ভারতের ওপর প্রাকৃতিক দুর্যোগের হানা যেন কিছুতেই কমছে না। একটি গিয়ে পারেনি, হাজির হচ্ছে আরেকটা। দিন দুয়েক আগেই করোনা সংক্রমিত দেশের তালিকায় শীর্ষ দশে উঠে এসেছে ভারত, সেখানে প্রতিদিনই হু হু করে বাড়ছে আক্রান্তের সংখ্যা। এর মধ্যেই গত সপ্তাহে তাণ্ডব চালিয়ে গেল প্রলয়ঙ্কারী ঘূর্ণিঝড় আম্ফান। এর ক্ষয়ক্ষতি মেটানো তো দূরের কথা, এখনও ধ্বংসযজ্ঞের চিহ্নও মেটেনি, এর মধ্যেই খবর এলো দেশটির পাঁচটি রাজ্যে ছড়িয়ে পড়েছে মরু পঙ্গপালের ঝাঁক। তার ওপর সপ্তাহখানেক ধরে প্রবলবৃষ্টিপাতে আসামে শুরু হয়েছে বন্যা।
এত কিছুর মধ্যেই আবার নতুন বিপদ ডেকে এনেছে তীব্র দাবদাহ। দু’দিন ধরে গনগনে রোদ আর ভয়ঙ্কর তাপে পুড়ছে গোটা উত্তর ভারত। মঙ্গলবার ১৮ বছরের রেকর্ড ভেঙে দেশটির রাজধানী দিল্লিতে তাপমাত্রা উঠেছিল ৪৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
পালাম অঞ্চলে তাপমাত্রা ছিল আরও বেশি৷ এদিন সেখানে তাপমাত্রা বেড়ে দাঁড়ায় ৪৭ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস, যা স্বাভাবিকের চেয়ে অন্তত ৬ ডিগ্রি বেশি৷
রাজস্থানেও তাপমাত্রার পারদ ছিল ঊর্ধ্বমুখী৷ মঙ্গলবার রাজ্যের চুরু জেলায় তাপমাত্রা ৫০ ডিগ্রি ছুঁয়েছে। গত ১০ বছরে এটাই ওই এলাকার দ্বিতীয় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা৷ ২০১৬ সালের ১৯ মে চুরুতে তাপমাত্রা উঠেছিল ৫০ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস৷
গত এক দশকের মধ্যে এবছরই সবচেয়ে বেশি দাবদাহে পুড়ছে ভারত। বৈশ্বিক তাপমাত্রা পর্যবেক্ষক ওয়েবসাইট এল ডোরাডো জানিয়েছে, মঙ্গলবার বিশ্বের মধ্যে সবচেয়ে উত্তপ্ত স্থান ছিল রাজস্থান। তীব্র গরমের কারণে লোকজনকে ঘরে থাকার পরামর্শ দিয়েছেন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা। এদিকে, গত ১৬ মে থেকে প্রবল বৃষ্টিপাতের জেরে বন্যার মুখে পড়েছে আসাম৷ ব্রহ্মপুত্রের পানি বাড়ায় তলিয়ে গেছে রাজ্যের অন্তত পাঁচটি জেলা।
কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, প্রতি ২-৩ ঘণ্টায় ১ থেকে ২ সেন্টিমিটার করে পানি বাড়ছে ব্রহ্মপুত্রে। এতে সবচেয়ে খারাপ পরিস্থিতি ডিব্রুগড় জেলায়৷ এছাড়া ধেমাজি, ডিব্রুগড়, দারাঙ্গ, লখিমপুর ও গোয়ালপাড়ার ৩০ হাজার ৭০০-র বেশি মানুষ বন্যা কবলিত৷ গোয়ালপাড়ায় প্রায় নয় হাজার মানুষ গৃহহীন হয়ে পড়েছে।