কেরালায় গর্ভবতী হাতির মৃত্যু নিয়ে সবশেষ যা জানা গেছে
প্রকাশিত: ০৫ জুন ২০২০, ০০:২৭
বিস্ফোরক-ভর্তি আনারস খেয়ে একটি হাতির মৃত্যুর ঘটনায় ভারতীয় বন্যপ্রাণী কর্মকর্তারা তদন্তকাজ শুরু করেছেন। কেরালা রাজ্যে এই হাতিটি মারা যাওয়ার পর বন বিভাগের এক কর্মকর্তা সোশাল মিডিয়াতে এনিয়ে পোস্ট দিলে সামাজিক মাধ্যমে তোলপাড় শুরু হয়। এটি কি নিছকই দুর্ঘটনা নাকি কেউ আনারসের ভেতরে বিস্ফোরক ভরে রেখেছিল ও কেন রেখেছিল সেসব এখনও পরিষ্কার নয়।
কয়েকদিন ধরে যন্ত্রণা ভোগ করার পর হাতিটির মৃত্যু হয়। পশু চিকিৎসকরা হাতিটিকে বাঁচাতে চেষ্টা করে ব্যর্থ হন।
ধারণা করা হয় যে ভারতে ২৭ হাজারের মতো বন্যহাতি রয়েছে। এছাড়াও আরো প্রায় আড়াই হাজার হাতি রয়েছে বন্দী অবস্থায়।
কেরালার বন বিভাগ বৃহষ্পতিবার জানিয়েছে এই ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার সন্দেহে বেশ কয়েকজনকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।
এর আগে তারা বলেছিল আতসবাজির মতো বিস্ফোরকের সঙ্গে এই মৃত্যুর সম্পর্ক থাকার সুস্পষ্ট কোন প্রমাণ এখনও পাওয়া যায়নি।
পরিবেশমন্ত্রী প্রকাশ জাভাদকার টুইট করে বলেছেন, হাতি হত্যার এই ঘটনাকে সরকার গুরুত্বের সঙ্গে নিয়েছে এবং এবিষয়ে তদন্ত করা হবে।
কেরালা রাজ্যের বন বিভাগ থেকেও বলা হয়েছে এই ঘটনায় অপরাধীদের খুঁজে বের করে তাদের সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত করতে তারা সর্বাত্মক চেষ্টা চালাবে।
হাতিটির মৃত্যুর খবরে সোশাল মিডিয়ায় তীব্র প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়। টাটা সন্স কোম্পানির চেয়ারম্যান এবং ভারতের শীর্ষস্থানীয় ব্যবসায়ী রতন টাটা এই ঘটনার বিচার দাবি করেছেন। এক টুইটে তিনি লিখেছেন, “নিরীহ একটি প্রাণীর সাথে এধরনের অপরাধমূলক কাজ পরিকল্পিতভাবে মানুষ হত্যার চেয়ে আলাদা কিছু নয়।” ভারতীয় ক্রিকেট দলের অধিনায়ক ভিরাট কোলি একে ‘কাপুরুষচিত ঘটনা’ বলে উল্লেখ করেছেন। ভিরাট কোলি লিখেছেন যে এই খবরটি শুনে তিনি স্তম্ভিত হয়ে গেছেন।
১৫ বছর বয়সী এই হাতিটি দু’মাসের অন্তঃসত্ত্বা ছিল। খবরে বলা হচ্ছে হাতিটি গত সপ্তাহে পালাক্কা জেলার সাইলেন্ট ভ্যালি ন্যাশনাল পার্কের পার্শ্ববর্তী একটি গ্রামে ঘুরে বেড়ানোর সময় একটি আনারস খেয়েছিল যার ভেতরে আতসবাজি ভরে রাখা হয়েছিল।
বন বিভাগের কর্মকর্তা মোহন কৃষ্ণান ফেসবুকে দেওয়া এক পোস্টে জানান, আতসবাজিগুলো হাতির মুখের ভেতরে বিস্ফোরিত হয়েছে। ২৭শে মে মারা যাওয়ার আগে তীব্র যন্ত্রণায় হাতিটি কয়েক দিন ধরে এদিকে ওদিকে ছুটে বেড়িয়েছে।
যন্ত্রণা উপশমের চেষ্টায় হাতিটি একসময় নদীতে নেমে পানির ভেতরে মুখ ও শুঁড় ডুবিয়ে দাঁড়িয়ে থাকে। পরে নদীতেই তার মৃত্যু হয়।
তিনি লিখেছেন, “হাতিটি যখন তীব্র ব্যথা নিয়ে গ্রামের রাস্তা দিয়ে ছুটে বেড়িয়েছে তখন সে একজন মানুষকেও আক্রমণ করেনি।”
বিবিসিকে তিনি বলেছেন, “আমি যখন তাকে দেখি, সে নদীতে দাঁড়িয়েছিল। একটি শব্দও সে করেনি। নদীর পানিতে মুখ ও শুঁড় ডুবিয়ে রেখে সে হয়তো কিছুটা আরাম পাচ্ছিল।”