ঘূর্ণিঝড় আম্পানে সাতক্ষীরার আশাশুনি উপজেলার প্রতাপনগর ও শ্রীউলা ইউনিয়ন সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত। এই দুই ইউনিয়নের পানি উন্নয়ন বোর্ডের খোলপেটুয়া ও কপোতাক্ষ নদের বেড়িবাঁধের ১৯টি স্থান ভেঙে ৫০ হাজারের বেশি মানুষ পানিবন্দী হয়ে পড়েছে। ভেসে গেছে ২০ হাজার চিংড়িঘের ও পুকুর। নদীর জোয়ার–ভাটার সঙ্গে মিলে চলছে তাদের জীবন।
প্রতাপনগর ইউপি চেয়ারম্যান জাকির হোসেন বলেন, এই ইউনিয়নের লোকসংখ্যা ৩৬ হাজার। ইউনিয়নটি পানি উন্নয়ন বোর্ডের ৪০ কিলোমিটার বেড়িবাঁধ দিয়ে ঘেরা। আম্পানের আঘাতে কুড়িকাউনিয়া চারটি, চাকলা একটি ও হরিশখালির তিনটি স্থানসহ ১৩টি স্থান ভেঙে নদীতে বিলীন হয়ে গেছে। এসব স্থান দিয়ে নদীর লোনা পানি ঢুকে ইউনিয়নের চাকলা, রুইয়ের বিল, সুভদ্রকাটি, শ্রীপুর, কুড়িকাউনিয়া, প্রতাপনগর, মাদারবাড়ি, কল্যাণপুর, সনাতনকাটি, হিজলেকোলা, হরিশখালিসহ ১৩টি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। এতে ৭ হাজার পরিবারের মানুষ পানিবন্দী হয়ে পড়েছে। অনেকেই গৃহহীন হয়ে আশ্রয়কেন্দ্রে কিংবা উঁচু রাস্তায় আশ্রয় নিয়েছে। ভেসে গেছে আট হাজার চিংড়িঘের। জোয়ার-ভাটার মধ্যে বাঁধা পড়েছে এ ইউনিয়নের মানুষের জীবন।
ইউপি চেয়ারম্যান অভিযোগ করেন, পানি উন্নয়ন বোর্ডে কয়েক হাজার প্লাস্টিকের ব্যাগ দিয়ে তাদের দায়িত্ব শেষ করেছে। এদিকে বাঁধ, দড়ি ও স্বেচ্ছাশ্রমিকদের খাওয়ার ব্যবস্থার বিষয়ে কোনো সহযোগিতা করছে না।
কুড়িকাউনিয়া গ্রামের ৮০ বছরের বৃদ্ধ সাবেক ইউপি সদস্য কাসেম মোড়ল বলেন, ‘করোনায় আয়রোজগার বন্ধ করে দেসলো। আর ঘূর্ণিঝড় আম্পান সব শেষ করে দে। ঈদ আনন্দ এবার করতি না পারলি সামনের বার কুরা যাবেনে। আমাগো ত্রাণের চেয়ে টেকসই বাঁধ কুরে দেওয়ার ব্যবস্থা কুরে দিতে কও। এমন কুরে বছর বছর বাঁধ ভাঙে ঢুবিয়ে সব শেষ কুরে দেবে তা সহ্য কুরা যায় না। জোয়ার-ভাটায় বাধা পুড়ে আমাকে জীবন।’