একমুঠো মুগ্ধ অঞ্জন

প্রথম আলো প্রকাশিত: ২৭ মে ২০২০, ২০:১৫

আমাদের যাদের যৌবন শুরু হয়েছিল নব্বইয়ের দশকে, তারা বহু নির্ঘুম রাত কাটিয়েছি ‘কাঞ্চনজঙ্ঘা’ শুনে। নীলচে পাহাড়ের কোল থেকে উঠে আসা এক অদ্ভুত সরল মানুষের মহানাগরিক কোলাহলে ডুবে যাওয়ার গল্প আমাদের মনে দাগ কেটেছে। ‘বেলা বোস’ শুনে বিহ্বল হয়েছি, না, প্রেমের গল্পে নয়, রাস্তার পাশের সস্তা কেবিনের দিনগুলো শেষে হয়ে লাল-নীল সংসারের গল্প শুরু হওয়ার আশ্বাসে ফোনের ওপারে চুপ করে থাকা কারও ব্যথাতুর গল্পের আভাস পেয়ে।

‘মেরী আন’ শুনে স্কুলদিনের প্রেমের গল্প মনে পড়ে বিনিদ্র রজনী কাটাননি, এমন মানুষ কম আছেন। কিংবা অঞ্জনের সেই ট্রেডমার্ক গান, পাড়ায় ঢুকলে ঠ্যাং খোঁড়া করে দেওয়ার গল্প ছিল নব্বইয়ের দশকে আমাদের ব্যাপক উদ্দীপনার দিনগুলোর প্রতিচ্ছায়া। কিন্তু সবকিছু ছাপিয়ে আমাদের ভালো লেগেছিল বৃষ্টির গান। তখন ছিল ফনিক্স সাইকেলের দিন। মফস্বল শহরের পিচঢালা রাস্তায় অঞ্জনের মতো কালো চশমা চোখে ভিজতে ভিজতে আমরা বেসুরো গাইতাম ‘আমি বৃষ্টি দেখেছি’। পুরো নব্বই অঞ্জন আমাদের মাতিয়ে রেখেছিলেন সুরে। তখনো আমরা টের পাইনি, শুধু গান নয়। অঞ্জন সিনেমাও করেন। যখন টের পেলাম, তখন অভিনেতা অঞ্জন এক অদ্ভুত মাদকতা সৃষ্টি করেছেন সেলুলয়েডে। কী আছে অঞ্জনে, যার জন্য আমাদের এই মধ্য বয়সে এসেও তাঁকে নিয়ে দুছত্র লিখতে পারলে আত্মতৃপ্তি হয়? সম্ভবত জেদ।

মধ্যবিত্ত বাঙালির চাঁছাছোলা জেদ। কিছু একটা হয়ে ওঠার, কিছু একটা করে ফেলার কিংবা জীবনটাকে নেহাত নিজের মতো করে দেখার দুর্মর জেদ। আর মধ্যবিত্ত বাঙালি সমাজে গড়ে ওঠা জীবনের ট্যাবুগুলোকে চাবকাতে চাবকাতে সরিয়ে ফেলার মানসিকতা। সে জন্যই মনে হয় অঞ্জন প্রথম বাংলা সিনেমা বানিয়েছিলেন ‘বো ব্যারাকস ফরএভার’, ২০০৪ সালে; তাঁর প্রথম সিনেমা ‘বড় দিন’ বানাবার পাক্কা ছয় বছর পর। ‘বড় দিন’ ছিল হিন্দি ভাষায় বানানো এবং পরিচালক হিসেবে অঞ্জনের প্রথম সিনেমা।

বো ব্যারাকস ফরএভারের গল্প গড়ে ওঠে পরিচয়ের সংকটে ভোগা অ্যাংলো ইন্ডিয়ান কমিউনিটিকে ঘিরে, দক্ষিণ কলকাতায় ছিল যাদের বসবাস। ইংরেজি বলতে পারা আর ব্রিটিশ রক্ত শরীরে থাকার এক মেকি এলিটিজমের চর্চা করা বো ব্যারাকসের চরিত্ররা ছিল মূলত খাঁচায় বন্দী পাখির মতো। পলেস্তারা খসে পড়া ঘিঞ্জির জীবন আর নিজেদের বাস্তবতার বাইরে যাদের বিলাসিতা বলতে ছিল অস্ট্রেলিয়া কিংবা দা গ্রেট ব্রিটেন যাওয়ার চিন্তা এবং গ্রেট গ্র্যান্ড ফাদারের স্মতি হাতড়ানো।

বাইরের বিপুল পরিবর্তন এই কমিউনিটিকে খুব ধীরে ধীরে বদলে দিতে থাকে। এখানকার তরুণেরা পথ খুঁজতে থাকেন ভীষণ পরিচয়ের সংকট থেকে উত্তরণের। এই উভয়সংকটে পড়া অ্যাংলো ইন্ডিয়ানদের রোজকার খুঁটে খাওয়া জীবন, যৌনতা, ড্রাগস, সুখ, দুঃখ সবকিছু নিয়ে এক অসাধারণ গল্প ছিল বো ব্যারাকস ফরএভার; অঞ্জন দত্তের গানগুলোর মতোই চিত্রধর্মী, জীবন্ত ও বাস্তব।
সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ুন
ট্রেন্ডিং

সংবাদ সূত্র

News

The Largest News Aggregator
in Bengali Language

Email: [email protected]

Follow us