করোনা মহামারির মধ্যে বিশ্বব্যাপি মুসলমানদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব, ঈদ-উল ফিতর পালিত হয়ে গেলো। কেউ ঘরে নিজস্ব ব্যবস্থাপনায়, কেউ মসজিদে গিয়ে সামাজিক দুরত্বের সঙ্গে ঈদের সালাত আদায় করে নিয়েছে। একই সঙ্গে মহান আল্লাহ তায়ালার কাছে করোনা মহামারি থেকে মুক্তির জন্যও দোয়া করেছেন। এরই মধ্যে সোশ্যাল মিডিয়ায় এসে ভক্ত-সমর্থকদের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময় করেছেন বিভিন্ন অঙ্গনের সেলিব্রেটিরা। ক্রিকেটাররা, বিশেষ করে সাকিব, মুশফিক-মাশরাফিরা সোশ্যাল মিডিয়াতেই নিজেদের ঈদের ভাবনার কথা জানিয়েছেন। তবে বাংলাদেশ দলের সাবেক অধিনায়ক, সর্বকনিষ্ঠ টেস্ট সেঞ্চুরিয়ান মোহাম্মদ আশরাফুল দিলেন ভিন্ন এক বার্তা। ঠিক এটাকে বার্তা বলা যাবে না, বলা যায় সতর্কবার্তা।
নিজের ফেসবুক আইডিতে একটি ভিডিও বার্তা দিয়েছেন আশরাফুল। সেখানে ঈদের দিনে তিনি সবার প্রতি ডেঙ্গুর প্রকোপ নিয়ে সবাইকে সতর্ক করেছেন। আশরাফুল জানিয়েছেন, জুন-জুলাই হচ্ছে ডেঙ্গুর প্রজননের সময়। এখন করোনার কারণে ডাক্তার-নার্সরা হিমশিম খাচ্ছেন রোগি নিয়ে। ডেঙ্গু আক্রান্ত হলে অবশ্যই চিকিৎসা লাগে। কিন্তু করানার কারণে সেই চিকৎসাও তো মেলার সম্ভাবনা নাই। সুতারং, ডেঙ্গু মোকাবেলায় এখনই সবাইকে সচেতন হতে হবে।
এ নিয়ে আশরাফুল যে বক্তব্য দিযেছেন, সেটা হুবহু তুলে ধরা হলো জাগো নিউজের পাঠকদের জন্য। ‘আসসালামু আলাইকুম, ঈদ মোবারক সবাইকে। আশা করি সবাই ভালো আছেন। জানি যে, অন্যান্যবারের চেয়ে এবারের ঈদটা একটু ব্যতিক্রম! অন্যান্যবার হয়তো আমরা একসাথে নামাজ পড়তে যেতাম, একসঙ্গে বিভিন্ন বাসায় যেতাম বেড়াতে। কিন্তু এবার হয়তো আমরা সে জিনিসটা আর করছি না। আমরা সবাই যার যার জায়গা থেকে সেফ থাকার চেষ্টা করছি। বাসায় আছি সবাই, বাসায়ই থাকবো। আজকে এই ঈদের দিনে আমার কাছে মনে হয়, আমাদের সামনে আরও একটা কঠিন সময়ের জন্য অপেক্ষা করতে হবে। সে ব্যাপারে আমরা যদি সচেতন না হই (তাহলে কঠিন পরিস্থিতির মধ্যে পড়ে যাবো)।
সে জিনিসটা হলো - আমরা গত চার-পাঁচ বছর দেখছি, বাংলাদেশে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে অনেক মানুষ মারা গেছে। বিশেষ করে, গত বছরে। তো এই ডেঙ্গুটা কিন্তু জুন-জুলাই মাসে, বৃষ্টির সিজনে। ওই সময় যদি পানি জমে থাকে কোনো একটি জায়গায় বা ফুলের টব, ছাদ, বারান্দা, রান্নাঘরের আশপাশে। এসব জায়গায় যদি পানি জমে থাকে, তাহলে ডেঙ্গু জন্ম হতে পারে। তো আমি আশা করবো যে, এই মুহূর্তে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত মানুষদেরই চিকিৎসা দিতে হিমশিম খাচ্ছে। আর ডেঙ্গুতে যদি কেউ আক্রান্ত হয়, তাহলে তাদের চিকিৎসাছাড়া কিন্তু কোনো উপায় নেই। তো সেই চিকিৎসা পাওয়া যাবে কি না, আমাদের সে চিন্তা করতে হবে। আমাদের এখন থেকে সবারই চিন্তা করা উচিৎ যে, আমরা যেন সচেতন থাকি এবং যেন আমাদের আশ-পাশে সবকিছু পরিস্কার রাখি, ডেঙ্গু থেকে যেন রেহাই পাই। এটা আমাদের দায়িত্ব। আশা করবো যে, আমরা সবাই যার যার বাসা, ছাদ, বারান্দা, আশপাশের সব কিছু যেন পরিস্কার রাখি এবং ডেঙ্গু থেকে যেন রেহাই পাই। ঈদ মোবারক, সবাই বাসায় থাকবেন, সেফ থাকবেন। যদি ঘরের বাইরেও যেতে হয়, তাহলে আমরা যেন মাস্ক পরি। সামাজিক দুরত্ব বজায় রাখি। আমরা যেন সচেতন হই। অথচ, আমরা নিজেরাই সচেতন না। বের হই, অথচ দেখা যায় যে সামাজিক দুরত্বের বিষয়টা ভুলে যাই।
দেখা যাচ্ছে, পাশাপাশি গা ঘেঁষে দাঁড়াচ্ছি, গায়ে লাগছে, খেয়াল নেই- এসব বিষয়গুলো আসলে নিজের থেকেই আসতে হবে। যদি বের হন, মাস্ক পরবেন, হাতে গ্লাভস পরবেন, সামাজিক দুরত্ব রেখে বের হবেন। কাজছাড়া তো বের হওয়া উচিৎই নয়। যদি কাজের জন্য বের হন, তাহলে আমরা যেন এই জিনিসগুলো পালন করি। আর সবচেয়ে বড় যে, আজকের ঈদের দিনে আমার কাছে মনে হচ্ছে- আমাদের ডেঙ্গু নিয়ে চিন্তা করা উচিৎ।