News Aggregator
in Bengali Language

Email: [email protected]

Follow us