কেউ পর্যটক, কেউ সামাজিক উদ্যোক্তা, কেউবা শিক্ষক, চিকিৎসক বা কার্টুনিস্ট। তাঁরা সবাই করোনাভাইরাসের এই দুঃসময়ে সোচ্চার হয়েছেন, কেউ দাঁড়িয়েছেন অসহায় মানুষের পাশে, কেউবা কাজ করেছেন সচেতনতার। এমন পাঁচজনকে নিয়ে এবারের বিশেষ আয়োজন।
আশা–জাগানিয়া ইশরাত : সজীব মিয়া
যুক্তরাষ্ট্রে উচ্চশিক্ষা শেষে দেশে ফিরে এলেন ইশরাত করিম। তাঁর প্রত্যাবর্তন নিয়ে অনেকের কানাঘুষা, নিশ্চয় বড় কোনো প্রতিষ্ঠানে চাকরির প্রস্তাবে দেশে ফিরেছেন! কিন্তু মাস পেরোতেই ইশরাতকে দেখা গেল মিরপুরের একটি বস্তিতে, উদ্যোগী হয়েছেন নিম্ন আয়ের মানুষের শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্য সুরক্ষায়। কয়েক মাস পর যখন উত্তরবঙ্গের কয়েকটি জেলার চরাঞ্চলের দরিদ্র মানুষের জন্য কাজ শুরু করলেন, তখন পরিচিত অনেকের মতো তাঁর পরিবারের সদস্যদের যেন আশাভঙ্গ হলো, সংশয়ও প্রকাশ করলেন কেউ কেউ।
কেউ পর্যটক, কেউ সামাজিক উদ্যোক্তা, কেউবা শিক্ষক, চিকিৎসক বা কার্টুনিস্ট। তাঁরা সবাই করোনাভাইরাসের এই দুঃসময়ে সোচ্চার হয়েছেন, কেউ দাঁড়িয়েছেন অসহায় মানুষের পাশে, কেউবা কাজ করেছেন সচেতনতার। এমন পাঁচজনকে নিয়ে এবারের বিশেষ আয়োজন। আমাল ফাউন্ডেশনের স্বেচ্ছাসেবকেরা ছুটছেন ত্রাণ নিয়ে। ছবি: সংগৃহীত আমাল ফাউন্ডেশনের স্বেচ্ছাসেবকেরা ছুটছেন ত্রাণ নিয়ে। ছবি: সংগৃহীত আশা–জাগানিয়া ইশরাত : সজীব মিয়া
যুক্তরাষ্ট্রে উচ্চশিক্ষা শেষে দেশে ফিরে এলেন ইশরাত করিম। তাঁর প্রত্যাবর্তন নিয়ে অনেকের কানাঘুষা, নিশ্চয় বড় কোনো প্রতিষ্ঠানে চাকরির প্রস্তাবে দেশে ফিরেছেন! কিন্তু মাস পেরোতেই ইশরাতকে দেখা গেল মিরপুরের একটি বস্তিতে, উদ্যোগী হয়েছেন নিম্ন আয়ের মানুষের শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্য সুরক্ষায়। কয়েক মাস পর যখন উত্তরবঙ্গের কয়েকটি জেলার চরাঞ্চলের দরিদ্র মানুষের জন্য কাজ শুরু করলেন, তখন পরিচিত অনেকের মতো তাঁর পরিবারের সদস্যদের যেন আশাভঙ্গ হলো, সংশয়ও প্রকাশ করলেন কেউ কেউ।
তবে সে সংশয় দিনে দিনে অমূলক প্রমাণ করেছেন ইশরাত করিম। ২০১৫ সালে যে আমাল ফাউন্ডেশন নামে স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন প্রতিষ্ঠা করেছেন, সে প্রতিষ্ঠানের কাজের জন্যই যুক্তরাষ্ট্রের বিখ্যাত সাময়িকী ফোর্বস এবার তাঁকে এশিয়ার ৩০ বছরের কম বয়সী ৩০ জনের তালিকায় সামাজিক উদ্যোক্তা হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে।
ইশরাত করিম বলেন, ‘শুরুর দিনগুলোতে আমি যে যোগ্য, প্রতিনিয়ত তা আমাকে প্রমাণ করতে হয়েছে। ফোর্বস–এর স্বীকৃতি আমার ওপর বাড়তি দায়িত্ব হিসেবে এসেছে। সে দায়িত্ব আমি নিষ্ঠার সঙ্গে পালন করতে চাই।’
ইশরাত বগুড়া ক্যান্টনমেন্ট পাবলিক স্কুল ও কলেজের গণ্ডি পেরিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হয়েছিলেন। ফিন্যান্সে স্নাতক হয়ে যুক্তরাষ্ট্রের কলোরাডো বিশ্ববিদ্যালয়ে সামাজিক ব্যবসা নিয়ে স্নাতকোত্তর করেন।
১৮ জন স্থায়ী কর্মী এবং সারা দেশে প্রায় ৪০০ স্বেচ্ছাসেবী নিয়ে ইশরাতের আমাল ফাউন্ডেশন কাজকে এগিয়ে নিচ্ছে। যাঁরা প্রয়াস দেখিয়েছেন নারীদের দক্ষতা বৃদ্ধির প্রশিক্ষণের মাধ্যমে স্বাবলম্বী করার। শুধু তাই নয়, দেশে যেকোনো দুর্যোগের সময় হাজির হয় অসহায় মানুষকে সহায়তা করতেও। যেমন করোনাকালে ৬ হাজার অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছে ইশরাতের আমাল ফাউন্ডেশন। তিনি বলেন, ‘দেশে করোনা মোকাবিলায় শুরু থেকেই দেশে কাজ করে যাচ্ছে আমাল ফাউন্ডেশন। ৬ হাজার মানুষকে নিত্যপ্রয়োজনীয় খাদ্যদ্রব্য দেওয়া ছাড়াও নিম্ন আয়ের মানুষের জন্য হাত ধোয়ার বেসিন ও ঢাকার রাস্তার প্রাণীদের খাবার সরবরাহ করেছি আমরা।’
এই ত্রাণ বিতরণের কাজটি রমজান মাসজুড়েই অব্যাহত ছিল বলে জানালেন ইশরাত। এ ছাড়া ইফতারি, সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের ঈদের পোশাক বিতরণের মতো উদ্যোগও নিয়েছিল তাঁর সংগঠন। আরবি শব্দ আমাল। ইশরাত করিম বলেন, ‘যার অর্থ আশা।’ নামের মতোই তিনি যেন ফাউন্ডেশনের মাধ্যমে হয়ে উঠেছেন অসহায় মানুষের ‘আশা’।