২০১৪ সালের ২১ মার্চ একটি অনুষ্ঠানে অস্ট্রেলিয়া ফেরত এক যুবকের সঙ্গে দেখা নুসরাত ফারিয়ার। শুরুতে ‘হাই’ আর ‘হ্যালো’ পর্যায়ের কথাবার্তা। সে কথা গড়ালো ক্যারিয়ার ও পরিচিতি পর্ব পর্যন্ত। পরিচয়ে জানা গেল- যুবকের নাম রনি রিয়াদ রশীদ। এভাবে আর কয়েকটা দিন। তারপর সে কথার জল গড়ালো প্রেম অবধি।আর এখন ফারিয়া তার বাগদত্তা। তাই ছয় বছর আগে দুজনার দেখা হওয়া দিনটিকে স্মরণে রেখে লকডাউনের ঠিক আগের সপ্তাহে (২১ মার্চ) হাতে হাত রেখে আংটিবদল করে নিলেন তারা। সেলফ হোম কোয়ারেন্টিনে থেকে চিত্রনায়িকা নুসরাত ফারিয়া বাংলা ট্রিবিউনের কাছে তুলে ধরলেন তাদের মনবিনিময়ের কথাগুলো।
বাংলা ট্রিবিউন: রনি রিয়াদ রশীদ তো মিডিয়ার কেউ নন। পরিচয় পর্বটা কীভাবে হলো?নুসরাত ফারিয়া: আমাদের প্রথম পরিচয়টা হয়েছিল ২০১৪ সালের ২১ মার্চ। তখন তিনি অস্ট্রেলিয়া থেকে দেশে এসেছেন। আমাদের দু’জনের কমন এক বন্ধুর মাধ্যমে তার সঙ্গে পরিচয়। প্রথম দেখায় আমরা পড়াশোনা, কাজ, লাইফস্টাইল- এগুলো নিয়েই কথা বলেছি। উনি হার্ভার্ড ইউনিভার্সিটি থেকে পড়াশোনা শেষ করেছেন তখন। সেই বিষয়গুলোও আমাদের আলাপচারিতায় উঠে আসে। এরপর আর তেমনভাবে আমাদের দেখা হয়নি। একদিন আমার সেই বন্ধু বললো, উনি আমার সম্পর্কে ওকে জিজ্ঞেস করেছিল! আমি বললাম, ও আচ্ছা, ঠিক আছে। কোনও অসুবিধে নেই। এর অনেকদিন পর আবারও উনার সঙ্গে আমার দেখা ও কথা হয়।
বাংলা ট্রিবিউন: কখন বুঝলেন আপনারা প্রেমে পড়েছেন। আর এত বছর লুকিয়ে রাখলেনই-বা কীভাবে?নুসরাত ফারিয়া: পরিচয়ের এক, দুই মাস পর উনিই প্রথম আমাকে বন্ধু হওয়ার প্রস্তাব দেন। তখন আমাদের নিয়মিত যোগাযোগ হতে থাকে। দু’জনে তখন নিজেদের ক্যারিয়ার নিয়েও ব্যস্ত ছিলাম। তবে তিনি আমার বিষয়ে খুব সচেতন ছিলেন গোড়া থেকেই। এমনও হয়েছে তিনি কোনও মন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক করছেন, আমি ফোন দিয়েছি, তিনি তা রিসিভ করতেন। উল্টোদিকে আমি সেটা করতে পারিনি। তার সঙ্গে যখন আমার পরিচয় তখন আমি উপস্থাপনা করি। আমার নায়িকা হয়ে ওঠার পেছনে তার অনেক ভূমিকা ও অনুপ্রেরণা আছে। হয়তো তার কারণেই আমি নায়িকা হতে পেরেছি। সবসময় ইতিবাচক কথা বলে আমাকে সহযোগিতা করতেন এসব বিষয়ে। যখন জাজ মাল্টিমিডিয়ার সঙ্গে যুক্ত হলাম, খুব ভয়ে ছিলাম। অনেকেই অনেক কথা বলেন। তিনি শুধু বলেছেন, অন্যের কথা শোনার দরকার নাই। নিজের কথাটা শোনা জরুরি।এভাবেই তার প্রতি আমার ভালোলাগা বাড়তে থাকে। তবে পরিচয়ের এক বছর পর ভালোবাসার প্রস্তাবটা তার পক্ষ থেকেই আসে। কথা বলার সুবাদে আমরা ভালো বন্ধু বনে যাই, এরপর ভালোবাসা। আমার হাতে একটা ডায়মন্ডের আংটি আছে, যা আমি অনেক আগে থেকেই পরি। উনি ডায়মন্ডের আংটি দিয়ে আমাকে প্রপোজ করেন। উনার প্রপোজের ভাষাগুলো আমার মনে ধরেছিল। সেটা আজ আর না বলি। আমার প্রতি তার ভালো লাগাটা অনেক বেশি। সে আমাকে অনেক বোঝে। শত ব্যস্ততার মাঝেও উনি আমাকে সময় দেন। আমার যে কোনও সমস্যা বা পরামর্শে, সবার আগে আমি উনার সাপোর্ট পাই। বাবা-মা তো আছেই, পাশাপাশি উনিও অভিভাবক হিসেবে পাশে থেকেছেন গেল ছটি বছর।
বাংলা ট্রিবিউন: আপনার বাড়ি কুমিল্লা, রনির চট্টগ্রাম। তাহলে মাঝ থেকে ময়মনসিংহের নাম এত শোনা গেল কেন!নুসরাত ফারিয়া: রনি আর্মি পরিবারের সন্তান। আমিও। তার বাবা সাবেক সেনাপ্রধান বীরপ্রতীক এম হারুন-অর-রশীদ।আমাদের দুজনের বেড়ে ওঠা ক্যান্টনমেন্ট এলাকায়। তবে ময়মনসিংহ অঞ্চলে রনির বাবার একটি স্কুল আছে। আমার গাওয়া প্রথম গান ‘পটাকা’-এর প্রাপ্ত অর্থ সে স্কুলের মেয়েদের দিয়েছিলাম। এছাড়াও ময়মনসিংহে আমাদের একটি ফার্ম হাউস আছে। এ জন্যই হয়তো এই জেলার নামটি এসেছে নানাভাবে। অন্য কোনও কারণ নেই।বাংলা ট্রিবিউন: রনির বিষয়ে আরও একটু জানতে চাই। তিনি কী করছেন, ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা কী- এগুলো!নুসরাত ফারিয়া: ২০১৪ সালে রনির সঙ্গে আমার যখন পরিচয় হয়, তখন তিনি একটি মুঠোফোন প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা ছিলেন। এখন একটি আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠানের পরামর্শক। পাশাপাশি অস্ট্রেলিয়াতে সরকারি চাকরি করছেন। এছাড়া পারিবারিক ব্যবসা আছে।